প্রকাশিত: 24/11/2020
বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানি বানিজ্য সহজীকরণে কাস্টমস, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বন্দরের যৌথ এন্ট্রি শাখার উদ্বোধন করেন আজ মঙ্গলবার (২৪শে নভেম্বর) বেলা ১২ টার সময় চেকপোস্ট জিরো পয়েন্টে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আজিজুর রহমান।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, আগে আমদানি রপ্তানি বানিজ্যের সময় একই তথ্য,পণ্য প্রবেশ দ্বারে বাংলাদেশ কাস্টমস,বিজিবি ও বন্দরের কাছে তিন বার এন্ট্রি করতে হতো।
এতে দ্রুত বানিজ্য সম্প্রসারনে যেমন বাধাগ্রস্থ হতো তেমনি রাজস্ব আদায়েও বাধা গ্রস্থ্য হতো। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে বাণিজ্য সহজিকরণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন যৌথ এন্ট্রি শাখার উদ্বোধনে আমদানি-রপ্তানি বানিজ্য যেমন গতি বাড়বে তেমনি রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
বেনাপোল স্থল বন্দরের উপ-পরিচালক ট্রাফিক মামুন কবির তরফদার জানান, আগে তিন জাইগায় তথ্য এন্টির কারনে সময় ক্ষেপনে বাণিজ্যে ধীরগতি নেমেছিল। প্রতিদিন যেখানে ৫শ ট্রাক আমদানি হওয়ার কথা সেখানে ৩শ ট্রাক ঢুকতো। তিনটি শাখার সমন্বয়ে এন্ট্রি শাখার উদ্বোধন বানিজ্যক ক্ষেএে নতুন দিগন্তের উন্মচন হবে।
বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের সুবেদার আশরাফ জানান, উর্ধতন কর্মকার্তাদের নির্দেশে যৌথ ভাবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে করে আমদানি-রপ্তানিতে সচ্ছতা ও গতিশীল বৃদ্ধি বাড়বে।
বেনাপোল সি এন্ড এফ এজেন্টস এ্যসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান (সজন) জানান, দীর্ঘদিন ধরে কাস্টমসের কাছে আমরা যৌথ ভাবে আবেদন জানিয়ে আসছিলাম। দেরিতে হলেও এ ধরনের উদ্যোগ বানিজ্য তরান্বিত হতে বড় ভুমিকা রাখবে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ পণ্যবাহী গাড়ি বেনাপোল বন্দরে আসে। একইপথে বেনাপোল থেকে এক'শ থেকে দেড়'শ পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে যায়। আগে ভারত থেকে আমদানি পণ্য বেনাপোল বন্দর প্রবেশের সময় তিন জায়গায় এন্ট্রি করতে হতো।
এক্ষেত্রে একটি পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে ঢুকতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগতো। এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হতো। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তিন জায়গার পরিবর্তে এক জায়গায় ডাটা এন্ট্রি করার জন্য কমিশনারের কাছে বারবার আবেদন করেছি।
আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশনার আজ তিন জায়গায় পরিবর্তে এক জায়গায় ডাটা এন্ট্রির উদ্বোধন করলেন। এক জায়গায় ডাটা এন্ট্রির ফলে আমদানি-রপ্তানি গতিশীলতা পাবে এবং সহজ হবে।
ভারত বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, বাংলাদেশ অংশে তিনটি সংস্থ্যার সমন্বয়হীনতার কারনে ভোগান্তি হচ্ছিল ব্যবসায়ীদের। এখন এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেল ব্যবসায়ীরা। এমন উদ্যেগকে তিনি তিনটি সংস্থ্যাকে সাধুবাদ জানান।
এসময় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বেনাপোল কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. নেয়ামুল ইসলাম, উপ-কমিশনার শামীমুর রহমান,বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল, সহকারী পরিচালনা (ট্রাফিক) আতিকুর রহমান, বেনাপোল সি এন্ড এফ স্টাফ এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমানসহ কাস্টমস বন্দর ও ব্যবসায়ী সংগঠনের কর্মকর্তা,কর্মচারীরা।
উল্লেখ্য, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের স্থলপথে যে পণ্য আমদানি হয় তার ৭০ শতাংস হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়ে থাকে। আমদানি পণ্য থেকে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসে।