শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে উঁচু ভাস্কর্য ঝিনাইদহে

কোনটা আকারে বিশাল আবার কোনটা খুবই সুদৃশ্য। শিল্পী তার নিজস্ব চিন্তা থেকে তৈরি করেছেন এসব প্রতিকৃতি।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেশ-বিদেশে তৈরি হয়েছে অসংখ্য ম্যুরাল এবং ভাস্কর্য। বিভিন্ন দিবসে এসব ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা জানানো হয় এই মহান নেতার প্রতি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উঁচুতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছে ঝিনাইদহে। ১২৩ ফুট উচ্চতায় স্থাপিত ম্যুরালটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুতে কোন রাষ্ট্রনায়কের ভাস্কর্য বলে দাবি করা হচ্ছে আয়োজকদের পক্ষে। বিশ্বের আর কোন রাষ্ট্রনায়কের ভাস্কর্য এতো বেশি উঁচুতে স্থাপন করা হয়নি।এর আগে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বৃহৎ ভাস্কর্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে স্থাপন করা হয়। চট্টগ্রামের টাইগারপাসে সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনেও স্থাপন করা হয় বঙ্গবন্ধুর বিশাল ভাস্কর্য। এ ছাড়া দেশের বিভিন্নস্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কয়েকটি নয়নাভিরাম ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।ঝিনাইদহে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি স্থাপন করার পর আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কোনো রাষ্ট্রনায়কের এত বেশি উচ্চতায় ভাস্কর্য স্থাপন করার ঘটনা বিশ্বের মধ্যে এটাই প্রথম। ঝিনাইদহের বারোবাজারের শমসের নগরের সরকারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজে স্থাপন করা ভাস্কর্যের নাম দেয়া হয়েছে ‘The Statue of Speech & Freedom’। জন্মের ১০০ বছর এবং ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ২৩ বছরকে ভাস্কর্যটির মূল বিষয়বস্তু হিসেবে ধরা হয়েছে। ৮টি তলার মাধ্যমে ১২৩ ফুট উচ্চতায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বসানো হয়। প্রথম তলায় বঙ্গবন্ধুর পরিবার, দ্বিতীয় তলায় স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ও সেক্টর কমান্ডার, তৃতীয় তলায় সারাবিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রাম, চতুর্থ তলায় বঙ্গবন্ধু পাঠাগার ও জাদুঘর, পঞ্চম তলায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর, ষষ্ঠ তলায় একটি অফিস কক্ষ হবে। ৮ তলাবিশিষ্ট এ টাওয়ারটি সম্পূর্ণ গ্লাস টাওয়ার বানানো হবে। ভাস্কর্য ও জাদুঘর বাস্তবায়নে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সরকারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. সফিকুল ইসলাম, কলেজের সভাপতি ড. রাশেদ শমসেরসহ আয়োজকরা।ডা. রাশেদ শমসের জানান, এখনো এর কাজ সম্পন্ন হয়নি। বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। গত বুধবার (১৭ মার্চ) ১২৩ ফুট উচ্চতায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটি বসানো হয়েছে।আয়োজকরা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের জন্য ২০টি আবক্ষ ভাস্কর্য এবং ‘The Statue of Speech & Freedom’ এর মূল নক্সা অনুযায়ী সব কার্যক্রম কিছুদিনের মধ্যেই দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে। ঝিনাইদহে স্থাপন করা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যটির মতো এত বেশি উচ্চতায় বিশ্বের আর কোন রাষ্ট্রনায়করে ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়নি- এটাই আয়োজকদের দাবি বলে জানান। ভাস্কর্য তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে ৪০ লাখ টাকা। এর চারপাশে বেদি, সৌন্দর্যবর্ধন ও আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ব্যয় হবে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এটির সর্বমোট ব্যয় দাঁড়াবে ৮৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত ও স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে এ ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।