ডিমলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করণ ও তাদের নামে সড়কের উদ্বোধন

ডিমলায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করণ ও তাদের নামে সড়কের উদ্বোধন

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খানের নিজস্ব অর্থায়নে এলাকার ১৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত করণ করে সংরক্ষন ও দুইজনের নামে সড়ক নামকরণ করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৬-মার্চ) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে সড়ক ও মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করণ ফলকের উন্মোচন করেন চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খান।

জানা গেছে, ওই এলাকার মৃতঃ ১৯জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ১১জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরের প্রাচীর নির্মান করা হয়। এছাড়া স্থানীয় কিছু সমস্যার জন্য ৬জন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত করে ঐ গবরগুলোর পাশে নামের ফলক উন্মোচন করা হয়। সেই সাথে দুইজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি দেখে তাদের  নামে দুটি সড়ক নাম করণ করা হয়।

চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খানের নিজস্ব অর্থায়নে ২লক্ষ ১৬ হাজার ৬৬৬ টাকা ব্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে এসব কাজ করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে লতিফ খানের এই কাযক্রমকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের পরিবার ও এলাকাবাসী স্বাগত জানায়। উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, আমরা দেশের জন্যে যুদ্ধ করেছি। দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি কিন্তু আমাদের এলাকার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ও চিহ্ন দিন দিন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছিল। এ বিষয়ে আমরা আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তাৎক্ষনিক তাদের কবর চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে দেন এবং এগুলো সংরক্ষনে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। 

স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ কোরবান আলী বলেন, সরকারীভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে কিছু করতে চাইলে সেটা অনেক দীর্ঘমেয়াদী। তাই আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ও আমাদের পরিবারের লোকজনেরা এসব অবহেলিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর সংরক্ষন করার দাবী জানালে তিনি একবাক্যে রাজি হয়ে যান এবং এসব কবর সংরক্ষনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এতে আমরা খুবই খুশি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের এ পর্যন্ত ১৯জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন। কিন্তু এই কবরগুলো চিহ্নিত না। দিনের কালক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে এসব কবর এর অস্তিত্ব । এ বিষয়ে আমরা চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তার নিজস্ব অর্থায়নে এসব কবর চিহ্নিত করে সংরক্ষনের ব্যবস্থা করেন। এতে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা ওনার উপর সন্তুষ্ট। আমরা তার দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং পুনরায় আবারো তাকে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবো ইনশাআল্লাহ।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ছামান আলীর স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, আমার স্বামী ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। আমার স্বামীর কবর প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেয়েছিলো। তাই আমি লতিফ খান চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানাই আমার স্বামী সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করে সংরক্ষন করার জন্য।

এ বিষয়ে পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খান বলেন, আমাদের এলাকায় যে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্ত তাদের কবরগুলো দীর্ঘদিন থেকে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে ছিল। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আমার মস্তিষ্কে কিছু চিন্তা ভাবনার উদয় হয়। তাই আমি আমার ইউনিয়নে যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা ইন্তেকাল করেছেন, সেকল মুক্তিযোদ্ধাদের কবর আমি নিজের অর্থায়নে বাধাই করে দিয়েছি। এছাড়া ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের কবর চিহ্নিত করে নামের ফলক লাগিয়েছি। এছাড়া দুইজন মুক্তিযোদ্ধার কবর পাওয়া যায়নি। তাই তাদের নামে আমাদের ইউনিয়নে দুটি সড়ক নামকরণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×