প্রকাশিত: 10/07/2021
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে সরকারি খাল খননের নামে কৃষকের মালিকানা জমি থেকে মাটি উত্তোলন ও গাছ ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। খাল খননের নামে ভেকু মিশিন দিয়ে নয় ছয় করে সরকারী টাকা লুটপাটের এক মহাউৎসব চলছে।আর তাতে কৃষকের মালিকা জমিতে খাল খননের নামে লাখ টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেন তারা। অন্যদিকে বৃষ্টির পানিতে খনন করা মাটি আবার ঐ খালে পাড়ে যে লাউ সে কদুতে পরিনত হয়েছে। এতে কারে সরকার যে লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে খাল করছে তা ভেস্তে যেতে বসেছে। শনিবার উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়নের ফজুমিয়ারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আনোয়ার হোসেন হিরন বাদি হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ দায়েরের পর ‘বিতর্কিত’ ওই স্থান থেকে মাটি উত্তোলন বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক উপজেলার চরকাদিরা এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন হিরন জানান, নিজ মালিকানাধীন জমিতে খামার তৈরি করে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত তিনি মাছচাষসহ কৃষি পণ্য উৎপাদন করে আসছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ‘চেউয়াখালী খাল খনন’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেন। প্রকল্পটির আওতায় তার মৎস্য খামার এলাকায় ভেকু মেশিনের মাধ্যমে মাটি উত্তোলনের মাধ্যমে খাল খননের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু শনিবার সকালে স্থানীয় ভুলুয়া নদীর সঙ্গে খনন করা ওই খালের সংযোগ দিতে তার মালিকানাধীন খামারের পাশ থেকে মাটি খনন করা হয়। নিজ রেকর্ডিয় জমি থেকে ভেকু মেশিনের সাহায্যে মাটি উত্তোলন করার ফলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৩০-৩৫ টি গাছ ভেঙে পড়ায় তিনি বেশ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারি জায়গা না হলেও ওই স্থান থেকে মাটি উত্তোলনের খবর পেয়ে আমি দ্রুত ছুঁটে গিয়ে বাধা দেই। কিন্তু ভেকু চালক আমার কথায় কোনো কর্ণপাত করেননি। এতে আমি প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছি। এদিকে ‘চেউয়াখালী খাল খনন’ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আক্তার হোসেন জানান, প্রকল্পের কার্যাদেশ অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানই তারা খনন করেছেন। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। বিএডিসির লক্ষ্মীপুর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, দীর্ঘদিন ধরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে খালটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ২০ লাখ টাকা বরাদ্দে খালটির দুই কিলোমিটার অংশ খননের কাজ চলছিল। এরই মধ্যে আনোয়ার হোসেন হিরন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির আপত্তির কারণে তার দাবিকৃত অংশে খনন কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ভূমি অফিসের মাধ্যমে জমির মালিকানা নির্ধারণ হলে পুনরায় খনন কাজ শুরু হবে। কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোছলেহ্ উদ্দিন অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে জমির মালিকানা নির্ধারণ করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।