প্রকাশিত: 09/12/2020
নারীদের স্বাবলম্বী করে একজন জোছনা চৌধুরীর দারিদ্র্যতা জয়ের গল্প //
-----------------------------------------------------
মানুষের কূপমন্ডুক মানসিকতার কারণে সমাজ রাষ্ট্রে মানুষ তার দারিদ্রতার কথা গোপন রাখে , অথচ দারিদ্র্যতা কোন লজ্জার বিষয় নয়।
জাতীয় কবি , দ্রোহ প্রেমের বিপ্লবী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর "দারিদ্র্য" কবিতায় বলেছেন " হে দারিদ্র্য তুমি মোরে করেছো মহান "। দারিদ্র্যতা একজন নারী নেত্রী মোছাঃ জোছনা চৌধুরীকে মহান না করলেও - উদ্যোক্তা হয়ে তাঁর কর্মতৎপরতায় তিনি সমাজ রাষ্ট্রকে আলোকিত করেছেন , কর্মহীন নারীরা আজ অসহায় নয় , পরিবারের বোঝা নয় , তারা নিজ
শ্রম ও কর্মে প্রত্যেকে স্বাবলম্বী , যেকোন কর্মের চ্যালেঞ্জে আত্মপ্রত্যয়ী , যা অনুকরণীয় উদাহরণ হিসাবে অন্যান্য নারীদেরও কর্মের প্রতি উত্সাহিত করে তুলছে , যা জোছনা চৌধুরীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামে এই সফলতার জয়গান রচিত হয়েছে।
আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনের সুপরিচিত মুখ মোছাঃ জোসনা চৌধুরীর শৈশবের পারিবারিক গল্পটা দারিদ্রতার হলেও , তিনি স্বীয় মনোবল আর দৃঢ়তায় শুধু পরিবারের দারিদ্র্যতাকেই জয় করেননি , আশুগঞ্জ উপজেলার শতাধিক পরিবার থেকে দারিদ্রতা দূর করতে উদ্যোগী হয়ে সফল হয়েছেন। দারিদ্র্যতা দূর করতে কর্মসংস্থান প্রয়োজন , কর্মহীন নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য তিনি সমাজ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত কোন ব্যক্তিবর্গের কাছে সুপারিশে সময়ের অপচয় করেননি , ধর্ণাও দেননি কারো কাছে।
দুচোখ ভরা স্বপ্নে নিজে উদ্যোক্তা হয়েছেন , দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের সেলাই কাজ , বিউটি পার্লারের কাজ , হাস মুরগী পালনের প্রশিক্ষণে তাদের প্রশিক্ষিত করেছেন , তাদের তৈরী করা পণ্যের বাজারও তৈরী করতে বহুপথ হেঁটেছেন , নিজেদের তৈরী পণ্যের গুণগত মান উপস্থাপন করে সফলভাবে বাজারজাত করেছেন। যার ফলে একেকজন স্বাবলম্বী নারী মাসে ২০/২৫/৩০ হাজার টাকা আয় করছেন।
এছাড়া একজন সামাজিক কর্মী হিসাবে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধেও তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। গতানুগতিক সমাজ ব্যবস্থায় নারী শুধু গৃহস্থালির কাজ করবে , অভাবের সংসারে স্বামী শ্বাশুড়ীর নির্যাতন সহ্য করবে , নির্যাতন নিপীড়ণ নীরবে সহ্য করবে , ধর্ষণে বিচার বঞ্চিত হবে - এসবের প্রতিবাদে এবং সমাজে নারীদের জায়গা মজবুত করতে সত্যিই তিনি একজন সংগ্রামী নারী। একজন নারী স্বাবলম্বী হলেই কেবল পরিবার , সমাজ রাষ্ট্রে নিজেকে মেলে ধরতে পারে , পরিবারের সদস্যদের শিক্ষিত করতে পারে।
এছাড়া রাজনৈতিক অঙ্গনেও জোছনা চৌধুরী আশুগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক , কর্মীবান্ধব নারী নেত্রী , দলীয় পোগ্রামে শতাধিক নারী কর্মী নিয়ে উপস্থিত হোন , বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রত্যাশিত জয়যাত্রার পথে - উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের নীতি আদর্শ বিবর্জিত কর্মকান্ডের কাছে হেরে যান। হেরে গেলেও তিনি এমন একজন সাংগঠনিক নারী নেত্রী - আগামীদিনে যে আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবেন তা অনুমেয়।
বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশে ব্যাপকহারে নারীদের কর্মসংস্থান করে দেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দেওয়ার যে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন - মোছাঃ জোছনা চৌধুরী যেন জননেত্রীর যুদ্ধের সৈনিক।
একজন উদ্যোক্তা নারী হিসাবে মোছাঃ জোসনা চৌধুরী সমাজকে দারিদ্র্যতার অভিশাপ থেকে আলোকিত করেছেন। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ২০১৭ তে জোসনা আপাকে জয়িতা’ সম্মাননায় ভূষিত করেছেন। এ তাঁর প্রাপ্য অর্জন , আমরা এমন একজন সফল উদ্যোক্তা নারীর জন্য গর্বিত , ভবিষ্যতে তাঁর কর্মকৌশল ও কর্মদক্ষতায় তিনি আমাদের সমাজ থেকে - দারিদ্র্যতা দূরীকরণে নারীদের কর্মজীবী করে তোলার যে মিশনে আছেন - তা নিশ্চয়ই আরো বেগবান হবে।