প্রকাশিত: 17/03/2021
ব্যস্ততম সড়কের পাশে হোটেলের খনন করা খাল-ই এখন পথচারিদের মরণ ফাঁদ দুর্গদ্ধে অতিষ্ঠ দোকানীসহ পথচারীরা একদিনেই সেই খালে পড়ে এক নারীসহ বৃদ্ধা আহত
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ব্যস্ততম সড়কের পাশেই (দিনাজপুর-ফুলবাড়ী-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক) হোটেলের বর্জ্যপানি ফেলার খাল-ই এখন পথচারিদের মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ওই খালের বর্জ্য পানির দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পার্শ্ববর্তী দোকানীসহ পথচারিদের। একদিনেই ওই খালে পড়ে এক নারীসহ বৃদ্ধা গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
সরেজমিনে পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র নিমতলামোড়ে গিয়ে দেখা যায়, আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশেই খালিদ রেস্টুরেন্ট নামের এক হোটেলের বর্জ্য পানি ফেলার জন্য গভীর খাল খনন করা হয়েছে। সেই খালে ভেসে আছে হোটেলের বর্জ্য- আবর্জনাসহ সাদা দুর্গন্ধময় পানি। পথচারিদেরকে নাকে-মুখে কাপড়- রুমালসহ হাত চেপে যেতে দেখা গেছে।
হোটেলের পার্শ্ববর্তী সাউন্ড ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম, সাইকেল স্টোর নূরুল ইসলাম ও দোকান কর্মচারী মো. ফারুক বলেন, দীর্ঘ দেড় মাস পূর্বে সড়কের পাশেই খালটি খনন করা হয়। খালে ফেলা বর্জ্যপানির দুর্গন্ধে দোকানে বসে থাকা যায় না। একটু বাতাস হলেই সেই দুর্গন্ধ চারিপাশে ছড়িয়ে যায়।
রাস্তার অপরপার্শ্বেই নিমতলা জামে মসজিদ রয়েছে। নামাজরত অবস্থায় সেই গন্ধে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও প্রায় সময় সেই খালের নোংরা পানি তুলে রাস্তায় ফেলা হয়। সেই পানি মারিয়েই মসজিদে ঢুকতে হয়। এ বিষয়ে আমরা দোকান মালিকসহ মুসল্লিরা হোটেল মালিককে বহুবার বললেও হোটেল মালিক বলেন, যান আমার বিরুদ্ধে কাকে অভিযোগ দিবেন দেন।
গত সোমবার এই খালে পড়ে এক নারীসহ বৃদ্ধা গুরুত্বর আহত হয়। আমরা প্রশাসনসহ পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত ওই খাল বন্ধের ব্যবস্থা নিতে। অন্যথায় সামনে রমজান মাস আসছে। আমাদের রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
রিকশা-ভ্যান চালক মমিনুল ইসলাম ও খাদেমুল ইসলাম বলেন, নিমতলামোড়ে রিকশা স্ট্যান্ডের পেছনেই খাল খনন করেছে হোটেলে মালিক। সেই খালের গন্ধে সেখানে রিকশা রাখা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দ্রুত ওই খাল ভরাটের দাবি জানাচ্ছি। পথচারি রোকসানা খাতুন, হাবিবা সুলতানা ও ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ওই খালের গন্ধে সড়কটি দিয়ে হাঁটা যায় না।
নাকে-মুখে কাপড়-রুমালসহ হাত দিয়ে চেপে ধরে পথ হাটতে হয়। প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় এ কেমন চিত্র? এটাকেই কি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা বলা হয়? খালিদ রেস্টুরেন্টের স্বত্ত্বাধিকারী মাসুদ রানা বলেন, আমার হোটেলের পাশ দিয়ে একটি ড্রেন ছিল। সেই ড্রেনটি পৌরসভা থেকে বন্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে বারংবার বলার সত্ত্বেও তারা কোন উদ্যোগ না নেওয়ায়। খালটি খনন করা হয়েছে। যাতে হোটেলের বর্জ্যপানিগুলো রাস্তায় না ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফুলবাড়ী পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. মামুনুর রশিদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোনকল করা হলে ফোনটি সুইচ অফ পাওয়া যায়।
ফুলবাড়ী পৌর মেয়র মো. মাহমুদ আলম লিটন বলেন, এভাবে সড়কের ওপর কেউ-ই খাল খনন করতে পারবে না। এ বিষয়ে স্থানীয়রা লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।