মাটি হচ্ছে তিন কোটি টাকা ১৭ বছরেও পানির মুখ দেখেন’নি ফুলবাড়ী পৌরবাসী

মাটি হচ্ছে তিন কোটি টাকা ১৭ বছরেও পানির মুখ দেখেন’নি ফুলবাড়ী পৌরবাসী

পৌরবাসীর বিশুদ্ধ পানীয়জল সরবরাহের জন্য তিন কোটি টাকার অধিক অর্থ ব্যয়ে ভূগর্ভে পাইপ লাইন স্থাপনসহ পাম্পঘর নির্মাণ করার দীর্ঘ ১৭ বছরেও পানির মুখ দেখেন’নি দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরবাসী। অবহেলা-অযতেœই রয়েছে, চারটি পাম্পঘরসহ ভূগর্ভের পানির পাইপলাইনগুলো। মাটির নিচেই তিন কোটি টাকা মাটিতে পরিণত হচ্ছে। 
ফুলবাড়ী উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পৌরবাসীর নাগরিক সুবিধা হিসেবে পানি সরবরাহের জন্য ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে চার কিলোমিটার পৌর এলাকায় ভূগর্ভে পানির পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়। চার কিলোমিটার এলাকায় পাইপ লাইন স্থাপনের এক যুগ পর গত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে এক কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে দশ কিলোমিটার এলাকায় পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়। একই সময়ে ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজ চত্বরে, পৌরসভা ভবনে, উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও কানাহার রেলস্টেশন এলাকার চার স্থানে চারটি পাম্পঘর নির্মাণ করা হয়। গত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে এক কোটি এক লাখ ৬৪ হাজার ৮৭ টাকা ব্যয়ে আরো ২০ কিলোমিটার এলাকায় পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়। 
এ দিকে, তিন কোটি টাকার অধিক অর্থ ব্যয়ে ভূগর্ভে পাইপ লাইন স্থাপনসহ পাম্পঘর নির্মাণ করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো অযতœ ও অবহেলায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর আগে পানি সরবরাহের কার্যক্রমটি শুরু হলেও কবে শেষ হবে তা সংশয় দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে পর্যায়ক্রমে দুইটি নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র ও কাউন্সিলর বদল হয় এবং আগামী ২৮ ডিসেম্বর আবারো পৌর নির্বাচন আসলেও, পাইপ লাইনের পানির মুখ দেখতে পান’নি ফুলবাড়ী পৌরবাসী।
ফুলবাড়ী উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-প্রকৌশলী মো. সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘গত ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এলাকায় পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ করে পানি সরবরাহ কার্যক্রম পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো পানি সরবরাহ শুরু করেনি। পানি সরবরাহের জন্য দফতারিকভাবে একাধিকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হয়েছে কিন্তু তারা কিছুই জানান’নি। আমরা পাইপ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ করে হস্তান্তর করেছি এখন সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। এছাড়াও ৪০ পৌরসভা ও গ্রোথ প্রকল্পের আওয়ায় ফুলবাড়ী পৌর কর্তৃপক্ষকে ৩০টি টিউবওয়েল দেয়া হয়েছে। 
ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মো. মুরতুজা সরকার মানিক বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভূগর্ভে পানির পাইপ লাইন চালু করতে বলেছেন। পৌরসভা থেকে এ বিষয়ে মাইকিং করা হয়েছে কিন্তু কেউ পানির জন্য আবেদন করেন’নি। পানির পাইপের কাজ এখনো অসমাপ্ত রয়েছে। সে অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।’ 
তিনি আরো বলেন, ‘ফুলবাড়ীতে ৭০ ফিট ভূগর্ভেই পানি পাওয়া যায়, কিন্তু কোথায় কোথায় ৫০০ ফিট ভূগর্ভেও পানি মিলে না তাই ফুলবাড়ীতে এ পানির চাহিদা কম।’
এ বিষয়ে দিনাজপুর জেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুরাদ হোসেন ০১৭১৫ ১২৫৩০৭ সরকারি মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনকল করা হলেও তিনি ফোনকলটি গ্রহণ করেন’নি। 
 

আরও পড়ুন

×