কেও কথা রাখেনি !

প্রকাশিত: 24/10/2019

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ 

কেও কথা রাখেনি !

দুর থেকে দেখলে মনে হবে পুকুর কাটার মাহাযজ্ঞ চলছে। কিন্ত না। এটা একটা পরীক্ষা কেন্দ্র ও মাদ্রাসা মাঠের চিত্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনেই বড় বড় গর্ত। চলাচল করা যায় না। তারপরও চলতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। এই অবস্থা ঝিনাইদহ হরিনাকুন্ডু উপজেলার হরিনাকুন্ডু আলিম মাদ্রাসা মাঠের। যেখানে গোটা বর্ষা মৌসুম জুড়ে হাঁটু পানি জমে থাকে। বাচ্চারা প্যান্টগুটিয়ে ক্লাসে যায়। শিক্ষকরা বলছেন, তারা সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ছুটেছেন মাঠে একটু মাটি ভরাটের জন্য, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। কেও কথা রাখেনি। মাত্র ২ লাখ টাকার মাটি ভরাট কাজ করলেই তাদের এই অবস্থার অবসান হতো। কিন্তু তাদের এ দাবি সকলেই শুনে গেছেন, আশ্বাসও দিয়েছেন, কিন্তু কাজ করেননি। শিক্ষকরা নিজেরা মাটি দিয়ে যাতায়াতের পথ তৈরী করে নিয়েছেন। তারপরও অনেক সময় এই পথও চলে যায় পানির নিচে। সরেজমিনে হরিনাকুন্ডু আলিম মাদ্রাসা ঘুরে দেখা গেছে গোটা মাঠেই পানি আর পানি। ভবনগুলোর বারান্দার নিচেই পানি। অনেক স্থানে জঙ্গল হয়ে গেছে। মাঠ দেখলে মনে হবে মাছ চাষের জন্য পুকুর খোড়া হয়েছে। মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মোঃ জামিরুল ইসলাম জানান, হরিনাকুন্ডু পৌরসভা এলাকা ও শহর সংলঘœ এলাকায় কোনো মাদ্রাসা ছিল না। ১৯৯৫ সালে পৌরসভা এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে হরিনাকুন্ডু মৌজায় তারা ৭৫ শতক জমিতে মাদ্রাসা প্রতিষ্টা করেন। ২০১০ সালে তাদের প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত হয়। এ সময় তাদের প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ছিলেন ১৫ জন, আর কর্মচারি ৩ জন। শিক্ষার্থী ছিল ৪ শতাধিক। তিনি আরো জানান, ২০১০ সালে তাদের প্রতিষ্ঠান দাখিল পর্যন্ত এমপিও ভুক্ত হলেও ২০০৮ সাল থেকে তারা আলিম পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি পেয়েছেন। সেই থেকে শিক্ষার্থীদের আলিম পর্যন্ত পাঠদান করাছেন। ২০১০ সালে প্রথম তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে আলিম পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। বর্তমানে তাদের প্রতিষ্ঠানে ৪৩৭ জন ছেলে-মেয়ে পড়ালেখা করছে। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জামিরুল ইসলাম জানান, ২০০৩ সাল থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে তিনটি বোর্ড পরীক্ষা হয়ে থাকে। এগুলো হচ্ছে জেডিসি, দাখিল ও কামিল। হরিনাকুন্ডু উপজেলায় এই পরীক্ষাগুলোর একটিই কেন্দ্র, সেটা তাদের প্রতিষ্ঠান। এভাবে পানি-কঁদার মধ্যে কষ্ট করে তাদের পরীক্ষা নিতে হয়। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি কামরুল আবেদীন জানান, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার সময় উচু জায়গা না পেয়ে কিছুটা নিচু জায়গায় মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর চারিপাশের বসতিরা বাড়িঘর করার সময় মাটি ভরাট করে তাদের জায়গা উচু করেছে। এতে মাদ্রাসা আরো নিচু জায়গায় হয়ে গেছে। আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্র নাইমুর রহমান জানান, তারা মাঝে মধ্যে প্যান্ট গুটিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করেন। এছাড়া পড়ালেখার পাশাপাশি মাঠে খেলাধুলা করবেন সেই সুযোগ একেবারেই নেই। স্থানিয় বাসিন্দা মন্টু মল্লিক জানান, সরকারি এতো টাকা বিভিন্ন ভাবে ব্যয় হচ্ছে আর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে মাটি ভরাট হচ্ছে না এটা খুবই কষ্টের কথা। ছোট ছোট বাচ্চারা কষ্ট করে ক্লাসে যাচ্ছে। পরীক্ষার সময় তাদের কষ্টের শেষ নেই।


 
 

আরও পড়ুন

×