প্রকাশিত: 21/02/2021
ফুলবাড়ী শহীদ মিনার
সংস্কার শুধু একদিনের জন্যই
অর্পিত দায়িত্ব পালন করেনি পৌরসভা
শহীদ মিনারে সারাবছর জুতা-স্যান্ডেল পরে উঠাসহ সেখানে বসে মাদকসেবন করলেও নজরে পড়েনা কারো।
সারাবছর অযতেœ। ২১ শে ফেব্রুয়ারি এলেই শুধু একদিনের জন্য হয় শহীদ মিনার ধোয়ামোছার কাজ। প্রতিবছরে দৃশ্য একই। অথচ বছরের বাকি সময়টায় অবহেলা-অযতেœই পড়ে থাকে শহীদ মিনার। আজ রবিবার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। শুধু এইদিনটিকে ঘিরেই দিনাজপুরের ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ধোয়ামোছা কাজ হয়েছে।
তবে ধোয়ামোছার দায়িত্ব নিয়েও গাফলাতি দেখা দিয়েছে। ফুলবাড়ী পৌরসভাকে শহীদ মিনার ধোয়ামোছাসহ আলোকসজ্জার দায়িত্ব দেওয়া হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন না করে সে কাজ বাস্তবায়ন করেছে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ধোয়ামোছা কাজ ফুলবাড়ী পৌরসভাকে বাস্তবায়ন করতে বলা হলেও তার করেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার বিকালে শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, শহীদ মিনারটি ধোয়ামোছাসহ রং করছে ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের নিয়োজিত কিছু সংখ্যাক লোকজন।
কথা হয় সেখানে ঘুরে বেড়ানো প্রবীণ আলতাফ উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন শহীদ মিনার তো সারা বছর অবহেলা-অযতেœই পড়ে থাকে। সেখানে কিছু বখাটেরা বসে নেশা করে। একদিনের জন্য লোক দেখানো ধোয়ামোছা করে কি প্রমাণ করা হয়?
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, সারা বছরই শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় শহীদ মিনার চত্বরে নিরাপত্তা বেষ্টনির প্রয়োজন। সম্ভব হলে কর্তৃপক্ষের উচিৎ শহীদ মিনার চত্বরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভির আওতায় আনা।
ফুলবাড়ী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. লিয়াকত আলী বলেন, শুধুমাত্র ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে শহীদ মিনার তৈরি হয়নি। সারাবছর অবহেলায় শুধুমাত্র একদিন ধোয়ামোছা করে শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা হয়না।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তি শিক্ষক গোবিন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, সারাবছরই শহীদ মিনারের অযতœ চোখে পড়ে। মূল বেদিতে জুতা-স্যান্ডেল পায়ে ওঠাসহ ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। এটি খুবই দুঃখের বিষয়।
ফুলবাড়ী সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আহসান হাবীব বলেন, উপজেলা থেকে চিঠি পেয়ে শহীদ মিনারটি কলেজের উদ্যোগে ধোয়ামোছা করা হয়েছে। বরাবরই কলেজ কর্তৃপক্ষই শহীদ মিনারের যতœ নিয়ে আসছে। যদি পৌরসভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে তবে শহীদ মিনারের প্রবেশপথসহ আশপাশের ময়লা-আবর্জনাগুলো পরিষ্কার করা উচিত তাদের।
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র মো. মাহমুদ আলম লিটনকে তার মুঠোফোনে (০১৭১২ ৫০১৮৪৫) একাধিকবার ফোনকল করা হলে তার মুঠোফোনটি সুইচঅফ পাওয়া যায়।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, শহীদ মিনার ধোয়ামোছার জন্য ফুলবাড়ী পৌরসভাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে শহীদ মিনারটি ধোয়ামোছাসহ আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করতে। শহীদ মিনারের যতœ নেওয়া উচিত। শহীদ মিনার সংস্কারসহ রক্ষণাবেক্ষণের বাজেটের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে।