আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ   

নবম পর্ব:

অপরাজিত কলম সৈনিক রাহেনা ইকবাল

তিনি কে ম্যাডাম? এই তো মিজান স্যার। মিজান স্যার, হ্যাঁ। এ কথাটা শুনা মাত্রই শ্রদ্ধায় মাথাটা এমনিতেই নুয়ে পড়ল। যার কথা- সুমন বিপ্লব ও সহকর্মী, ঘনিষ্ট বান্ধবী ও তিনির এক সময়ের ছাত্রী মিনতী আচার্য্য্’র নিকট থেকে অনেক দিন শুনে আসছি।

যাকে দেখার আকুল আগ্রহ মনে নিয়ে একটু সময়ের অপেক্ষায় প্রহর গুনছি।আর সেই ব্যক্তি আজ আমার সম্মুখে। সালাম দেয়া মাত্রই এমন আন্তরিকতার সহিত কোশল বিনিময় করলেন।

মনে হল আমি তাঁর শত যুগের শত বর্ষের পরিচিত। মিনিটের মধ্যেই আপন ছোট বোনের আসনে বসিয়ে দিলেন আমাকে।যা ভাষায় ফুটিয়ে কাগজ কলমের মাধ্যমে লিখে বুঝাতে পারছি না।

প্রথমেই সুমন বিপ্লবের কাছ থেকে মিজান স্যার নামে এক ব্যক্তির শত সুখ-দু:খের কাহিনী শুনতাম আর মনে মনে কল্পনা করতাম যদি ঐ স্যারকে স্বচক্ষে দেখতে পারতাম, তাঁর নিজ মুখ থেকে যদি বিস্তারিত জানতাম শুধু এই আকাংখা।তার কয়েকদিন পর জানতে পারলাম আমার সহকর্মী মিনতি আচার্য্য’র ও স্যার।

তখন আর ও কৌতুহলী হলাম যে এখন আর দেখা করতে অসুবিধা হবে না। এর কয়েকদিন পরেই স্যার আমাদের স্কুলে উপস্থিত। আর ঐ দিনেই তাঁর কথা বার্তায় মনে হল শত দু:খ-কষ্ট প্রবাস, প্রবাসী জীবন বুকে পাথর চাপা দিয়ে তিনি এই নশ্বর ভুবনে আছেন।

ইচেছ হল সারাদিন সে তাঁর মুখ থেকেই সব কাহিনী শুনব। কিন্তু প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক হিসাবে আমরা এক নাগাড়ে দশ মিনিট বসে ও কেউ কারো সুখ-দু:খের কাহিনী শুনতে পারি না।

অবুঝ শিশুদের নিয়েই আমাদের খেলাধুলায় মেতে থাকতে হয়। স্যার ১০/১৫ মিনিট বসলেন। আর এই কয়েক মিনিটের মধ্যেই মনে হল তিনি যদি আমাদের কাছে সব কিছু বলতে পারতেন তাহলে নিজেকে কিছুটা হলেও হালকা মনে করতেন। সময় না থাকায় আর অতিরিক্ত শুনা হল না।

এর অনেক দিন পর আমাদের স্কুলের এক ট্রেনিং উপলক্ষে তাঁর দোকানের সামনে দিয়ে আমাদের যেতে হবে। তাই পূর্ব থেকেই কল্পনা করে রাখলাম যে, ঐ দিন স্যারকে দেখে আসব।

প্রয়োজনের তাগিদে ঐ দিন স্যারের কাছে বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না।অনিচছা সত্তেও আসতে হল। আর ঐ দিন স্যার আমার মোবইল নম্বর রাখলেন। মাঝে মধ্যে সংবাদ নিবেন।

তার অনেক দিন পর হঠাৎ একদিন রাত স্রার ফোন করলেন, ভাল মন্দ খবর নেয়ার পর বললেন, তিনির ভাগিনা – বাগনীর বিবাহ। উপলক্ষে লেখা দেবার জন্য।

কিন্তু শত ইচছা থাকা সত্তেও দিতে পারলাম না। মনে মনে স্যারের কাছে ও লজ্জিত হলাম। কিন্তু অদম্য কৌতুহল জাগল যে ঐ অসাধারণ ব্যক্তির কি লিখে কিভাবে ভাষায় ফুটিয়ে প্রকাশ করব।

তা ভেবেই চলেছি। তাই কলম হাতে নিতেই তিনির প্রতিচছবি শুধু মনের ফ্রেমে ভেসে উঠে। তাঁর স্বরচিত, তাঁর সম্পাদিত যত বই পড়েছি সব কিছুতেই যেন জীবনের গল্প, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না, সুখ-দু:খের ছাপ লেগেই আছে।

আমার বিশ্বাস স্যারের ভবিষ্যৎ ফুলের মত প্রস্ফুটিত হবে। এই লেখালেখির মাধ্যমেই স্যার অমর হয়ে এই নশ্বর ভুবনে থাকবেন। স্বজনরা ভুললে ও পৃথিবীর অন্য সবাই ভুলবে না।

সবক্ষেত্রে সফলতা স্যারের অর্জিত হলেও সাংসারিক ক্ষেত্রে শুধু ব্যর্থতা। শ্রুত কিাহিনীর মর্মার্থে একজন নারী হয়ে অপর নারীকে জানাতে হয় ধিক্কার।

সহ:শিক্ষক, হাজারী গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিশ্বনাথ, সিলেট।

আরও পড়ুন

×