প্রকাশিত: 12/02/2021
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানা পুলিশ উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় আয়োজিত বিট পুলিশিং সমাবেশ বয়কট করেছেন ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা। সমাবেশে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের মর্যাদাহানি ঘটায় সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান বয়কট করে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন।
ফুলবাড়ী জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হলরুমে সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব, মিথ্যা প্রচার, সাইবার বুলিং, কিশোর গ্যাং ও নারীর প্রতি ডিজিটাল ভায়োলেন্স বিরোধী বিট পুলিশিং সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ফুলবাড়ী থানার ওসি ফখরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অতিথির আসনে বিভিন্ন পেশার মানুষকে বসানো হলেও ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে বসানো হয়নি।
উপরোন্ত বক্তব্যের সময় ফুলবাড়ীর সাংবাদিকদের মধ্যে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল ইসলাম ডিফেন্সের নাম ঘোষণা করা হলে তিনি বক্তব্য দেন। এরপরই আকস্মিকভাবে থানার ওসির নির্দেশনায় সঞ্চালক সাংবাদিকদের কোন সংগঠনের নেতৃত্বে না থাকা এক ব্যক্তিকে সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেন।
ঐতিহ্যবাহী ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পরে ব্যক্তি বিশেষকে সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়ায় ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকসহ ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ওসির অনুষ্ঠান বয়কট করে সভাস্থল ত্যাগ করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা।
ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিজারুল ইসলাম ভুট্টু বলেন, অনুষ্ঠানে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের পরে অন্য কোন সাংবাদিককে বক্তব্য দেওয়ার অর্থই হচ্ছে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবকে হেয় এবং ছোট করা। এ কারণে সভা বয়কটসহ সভাস্থল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদুল ইসলাম ডিফেন্স বলেন, থানার ওসি ফখরুল ইসলামের পছন্দের কোন সাংবাদিককে বক্তব্য দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করে থাকলে তাকে আমার আগে দেওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু আমার বক্তব্যের পরে যাকে ওসি ফুলবাড়ীর সিনিয়র সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য সঞ্চালককে নিদের্শনা দিয়েছেন তিনি তো কোন সাংবাদিক সংগঠনের কোন প্রকার নেতৃত্বে নেই। এ কারণে সেখানে আমাকে নয়, ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবকে হেয় করার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন ওসি ফখরুল ইসলাম বলে আমরা মনে করি।
ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, ব্যক্তির চেয়ে সংগঠন বড়। ওসি ফখরুল ইসলাম সেখানে সংগঠন নয়, ব্যক্তিকে বড় করে দেখেছেন। তা না হলে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পরে কোন ব্যক্তি সাংবাদিককে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতেন না। এতে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের মর্যাদাহানী ঘটেছে বলেই অনুষ্ঠান বয়কটসহ সভাস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক অমর চাঁদ গুপ্ত অপু বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃজনক। ইতোপুর্বেও ওসির পুলিশিংয়ের সভাগুলোতে অতিথির আসনে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে থাকা কাউকেই বসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবারের বিট পুলিশিংয়ের সমাবেশে ওসি ফখরুল ইসলামের পছন্দের কোন ব্যক্তি সাংবাদিককে বক্তব্য দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে তাকে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ
সম্পাদকের বক্তব্যের আগে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটি না করায় উপস্থিত ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে অনুষ্ঠান বর্জনসহ সভাস্থল ত্যাগ করেছেন।