নারী হাফেজের ধর্ষণ মামলায় আল আমিন কারাগারে !!!

নারী হাফেজের ধর্ষণ মামলায় আল আমিন কারাগারে !!!

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আলহুদা বালিকা কওমি মাদ্রাসার নারী হাফেজকে (১৭) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার মোহতামিম আল আমিন বিন আমজাদকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। 
    গত ২১ জুলাই (বুধবার) রাত সাড়ে ১২ ওই হাফেজ বাদি হয়ে ফুলবাড়ী থানায় আল আমিনসহ দুইজনের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতে আল আমিনকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
    আসামীরা হলেন, আলহুদা বালিকা কওমি মাদ্রাসার মোহতামিম ও উপজেলার দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামের আমদাজ হোসেন মিস্ত্রির ছেলে আল আমিন বিন আমজাদ (৩৫) এবং ওই মাদ্রাসার পরিচালক ও পৌরবাজারের জুতাপট্টি এলাকার মৃত দবির উদ্দিনের ছেলে আলী আল রেজা (৩৮)।
    এজাহার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে আল আমিন ও আলী আল রেজা ওই নারী হাফেজকে তাদের মাদ্রাসার চাকরির প্রস্তাব দেন। পরে ওই হাফেজ চাকরিরতে সম্মতি জানিয়ে ওই মাদ্রাসায় হাফেজ হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে আবাসিকভাবে থেকে মাদ্রাসায় অধ্যায়ণরত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন ওই হাফেজ। চাকরিতে যোগদানের সময় থেকেই আল আমিন বিভিন্ন প্রলোভন ও লোভ লালসা দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করত। আল আমিন পূর্ববিবাহিত জেনে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে প্রতারণামূলকভাবে ওই হাফেজের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে। তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে রাজি না হলে আল আমিন অপর আসামী আলী আল রেজার সহায়তায় গত ৩ মার্চ বিবাহ বিষয়ক একটি এভিডেভিট তৈরি করে সেই এভিডেভিটে ওই হাফেজের স্বাক্ষর নেয় এবং জানায় আল আমিন ও ওই হাফেজ বিবাহ সম্পর্কে পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। এরপর আলী আল রেজার সহায়তা নিয়ে আল আমিনকে ওই হাফেজের স্বামী বিশ^াস করায়। এবং গত ৩ মার্চ সন্ধ্যা ৭টায় ওই মাদ্রাসার অফিস কক্ষে ওই হাফেজের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে আল আমিন বিন আমজাদ। এরপর থেকে সুযোগ মতো মাদ্রাসার অফিস কক্ষসহ অন্যান্য স্থানে ওই হাফেজের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। এরপর ওই হাফেজ গর্ভবতী হন এবং আল আমিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিবারে স্ত্রী হিসেবে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। আল আমিন আশ^াস দিয়ে ওই হাফেজকে গত ৭ জুন মাদ্রাসা থেকে ওই হাফেজের বাড়িতে নিয়ে আসে রাতে তাদের বিয়ের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে। পরে সেখানেও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং পরদিন বাবার বাড়িতে ওই হাফেজকে রেখে আসে। কিছুদিন পর ওই হাফেজ গর্ভবতী লক্ষণ বুঝতে পেয়ে আল আমিনকে জানালে আল আমিন গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় ওই হাফেজের বাড়িতে গিয়ে তাকে জোরপূর্বক ওষুধ সেবন করায়। ওই রাতেই গর্ভপাত হয়। পরে ওই হাফেজ আনুষ্ঠানিকভাবে স্ত্রী হিসেবে আল আমিনকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে বললে বিভিন্ন টালবাহানা ও অজুহাতে সময় ক্ষেপন করে। ওই হাফেজ আল আমিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার সংসারে নিয়ে যাওয়ার জন্য ও নিকাহ রেজিষ্ট্রি করার কথা বললে আল আমিন ওই হাফেজকে মুঠোফোনে জানায়, সে ওই হাফেজকে বিয়ে করবে না। শুধু ওই হাফেজের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য বিয়ের নাটক করেছে সে। শারীরিক সম্পর্ককালে কৌশলে স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারণ করেছে আল আমিন। আল আমিন ওই হাফেজকে হুমকি ও ভয়ভীতিও দেখায়। আল আমিনের বিরুদ্ধে ওই হাফেজ মুখ খুললে বা কোথাও কোনপ্রকার অভিযোগ করলে সে ওই হাফেজের নগ্ন ছবি ও অশ্লীল ভিডিও দৃশ্য কম্পিউটারে নেটওয়ার্কিং এর  ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্সে ছেড়ে দিয়ে মান ক্ষুণœ করবে। 
    ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, ওই নারী হাফেজ গত ২১ জুলাই (বুধবার) রাত সাড়ে ১২টায় বাদী হয়ে আল আমিন বিন আমজাদ ও আলী আল রেজার বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৮। মামলা পেয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে আল আমিন বিন আমজাদকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
 

আরও পড়ুন

×