লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে র‌্যাব আতঙ্কে’ বাড়িছাড়া তিন পরিবার!

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে র‌্যাব আতঙ্কে’ বাড়িছাড়া তিন পরিবার!

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে  র‌্যাব আতঙ্কে’ বাড়িছাড়া তিন পরিবার
নাসির মাহমুদ(লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি)
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে  র‌্যাব নিরীহ তিন পরিবারকে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযানের নামে নারী সদস্যদের হেনস্তা, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও গ্রেপ্তারের ভয়ে ওইসব পরিবারের সদস্যরা এখন আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে।(আজ) বুধবার বিকেলে কমলনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীরা জানান, সাড়ে ছয় শতক জমি নিয়ে উপজেলার হাজিরহাট এলাকার মৃত আব্দুল মাজেদের ছেলে মোক্তার হোসেনের সঙ্গে চাচা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা খালেদ মোহাম্মদ আলীর বিরোধ চলে আসছিল। এনিয়ে আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থিতাবস্থা জারি রয়েছে। শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে ওই জমিতে খালেদ নির্মাণকাজ করতে গেলে মোক্তার লোকজন নিয়ে বাধা দেয়। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে মোক্তারসহ উভয়পক্ষের তিনজন আহত হন। পরে স্বজনরা মোক্তারকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এদিকে ওই দিন রাত ৮টার দিকে -র‌্যাব-১১ লক্ষ্মীপুর এর একদল সদস্য মোক্তারদের বাড়িতে হানা দেন। এ সময় তারা মোক্তার, তার ভাই গোলজার হোসেন ও চাচাতো ভাই হারুনুর রশিদের বসতঘরে অভিযানের নামে আসবাবপত্র তছনছ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার । একপর্যায়ে তারা পরিবারের নারী সদস্য ও মোক্তারের বৃদ্ধ চাচা আব্দুল গোফরানকে গালমন্দ করা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ হেনস্তা করে। পরে র‌্যাব গোলজারকে আটক করতে লরেন্স এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েও অভিযান চালায়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য এফরানা খাতুন সীমু, নাছিমা আক্তার, রিফাত চৌধুরী সজল ও আব্দুল গোফরান আরও জানান, কোনো প্রকার মামলা বা অভিযোগ ছাড়াই র্যাতব সদস্যরা খালেদের পক্ষ নিয়ে তাদেরকে এ হয়রানি করছেন। এছাড়া এ ঘটনায় খালেদের পক্ষে রোববার কমলনগর থানায় মামলা দায়েরের পরদিন সোমবার র্যাকব সদস্যরা লক্ষ্মীপুর শহর থেকে মামলার আসামি হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
তারা বলেন, প্রতিপক্ষ খালেদের মেয়ের জামাই র্যাকবের ঊর্ধ্বতন পদে কর্মরত ছিলেন। তার মাধ্যমে র‌্যাব-১১ এর সদস্যরা প্রভাবিত হয়ে আমাদেরকে হয়রানি করছেন। এছাড়া খালেদের স্ত্রী ও সন্তানরা র‌্যাব দিয়ে আমাদেরকে শায়েস্তা করার হুমকিও দিয়ে আসছেন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে আমরা এখন বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি।
এদিকে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা খালেদ মোহাম্মদ আলী জানান, বিতর্কিত জমিতে নয়; সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমিতে তিনি নির্মাণ কাজটি করছিলেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা ক্ষুব্ধ হয়ে তার ওপর হামলা চালালে তিনি আহত হন। তবে, র্যা বের অভিযানের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
র‌্যাব-১১ সিপিসি-৩ লক্ষ্মীপুর এর কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার মো. শামীম হোসেন জানান, দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির খবর পেয়ে র‌্যাব টহল দল ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন। তবে, র্যা বের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন।
অপরদিকে কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ্ উদ্দিন জানান, থানায় দায়ের হওয়া মামলার এক আসামীকে র্যাফব সদস্যরা গ্রেপ্তার করে থানায় সোপর্দ করেছেন। তুচ্ছ এ ঘটনায় র্যাশবের হস্তক্ষেপের বিষয়টি স্বাভাবিক নয় বলে ও তিনি মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন

×