প্রকাশিত: 29/04/2021
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় মনিরুল ইসলাম (২৭) নামে এক যুবক তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) হওয়ায় তার পরিবারের বাড়িঘর ভেঙে দিয়ে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন স্থানীয় মাতবররা।
এ ঘটনায় উল্লাপাড়া মডেল থানায় একটি অভিযোগ দেওয়ার পর গত মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ দুই মাতবরকে আটক করেছেন।
আটককৃতরা হলেন চরঘাটিনা গ্রামের মেছের আলী (৫৫) ও মঞ্জু সরকার (৫২)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল উল্লাপাড়া উপজেলার চরঘাটিনা গ্রামের। মনিরুল ইসলাম এই গ্রামের হাফেজ মিস্ত্রির ছেলে। তিনি স্বাভাবিক ছেলে হিসেবেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী তৃতীয় লিঙ্গে পরিণত মনিরুল ইসলামের ভাই মজনু মিয়া থানায় দেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, মনিরুল স্বাভাবিক ছেলে হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন। বয়স ১৫-১৬ বছর পার হওয়ার পর প্রাকৃতিক কারণে আস্তে আস্তে তার শরীরে পরিবর্তন আসে এবং কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি তৃতীয় লিঙ্গে পরিণত হয়। এর পর তার আচার-আচরণ, কথা, ব্যবহার সব কিছুই তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মানুষের মতো হয়ে যায়।
সেভাবে তিনি প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনের সঙ্গে আচরণ করতে শুরু করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন গ্রামের বেশ কিছু মাতবর। তারা মনিরুলকে হিজড়াপল্লীতে গিয়ে বসবাস করার নির্দেশনা দেন। মনিরুল প্রায়শই শাহজাদপুর হিজড়াপল্লীতে গিয়ে থাকতেন।
কিন্তু গত ১৩ এপ্রিল গ্রামের মাতবররা মনিরুলের কারণে তার বাবা-মাসহ গোটা পরিবারকে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে এক মাসের মধ্যে গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেন।
মনিরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, মাতবরদের বুঝিয়েছেন তার লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য বাবা-মা দায়ী নন। তারা গ্রামে থাকবেন এবং তিনি (মনিরুল) গ্রাম থেকে অন্যত্র চলে যাবেন। কিন্তু তাতে মাতবররা রাজি হননি। বরং এ কথা বলতে গেলে মাতবরদের হাতে মারও খেয়েছেন। এ অবস্থায় তার ভাই মজনু মিয়া বাদী হয়ে গত ২৭ এপ্রিল উল্লাপাড়া থানায় চরঘাটিনা গ্রামের ১১ জন মাতবরকে আসামি করে একটি অভিযোগপত্র করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ উল্লিখিত দুই মাতবর মঞ্জু সরকার ও মেছের আলীকে গ্রেফতার করে।