মোচিকে আখ সরবরাহকারী চাষিরা কি ভাবে বকেয়া টাকা পাবেন ?

মোচিকে আখ সরবরাহকারী চাষিরা কি ভাবে বকেয়া টাকা পাবেন ?

ঝিনাইদেহর মোবারকগঞ্জ চিনিকলে আখ সরবরাহ করে এখন চরম বিপাকে শত শত কৃষক। তারা কি ভাবে বকেয়া টাকা পাবেন এই চিন্তায় ঘুম হারাম। টাকার জন্য তারা বিক্ষোভ করছেন দিচ্ছেন জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি, তারপরও কোন সুরাহা হচ্ছে না। মিল রেটের থেকে বাজারে চিনির দাম কম হওয়ার কারণে ডিলাররা চিনি উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন।

আর এতেই বারোটা বেজেছে কৃষক ও শ্রমিক কর্মচারীদের। কৃষকরা একদিকে যেমন আখ বিক্রি করে টাকা পাচ্ছেন না, তেমনি মিলে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীরাও নিয়মিত বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। দুই শ্রেনীর কাছেই দায়বন্ধ হয়ে পড়েছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সহজ উপয় কি ? এমন কোন প্রশ্নের জবাব মিলছে না। খোজখবর নিয়ে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মিলটির কাছে কৃষকের পাওনা রয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

কারখানা সচল রাখতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ টাকার আখ প্রয়োজন হয়। ছয় সাবজোনের ৩৮ ক্রয় কেন্দ্র এবং মিলগেট থেকে এসব আখ কেনা হয়। গত ৭ ডিসেম্বর চলতি মাড়াই মৌসুম শুরু হওয়ার পর প্রথম কিস্তিতে কৃষকদের তিন কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনো বাকি রয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। গত এক মাস ১০ দিনে বাকি পাওনা পরিশোধ না করায় আখচাষীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। চাষীরা প্রায়ই পাওনা টাকার জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।

আর নাজুক এ অবস্থার জন্য মিলে উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়াকে দায়ী করেছেন মিলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউছুফ আলী শিকদার। তিনি জানান, গত মৌসুমে উৎপাদিত প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন চিনি গুদামে পড়ে আছে। আর চলতি মৌসুমে উৎপাদিত চিনি যোগ হয়েছে আরো চার হাজার মেট্রিক টন। সব মিলিয়ে ৩০ কোটি টাকার চিনি গুদামে পড়ে আছে। চিনি বিক্রি না হওয়ায় চাষিদের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে প্রতি কেজি চিনি মিলগেটে বিক্রি হয় ৫০ টাকা। মিলগেটের বাইরে বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি। যে কারনে মিলের তালিকাভুক্ত ডিলাররা এ মিলের চিনি কিনতে অপারগতা প্রকাশ করে আসছে। আর চিনি বিক্রি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে মিলটি। এদিকে আঁখ চাষীদের বকেয়া পাওনা


আদায়ের দাবিতে স্বারকলিপি পেশ করেছেন আখঁচাষীরা। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি পেশ করেন তারা। এসময় মোবারকগঞ্জ চিনিকল আখচাষী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জহুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মন্টু, কৃষক মিজানুর রহমান, মনিরুজ্জামান স্বপন, আক্কাস আলী, আলি আকবর মালিতা, রমজান আলী, আব্দুস
সাত্তারসহ অন্যানরা উপস্থিত ছিলেন। কৃষকনেতারা বলেন, চলতি অর্থ বছরে কালীগঞ্জের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার আখচাষী মিলের কাছে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা পাবেন। দ্রুত এ টাকা পরিশোধ করার দাবি জানান তারা। তারা চিনি শিল্পের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকেও অপসারণের দাবিও জানান।

আরও পড়ুন

×