ফুলবাড়ীতে ৭ মাসের প্রসুতির পেটে লাথি ৯ দিন পর মৃত নবজাতকের গর্ভপাত

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ধানের খড় শুকানোকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডায় সাত মাসের প্রসুতির পেটে লাথি মারার ৯ দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় বুলবুলি বেগমের (৩০) গর্ভপাত ঘটেছে। গর্ভপাতে জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানটি মৃত ছিল।
ঘটনাটি ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদীপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ী সেনোড়া গ্রামে ঘটেছে। বুলবুল ওই গ্রামে অটোরিকশা মেরামতকারী ওয়াহেদুল ইসলামের স্ত্রী।
বুলবুলির স্বামী ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, গত ১১ মে আমার বাড়ির সামনে পাশের বাড়ির মিজানুর রহমান লাল্টুর স্ত্রী রুবিনা বেগম ধানের খড় শুখাতে দেয়। ওইদিন সন্ধ্যার আগে আমার স্ত্রী খড়গুলো সড়িয়ে নিতে রুবিনাকে বলে। তখন রুবিনা ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগালি শুরু করলে এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এই মুহুর্তে পাশের বাড়ির আলী হোসেনের মেহেদুল, বুদু ও মোতালেব রুবিনাকে বলে বুলবুলিকে ধরে মারপিট করতে উসকানি দেয়। এর একপর্যায়ে রুবিনা বুলবুলির হাত ধরতে তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে তার পেটে লাথি দেয়। সাতমাসের প্রসুতি ছিল বুলবুল। পরে সে ব্যাথায় ছটফট করতে থাকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। বুলবুলির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে সেখানে চিকিৎসা নিয়ে গত বুধবার (১৯ মে) ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে আসে। 
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বুলবুুলি অসহ্য ব্যাথায় চিৎকার শুরু করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দুপুর আড়াইটায় মৃত নবজাতকের গর্ভপাত হয়।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মিডওয়াইফ আফরোজা বেগম বলেন, বুলবুলিকে ভর্তি করার সময় পা থেকে কোমড় পর্যন্ত বের হয়ে ছিল। শিশুটির হাত পা ও শরীরের ত্বক ফাটা ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে শিশুটি আগেই গর্ভে মারা গিয়েছিল। ঝুঁকির মধ্যেই আড়াইটা থেকে চেষ্টা চারিয়ে বিকাল ৪ টায় বুলবুলির  নবজাতক গর্ভপাত করা হয়।
ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোছা. নাফিসা আলম বলেন, বুলবুলি প্রায় ৭ মাসের গর্ভবতী ছিল। কিন্তু অকারণেই তার অপরিপক্ক নবজাতকের গর্ভপাত ঘটে। গর্ভপাতের বহুপূর্বেই তার বাচ্চাটি মারা গিয়েছিল। তবে তাকে ২৪ ঘন্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এই সময়ের পূর্বে কিছু বলা যাবে না। #