প্রকাশিত: 19/03/2021
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে যাত্রী নিয়ে সড়ক পথে ঢাকায় যাবে ব্যতিক্রমধর্মী এক নৌকা।যেটি নির্ধিদায় চলতে পারে রাস্তায় কিংবা পানিতে। আছে গাড়ির মত স্টিয়ারিং, আবার নদীতে চলার জন্য পিছনে রয়েছে দুটিপাখা। নৌকাতে উঠার জন্য রয়েছে বিমানের আদলে সিঁড়ি।রয়েছে গিয়ার, ফলো ক্যামেরা,হেডলাইট, ইন্ডিকেটর,এসিফ্যান, মিটার বোর্ড, হর্ণ আর বডিজুড়ে ২৪ জন যাত্রী বসার সু-ব্যবস্থা। পাটাতনে আছে ছাউনি।ব্যতিক্রমী এ উভচর নৌকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চড়াতে চান, নৌকার কারিগর ইউছুপ। জল ও স্থলে চলা উভচর এ যানটির নাম জলডাঙা মুজিব পরিবহন।বাহিরে জাতীয় কয়েকটি প্রতীকের সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি আঁকা এমন ব্যতিক্রম ধর্মী নৌকা বানিয়েছেন,লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের পূর্ব চর কলাকোপা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে নৌকা তৈরির কারিগর মোঃ ইউছুফ।গত তিন বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় ১৪-১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নৌকাটি তৈরির কাজ প্রায় শেষপ্রান্তে।এখন প্রতিদিন ব্যতিক্রমধর্মী উভয়চর নৌকা ”জলডাঙা মুজিবপরিবহন”দেখতে ভীড় করছে চারপাশের গ্রামের হাজারো মানুষ।নৌকাটির কারিগর ও মালিক ইউছুফ জানিয়েছেন,জাতির জনকের প্রতি ভালোবাসা আর নিজের পরিশ্রমে বানানো নৌকায় মুুজিব জন্মশতবর্ষের দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ নৌকায় উঠিয়ে ঘুরাতে চান তিনি।এদিকে গত বুধবার ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে যাত্রী নিয়ে সড়ক পথে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল।এমনটাই জানিয়েছেন,এ নৌকার মালিক ইউছুফ।তার প্রত্যাশা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অন্তত তার নৌকায় একবার ওঠে নৌকাটি দেখবেন।স্থানীয়ভাবে জানা যায়,জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার কারণে মুজিব জন্মশতবর্ষে উপহারটি দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিল দিনমজুর মোঃ ইউসুফ মেস্ত্রী। কিন্তু মহামারি করোনা আর আর্থিক সংঙ্কটের কারণে প্রধানমন্ত্রীকে সময়মত উপহারটি দিতে পারেনি।এবার সকল জল্পনা-কল্পনা শেষে ১৭ মার্চ বুধবার গণভবনের সামনে এ নৌকাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে হস্তান্তরের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভালোবাসার সুবাদে এই নৌকার নামকরণ করা হয়েছে ”জল ডাঙ্গা মুজিব পরিবহন"।দিনমজুর মো: ইউসুফ মেস্ত্রীর এ কাজে আরো সহযোগীতায় ছিলেন স্থানীয় এলাকাবাসি মো: করিম ও মো: আলাউদ্দিন। জল ডাঙ্গা মুজিব পরিবহনটি নদীতে ও সড়কে চলাচল করতে সক্ষম।স্থানীয়রা জানায়,আওয়ামীলীগের প্রতি প্রবল পাগল ইউছুপ ২০১৯ সাল থেকে দিনমজুর মো: ইউসুফ কিছু কাঠ দিয়ে শুরু করেছিল নৌকাটি নির্মাণের। দিনের বেলায় নিজের কাজ শেষে রাত জেগে তৈরি করেছিলেন নৌকা।ইউসুফ জানান, সর্বপ্রথম বাবা আমাকে ৫০ হাজার টাকা হাতে তুলে দিয়ে নৌকা তৈরির জন্য অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। পাশাপাশি আমার স্ত্রীও সব সময় নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আশা করেন আমার পরিশ্রম ওইদিনই স্বার্থক হবে যেদিন প্রধানমন্ত্রী আমার নৌকাটি-তে ওঠবেন বা দেখবেন।এদিকে মোঃ ইউসুফের বাবা আবুল কালাম জানান, ১৯৭০ সালের বন্যার পরে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গুচ্ছগ্রামে আসেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।সে সময় তার বাবা মাটি কেটে ওই কিল্লা স্থাপনে সহযোগী ছিলেন।বাবার মুখে বঙ্গবন্ধু’র কথা শুনে সে থেকে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামীলীগকে প্রচন্ডভাবে ভালোবাসেন তিনি। কিন্তু তার ভালোবাসা নিজের ছেলের মাধ্যমেই পূরণ করতে চাচ্ছেন।এদিকে স্থানীয়রা জানায়, সারাজীবন মানুষের নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত ছিলো মো: ইউসুফ মেস্ত্রী ও তাদের পরিবার। নিজেদের কোন নৌকা না থাকলেও স্বপ্ন পূরনের অঙ্গিকার নিয়ে নিরলসভাবে পরিশ্রমকরেছেন এ নৌকা তৈরিতে। তিনি মনে করেন,ওই দিনই তার স্বপ্ন আর কষ্ট স্বার্থক হবে যদি প্রধানমন্ত্রী তার বানানো নৌকাটি ছুয়ে দেখেন।সেজন্য সকলের সহযোগিতা চান তিনি।এ বিষয়ে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন,ইউছুফ নামে এক যুবক বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দীর্ঘ তিন বছর ধরে পরিশ্রম করে একটি উভয়চর নৌকা বানিয়েছেন। তার এই উদ্ভাবিত নৌকাটি সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে আশা করে আছে,আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।
ইউছুফ লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের পূর্ব চরকলাকোপা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে।
নৌকাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতেই ইউছুফের সেটি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল আজ বুধবার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও পুলিশ প্রশাসন থেকে তাঁকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিতে নিষেধ করা হয়। এতে ভেস্তে যায় ইউছুফের সব পরিকল্পনা।