প্রকাশিত: 11/06/2021
কক্সবাজার জেলার রামু থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি)হিসেবে যোগদান করেছেন আনোয়ারুল হোসাইন।
গত ৮ জুন মঙ্গলবার রামু থানার সাবেক ওসি আজমিরু জ্জামানের কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।
এরআগে ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল চট্টগ্রাম রেঞ্জে কখনো চাকরি করেননি, তবে তিনি সিলেট ওসি ইমিগ্রেশন ,
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলা বাজার থানার ওসি ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এর ইন্সপেক্টর (এডমিন) এর দায়িত্ব সততা ও নিষ্টার সাথে পালন করেন।
রামু থানায় ওসির দায়িত্ব নিয়েই পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সেবাপরায়ণ করে তোলার উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়ার কথা জানালেন আনোয়ারুল হোসাইন। কথা নয়, 'কাজ’ দেখাতে চান তিনি।
এক সাক্ষাৎকারে ওসি আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, রামুতে সকল ধর্মের মানুষের বসবাস। এখানে ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রাখতে কাজ করে যাব।
ওসি বলেন, শক্ত হাতে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও বাল্যবিয়ে দুর করতে চাই। এছাড়া এলাকায় চুরি-ডাকাতিরোধ, ছিনতাই প্রতিরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ইত্যাদি সমাজ বিরোধী কর্মকান্ড প্রতিরোধ করা হবে।
মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীর সাথে কোন আপোস নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'মাদকের বিরুদ্ধে বরাবরই আমার অবস্থান, এটা অব্যাহত থাকবে।
পুলিশের চাকুরিতে ১৯ বছর পার করেছি। মাদকের সাথে কোন সময় সংশ্লিষ্ট ছিলাম না, কোনদিন হবও না।
মাদকের সঙ্গে পুলিশ কোনো আপোস করবেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো লটারেন্স দেখাবে। তাই যেখানেই মাদক, সেখানেই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
রামু এলাকাটি ট্রানজিট এলাকা হওয়া মাদক পরিবহনে রামুকে সহজে যাতে ব্যবহার করতে না পারে সে দিকে সজাগ রয়েছি।
ওসি বলেন, “আমাদের স্টকহোল্ডার আছে। সহযোগী বিভিন্ন বাহিনী রয়েছে । তারা যেমন কাজ করছে, রামু থানা পুলিশও জেলা পুলিশ সুপার এবং চট্টগ্রামের রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশনাক্রমে আমরা কাজ করব। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। শুধুমাত্র যিনি অতীতে মাদক ব্যবসা করেছেন তিনিই নন, ভবিষ্যতেও নতুন নতুন নাম সেই ব্যবসার সাথে জড়িত হবে তাদেরও তালিকা হবে। আইন মোতাবেক প্রত্যেক মাদক ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওসি আনোয়ারুল বলেন,
'উর্ধবতন কতৃপক্ষ আমার প্রতি যে আস্থা রেখে আমাকে রামু থানায় দিয়েছেন, মাদক নির্মূল, সততা এবং কর্তব্যপরায়ণ হয়ে রামু থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বদা কাজ করব। আমি কর্তৃপক্ষের আস্থার প্রতিদান দেব, চ্যালেঞ্জ নিয়ে চাকরি করব ইনশে আল্লাহ।
তিনি বলেন, ভুমি সংক্রান্ত বিরোধ যথাসম্ভব নিরসনের চেষ্টা করা হবে। তবে রামু থানায় কোন তদবিরবাজ, টাউট, বাটপার ও দালালের স্থান হবে না। মামলা, জিডি, অভিযোগ ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে কোন টাকা পয়সা লাগে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশকে কাজ করতে হলে তার প্রশিক্ষণ, যানবাহন, সরঞ্জাম ইত্যাদি প্রয়োজন৷ এগুলো তার স্বাধীন এবং দক্ষতার সঙ্গে কাজ করার অন্যতম উপকরণ"।
বাংলাদেশ পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার, মামলা গ্রহণ, বিচারে সহায়তা, সড়ক শৃঙ্খলাসহ অনেক দায়িত্ব পালন করেন৷
রামু চৌমুহনী সহ বিভিন্ন রুটে যানজট ইদানিং লক্ষ্য করা গেছে। পথচারীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। যানবাহন চলাচল সুশৃঙ্খল করার কাজ করব। মানুষ যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারে সে দিকে লক্ষ্য রেখেই এগিয়ে যাচ্ছি।
নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আলাদা কোন পরিকল্পনা আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি আনোয়ারুল হোসাইন বলেন, রামু এলাকাগুলো বেশির ভাগ দুর্গম, ট্রানজিট এলাকা।
আমাদের (পুলিশের) বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করব। রামু থানায় প্রতিটি পুলিশ সদস্যই নতুন, যে জায়গাগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেই জায়গাগুলোকে ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হবে। মোবাইল, ফুড পেট্রোল, বিভিন্নভাবে ডিসিপ্লিনিটি শো করে নিরাপত্তার জন্য কাজ শুরু করব। তবে একটু সময়ের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, সাংবাদিকসহ সকলে সহযোগিতা করলে রামু থানা এলাকায় মাদক নির্মূল ও আইনশৃঙ্খলা অবস্থা ভালো থাকবে।
প্রসঙ্গত, রামু থানার ওসি আজমিরুজ্জামানকে ঢাকা এবিপিএনে বদলি করা হলে তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল হোসাইন।