প্রকাশিত: 08/04/2021
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ইলেক্ট্রিক ও বিকাশ এজেন্ট’র দোকান ঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা সুজনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বিকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কামানখোলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
ভাঙচুর থেকে নিজ দোকানকে রক্ষা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হন মনির হোসেন। এতে তাঁর পুরো শরীর জখম হয়। ভেঙ্গে যায় বাম হাতের আঙুল ও কুনুই। আহত দোকানি গতকাল রাতেই সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে এ ঘটনায় দুইজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামী করে সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন ওই দোকানদার।
অভিযুক্তরা হলেন, দালাল বাজার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত. চৌধুরীর ছেলে মারুফ হোসেন সুজন ও একই এলাকার দুলাল বেপারীর ছেলে মো. ফিরোজ।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন মনিরদের ক্রয়কৃত জমির গাছ কর্তন করতে যান ফিরোজরা। সেখানে মনিরের ছোট ভাই রাশেদ বাঁধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে আসামীরা লোহার রড, দা, ছেনি, লাঠি নিয়ে মনিরের ইলেক্ট্রিক ও বিকাশ এজেন্ড’র দোকান ঘরে হামলা চালায়। এতে দোকানে ২টি কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক্স মালামাল সহ প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এছাড়া বিকাশের কাজে ব্যবহৃত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায় আসামীরা। হামলায় বাঁধা দিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন দোকানদার মনির হোসেন। এতে তাঁর বাম হাতের কুনুই ও আঙুল ভেঙ্গে যায়।
অভিযোগকারী মনির হোসেন বলেন, হামলাকারীরা লোহার রড, দা, ছেনি ও লাটি নিয়ে অতর্কিতভাবে দোকানে হামলা চালায়। তাদেরকে বাঁধা দিলে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে আহত করে। পরবর্তীতে দোকানে থাকা বিকাশের কাজে ব্যবহৃত ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা। এছাড়াও কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রিক মালামাল ভাঙচুর করে। তাছাড়া এ ঘটনায় মামলা করলে হত্যা ও গুম করবে বলেও হুমকি দেয় হামলাকারীরা।
মনিরের বাবা দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, বিরোধকৃত সম্পত্তি প্রায় ৪০ বছর ধরে ভোগদখল করছেন। কিন্তু গত ৫ বছর পূর্বে প্রতিবেশি মৃত. মনু মিয়ার ছেলে ওমর ফারুক ও মৃত. সেকান্তর মিয়ার ছেলে মো. সানাউল্যাহ ওই সম্পত্তি নিজেদের দাবী করে জমির কিছু অংশে জোরপূর্বক ৩টি দোকানঘর নির্মাণ করে। ওই ঘটনায় তখন আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গতকাল ওই জমির বাকী অংশে থাকা গাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টা করে সুজন ও ফিরোজ। কিন্তু দখলে ব্যর্থ হয়ে মনিরকে মারধর ও দোকান হামলা চালায়। অভিযোগটি অস্বীকার করে মারুফ হোসেন সুজন বলেন, মনির নিজের দোকান নিজেই ভাঙচুর করেছে। শুধুমাত্র সন্মান ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে তাঁর নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
অন্য অভিযুক্ত মো. ফিরোজ বলেন, নিজেদের দখলীয় জমির গাছ কাটতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগও করেছেন। তিনিও সুজনের ন্যায় ইলেক্ট্রিক ও বিকাশ এজেন্ট’র দোকান ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগটি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, কামানখোলা বাজার এলাকার দোকানঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। বিষয়টি প্রমানিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে।