লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ভূলুয়া নদীরিউপর তৈরি হলো দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে  ভূলুয়া নদীরিউপর তৈরি হলো দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ডাক্তারপাড়া এলাকায় ভূলুয়া নদীর উপর তৈরি করা হলো দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু। দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর যাবত ঐ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ মেঘনানদীর শাখা খাল এই ভূলুয়া নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবী করে আসলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। ২০২০-২১ অর্থ বছরে এলজিএসপির থেকে চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ নিজ উদ্যোগে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মালেকের তদারকিতে ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন এই কাঠের সেতু তৈরী করে দেন।সেতুটি নির্মাণের ফলে চরপাগলা ও চরকাদিরা এলাকার কয়েক হাজার মানুষের চলাচলে আর কোন ঝুঁকি নেই। শুধু একটি সেতু নয়, চরকাদিরা ইউনিয়ন ব্যাপী আরো কয়েকটি সেতু, পোল, কালভার্ট, কাঁচা রাস্তা ও ব্রীজ নির্মাণ সহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ। এর আগে ঐ এলাকায় বসবাসকারী মানুষগুলো নদীর উপর বাঁসের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতো।এতে শিশু বৃদ্ধা সহ চলাচলকারীরা নানা দূর্ঘটনার শিকার হয়েছেন।বর্ষা মৌসুম এই এলাকার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে হাটবাজারে যাতায়াত করতে নানা বিড়ম্বনা সম্মুখীন হতে হয়েছে। স্থানীয় লেদার বাপের সমাজ,বাবর ভুঁইয়ার সমাজ, চরপাগলা, ডাক্তারপাড়া ও ফজুমিয়ারহাট এলাকার মানুষের চলাচলের নতুন এই পথ উন্মুক্ত হলো। দুই থেকে আড়াই মাস পরিশ্রমে সেতুটি নির্মিত হয়। সেতুটি দেখার জন্য বহুদূর থেকে শত-শত মানুষ জড়ো হয়। গ্রামবাসীদের মধ্যে দেখা গেছে সীমাহীন আনন্দ।সেতুটি নির্মাণে ব‍্যয় হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা। সেতুটির দৈর্ঘ্য ১২৮ ফুট এবং প্রস্ত ৭ ফিট । কাঠের সেতুটি নির্মাণে সরকারী বরাদ্দের বাহিরে স্থানীয় মেম্বার আব্দুল মালেকের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করেন বলে জানান তিনি। ডাক্তার পাড়া গ্রামের মাওলানা হোসাইন বলেন, বর্ষাকালে নৌকা দিয়ে নদী পার হতে গিয়ে ছাত্রছাত্রী, বয়স্ক মহিলা ও রোগীদের অনেক সমস্যা হতো। এই কাঠের সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় এখন আমরা গাড়ি নিয়ে এপার থেকে ওপারে যেতে পারছি খুব সহজে। চরকাদিরা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সফিক উল্লাহ বলেন, আমাদের গ্রামে কোনো স্কুল ও কলেজ না থাকায় এলাকার ছাত্রছাত্রীরা নদীর ওপারে বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও মাদরাসায় যেতে নৌকা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। নৌকা দিয়ে নদী পার হতে গিয়ে নৌকাডুবির মতো ঘটনও ঘটেছে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আমাদের বহুদিন যাবত ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ ও স্থানীয় মেম্বার আব্দুল মালেকের প্রচেষ্টায় সুন্দর এই কাঠের সেতু নির্মাণ করতে পেরে কিছুটা আনন্দিত হয়েছে এলাকাবাসী। আমরা এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। চরকাদিরা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মালেক বলেন এলজিএসপির অর্থায়ন ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে কিছু অর্থ দিয়ে নদীর উপর এই কাঠের সেতু তৈরী করা হয়েছে। এই এলাকার গর্ভবতী মহিলাসহ গুরুতর অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়েছে।এই কষ্টের কিছুটা লাঘবের জন্য আমরা কাঠের সেতু নির্মাণ করি। আমি স্থানীয় এমপির নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি তিনি যেন দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের ব‍্যবস্থা করেন। চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমার ইউনিয়ন একটি অবহেলিত ইউনিয়ন।ভূলুয়া নদীর উপর একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দিয়েছি। শুধুমাত্র এলাকবাসীর যাতায়াত সুবিধার্থে। অতি দ্রুত এখানে একটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণের জন্য আমি স্থানীয় এমপি সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি। লক্ষ্মীপুর-৪ কমলনগর-রামগতি আসনের সংসদ সদস্য মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নান বলেন,বিষয়টি নিয়ে আমি ঐ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করে নদীর উপর একটি ব্রীজ তৈরী করে দিবো।

আরও পড়ুন

×