প্রকাশিত: 01/02/2021
আউট সোর্সিং কাজের নামে ঝিনাইদহ অঞ্চল থেকে চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া বায়োজিদ ওরফে তোফায়েল অনলাইনের এক ভয়ংকর প্রতারক। তাকে গ্রেফতরা করা হলে বহু তরুন তরুনীর হা-হুতাশ থেমে যাবে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, সিরাজগঞ্জ জেলায় একাধিকবার বায়োজিদ গ্রেফতার হলেও তাকে আটকে রাখতে পারিনে। আইনের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে সে বেরিয়ে নির্বিঘেœ তার প্রতারণার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতারক বায়েজিদ সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার মধ্য মিতনী গ্রামের তোফাজ্জেল খন্দকারের ছেলে।
ঝিনাইদ সদর থানা ও র্যাব ক্যাম্পে ঝিনাইদহের তিন তরুন-তরুনীর লিখিত অভিযোগ পেয়ে প্রতারক বায়োজিদ ওরফে তোফায়েলকে আটকের চেষ্টা করছে আইনশৃংখলা বাহিনী। মতিয়ার রহমান নামে এক যুবকের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বায়েজিদ ওরফে তোফায়েল আউট সোর্সিং কাজের নাম করে ঝিনাইদহ ও আশ-পাশ এলাকা থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা লুটে নিয়ে পালিয়েছে।
ঝিনাইদহ সদর থানায় দাখিল করা একটি অভিযোগের মাধ্যমে জানা গেছে, বেকারত্বের কারণে অনলাইনে কাজের খোঁজ করছিলেন হরিণাকুন্ডু উপজেলার রিশখালী ইউনিয়নের গোবরা পাড়া গ্রামের মোঃ এলেম মন্ডলের ছেলে মতিয়ার রহমান। মতিয়ার রহমানের সম্পর্কে ভাগ্নে সাদিকুর রহমানের সাথে আউট সোর্সিং বিষয়ে কথা হলে সে বায়েজিদ ওরফে তোফায়েল নামের এক জনের সাথে পরিচয় করে দেয়।
বায়েজিদ ইজি ক্যাশ নামের একটি অনলাইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইনকামের কথা বলে মতিয়ার রহমানকে। বায়েজিদ মতিয়ারকে বলে ৪৪০০ টাকা দিয়ে আইডি কিনে কাজ শুরু করলে প্রতিমাসে ৩৯০০ টাকা করে আয় হবে। এছাড়া কেউ যদি তার রেফারেন্সে আইডি খোলে তবে আইডি প্রতি ৬০০ টাকা করে রেফারেন্স বোনাস পাবে। এই ভাবে এমএলএম ভিত্তিক টিম করে কাজের পরামর্শ দেয় সিরাজগঞ্জের সোহেল ও সাগর নামের আরও দুই যুবক।
তারা মতিয়ারকে এই কাজে আরো প্রলুব্ধ করে। মতিয়ার রহমান চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ, হরিণাকুন্ডু ও ঝিনাইদহ সদরের বিভিন্ন স্থানে মার্কেটিংয়ে নেমে ৬/৭ মাসের মধ্যে ১৫০০ থেকে ২০০০ জন সদস্য যোগাড় করে। যারা প্রত্যেকেই অনলাইনে কাজের সন্ধান করছিল।
আউট সোর্সি য়ের মাধ্যমে উপার্জনের চিন্তা করে আগ্রহী যুবক যুবতীরা মতিয়ার রহমানের কাছ থেকে ইজি ক্যাশ সাইটে নিজ নিজ নামে আইডি কিনে কাজ করতে থাকে। ২০২০ সালের ২৮ আগস্ট ইজি ক্যাশ ওয়েবসাইটটি বন্ধ করে দেয় প্রতারক বায়জিদ। ইজি ক্যাশ ওয়েবসাইটে ভিপিএনের মাধ্যমে আমিরিকান আইপি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের ভুয়া একটি ঠিকানা ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা হতো।
সাইট বন্ধ করে দিলে আইডি কিনে কাজ করতে চাওয়া ঝিনাইদহ, মাগুরা ও চুয়াডাঙ্গার ভুক্তভোগী তরুণ-তরুণীরা তাদের ঊর্ধ্বতন টিম লিডারদের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। চাপের এক পর্যায়ে বায়েজিদ এদের বলে নতুন একটি সাইট করা হচ্ছে সার্ভে করে উপার্জন করতে হবে। ইজি ক্যাশ সাইটের আইডিতে যার যত ব্যালান্স ছিল এই সাইটে তা সমন্বয় করা হবে।
সেভার জোন.ওআরজি বর্তমানে এই ওয়েবসাইটে টাকা সমন্বয় করার কথা থাকলেও এই তরুণ-তরুণীদের ফোন রিসিভ করছেন না প্রতারক বায়েজিদ ওরফে তোফায়েল। সেভার জোন.ওআরজি নামের এই ওয়েবসাইটের অফিসিয়াল ঠিকানা দেওয়া আছে কানাডার একটি যায়গার। কিন্তু বাস্তবে এই ওয়েবসাইটি নিয়ন্ত্রণ করে বায়জিদ।
এই সাইটে কাজের অফার দিয়েও বায়োজিদ নতুন করে ধান্দা শুরু করেছে বলে পুলিশ মনে করছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানান, এই চক্রটি বহু যুবকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পেয়েছি। আমরা এ বিষয়ে সিআইডর মাধ্যমে কাজ শুরু করার চেষ্টা করছি।