প্রকাশিত: 05/02/2021
সামনে ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি তাই ঝিনাইদহের ফুলচাষীরা ব্যাস্ত ফুল পরিচর্যায়।এবার ঝিনাইদহে বিশ্বস ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে ফুলচাষীরা তাদের উৎপাদিত ফুল বিক্রয় করবে ৪ কোটি টাকার মতো।
ঝিনাইদহের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২১০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে।এর মধ্যে সদর উপজেলায় ২৭, কালীগঞ্জে ৩৫, কোটচাঁদপুরে ১৫ এবং মহেশপুরে ১৩৬ হেক্টর জমিতে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগদ্ধা, গ্লাডিওলাস ও জারবেরাসহ দেশি-বিদেশি ফুলের চাষ হয়েছে।
এখানের মাটি ও আবহাওয়া ফুল চাষের উপযোগী হওয়ায় কম খরচে দ্বিগুণ আয় হয়। এজন্য জেলায় দিন দিন বাড়ছে ফুল চাষ। বছরের অন্যান্য সময় ফুল চাষিদের আয় কিছুটা কম হলেও বিভিন্ন উৎসব ও দিবসে আয় হয় দ্বিগুণ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর এলাকার আনোয়ার বলেন, মালিকের ফুল বাগানে কাজ করি।
আমাদের বাগানে ৫ বিঘায় জারবেরা ফুল রয়েছে। এসব ১১ রঙের ফুল। এখন ফুল বিক্রি করছি ৭-৮ টাকা পিস। সামনে ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারি। এজন্য ফুলের বাড়তি পরিচর্যা করছি। তখন প্রতি পিস ফুল বিক্রি হবে ১৫-২০ টাকা।
একই এলাকার ফুল চাষি মুকুল বলেন, আমার আড়াই বিঘা জমিতে রজনীগন্ধা ও গাঁদা ফুল আছে। বর্তমানে ফুলের পিস পাঁচ টাকায় বিক্রি করছি। তবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দিগুণ দামে ফুল বিক্রি হবে।
কোটচাঁদপুর এলাকার ফুল চাষি আয়ুব হোসেন বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল আছে। এখন ওষুধ দিচ্ছি। এতে করে ফুলে পোকা লাগবে না, রঙ ভালো থাকবে, মানও ভালো হবে। তখন বেশি দামে ফুল বিক্রি করব।
ফুল চাষিরা জানান, এখন গোলাপ প্রতি পিস বিক্রি হয় পাঁচ টাকা। গাঁদা ফুলের মালা ১২০ টাকা। তবে ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে গোলাপের পিস বিক্রি হবে ১৫-২০ টাকা। গাদা ফুলের মালা বিক্রি হবে ২৫০-৩০০ টাকা।
সদর উপজেলার ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জমির হোসেন বলেন, কয়েকদিন পরই ফুলের চাহিদা বাড়বে কয়েকগুণ। আমরাও সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিশেষ করে দুই দিবস ঘিরে চার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে। এতে চাষি এবং ব্যবসায়ী উভয়ে লাভবান হবেন।
তবে ফেরিঘাটে যানজটের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে সঠিক সময়ে ফুল পাঠাতে না পারায় অনেক লোকসান হয়।ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, বর্তমানে ফুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তাদের প্রয়োজনীয় সকল প্রকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নিয়মমতো ওষুধ দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার ফেরিঘাটে ফুলবাহী গাড়িগুলোকে আগেভাগে পারের জন্য জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে ইতিবাচক আশ্বাস পেয়েছি। সুন্দরভাবে যথাসময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে পৌঁছে যাবে ফুল।