ফুলবাড়ীতে চার দফা দাবিতে খনি শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন

ফুলবাড়ীতে চার দফা দাবিতে খনি শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন

ফুলবাড়ীতে চার দফা দাবিতে খনি শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন
খনির কাজ ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছে
খনিতে কর্মরত সকল শ্রমিক


দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চার দফা দাবিতে গতকাল সোমবার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে খনির কর্মরত শ্রমিকরা খনি কাজ ছেড়ে খনি ক্যাম্পাস থেকে  বেড়িয়ে এসে ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। 
সকাল ১১টায় ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম।
এসময় খনি শ্রমিক মো. শামিম, মোস্তাফিজুর রহমান, মতিনুর ইসলাম, রবিউল ইসলাম, ফেরাজুল ইসলাম, সাজেদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, শাহিন ইসলামসহ প্রায় তিন শতাধিক খনি শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন। 
চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, ১. খনির চলমান লকডাউন প্রত্যাহার করে সকল শ্রমিককে টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে স্ব-স্ব কাজে যোগদান করানো এবং খনির প্রধান ফটক উন্মুক্ত করা, ২. সকল শ্রমিককে প্রোফিট বোনাসসহ সকল প্রকার বকেয়া বেতনভাতা ও উৎসবভাতা প্রদান করা, ৩. শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার করা এবং ৪. বিবিধ।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম বলেন, লকডাউনের অজুহাতে খনি কর্তৃপক্ষ অধিকাংশ শ্রমিককে বেকার করে বাড়ীতে বসিয়ে রেখেছেন। এতে করে শ্রমিকদের পরিবার পরিজন খেয়ে না খেয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়াও যেসকল শ্রমিক খনির ভিতরে কর্মরত ছিলেন খনি কর্তৃপক্ষ সেই সকল শ্রমিকের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে। গত ৬ মাসে শ্রমিকদেরকে তাদের স্বজনদের সাথে দেখা করতে দেয়নি। গত রবিবার রাতে বিক্ষোভ চলাকালে আমাদের পাঁচজন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। তাদের দ্রুত মুক্তিসহ শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। আমাদের চার দফা দাবি না মানা হলে কোন শ্রমিক কাজে যোগদান করবে না।
খনির ভিতরে কর্মরত শ্রমিক ফেরাজুল ইসলাম, সাজেদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, শাহিন ইসলাম বলেন, গত ৬ মাস থেকে আমাদেরকে খনিকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। ১২০০ শ্রমিকের কাজ ৬০০ শ্রমিক দিয়ে করিয়ে নিয়েছে। চীনারা আমাদের ওপর অমানবিক নির্যাচত চালিয়েছে। খাওয়ার সময়েও মাস্ক মুখ থেকে খুলতে দেয়নি। এছাড়াও ভিতরে তারা লাল চিহৃ দিয়ে সীমানা রেখা দিয়েছে সে রেখাচিহৃ পার হলে এক হাজার টাকা করে কর্তন করা হয়। গত ছয়মাসে আমরা কেউই আপনজনদের চেহারা দেখতে পাইনি। গত ররিবার আমরা সকল শ্রমিক খনি থেকে বেরিয়ে এসেছি। 
এবিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের ০১৩১৩ ৭০০৪৪০ নম্বরের দাপ্তরিক মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি  ফোন কেটে দেওয়ায়  এ বিষয়ে তাঁর কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে খনি শ্রমিকরা ফুলবাড়ী পৌর শহরে চারদফা দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহর প্রদক্ষিণ করে। অপরদিকে মামলার ভয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে খনিশ্রমিকদের মধ্যে।
 

আরও পড়ুন

×