প্রকাশিত: 11/11/2020
মঙ্গলবার পঞ্চগড়ের বোদায় মায়ের মৃত্যুর শোকে দুই মেয়ে মারা গেছেন। মৃতরা হলেন-ছোট মেয়ে চৈতি রানী (৩০) ও বড় মেয়ে স্বরজনি বালা (৫০)। মঙ্গলবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান পঞ্চমী বেওয়া (৯০)। তিনি ছয় মেয়ে ও দুই ছেলের জননী ছিলেন।
মায়ের মৃত্যুর খবরে স্বামীর বাড়ি থেকে মাকে শেষ বারের মত দেখতে আসেন তার ছয় মেয়ে। কিন্তু মায়ের মৃত্যু শোকে আকস্মিক অচেতন হয়ে সন্ধ্যায় ছোট মেয়ে চৈতি রানী (৩০) এবং বড় মেয়ে স্বরজনি বালা (৫০) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
বড় মেয়ে স্বরজনি বালা একই উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার সুশীল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী এবং ছোট মেয়ে চৈতি রানী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ফারাবাড়ি এলাকার পলাশ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী।
পঞ্চমী বেওয়ার পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার সকালে পঞ্চমী বেওয়া মারা যাওয়ার পর তার ছয় মেয়েই স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে দেখতে আসেন। মেয়েরা দিনভর মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছিলেন। বিকেলে পঞ্চমীর লাশ বাড়ির পাশের শ্মশানে সৎকার শেষ করে স্বামীর বাড়ি ফেরার সময় বুকে ব্যথা অনুভব করে অচেতন হয়ে পড়েন ছোট মেয়ে চৈতি রানী। এ সময় তাঁকে একটি মাইক্রোবাসে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন স্বজনরা।
ওই মাইক্রোবাসে পঞ্চমীর বড় মেয়ে স্বরজনি বালাও যান ছোট বোনকে ডাক্তার দেখাতে। পথে স্বরজনি বালাও অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর ঠাকুরগাও হাসপাতলে নেওয়ার পথে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে মাইক্রোবাসেই দুই বোন মারা যান। এ ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকারিয়া হাবিব বলেন, প্রথমে ছোট মেয়ে চৈতি রাণী অসুস্থ হয়। তার সাথে মাইক্রোবাসে বড় মেয়ে স্বরজনি বালাও হাসপাতালে যান। পথে তিনিও অসুস্থ হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তারা দুইজনই মারা যান।
পঞ্চমী বেওয়ার নাতি কামিনী কুমার রায় বলেন, দাদী মারা যাওয়ার পর আমার ছয় পিসিসহ (ফুপু) সব স্বজনরাই আমাদেও বাড়িতে আসেন। দাদীর মরদেহ সৎকার শেষে ছোট পিসি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় বড় পিসিও মাইক্রোবাসে উঠেন। কিছুক্ষণ পর তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক দুজনই পথে মারা গেছেন বলে আমাদের জানান।