প্রকাশিত: 03/03/2020
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি : দীর্ঘদিন ধরে প্রলোভন দেখিয়ে এক ছাত্রীর সাথে অবৈধভাবে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে জনৈক্য শিক্ষক অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থেকে ঐ ছাত্রীকে অন্ত:সত্ত্বা করেন। আবার কৌশলে পরিবারসহ অন্ত:সত্ত্বা ছাত্রীকে ঐ শিক্ষক আত্বগোপনে রেখেছেন বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার সূত্র ধরে বেশ কিছু দিন সরজমিনে ঘুরে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঘটনার অন্তরালে লুকিয়ে থাকা তথ্য ঘটনার পিছনের ঘটনা বেড়িয়ে আসতে শুরু করেছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবারড়ী দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের জেসমিন, নুরানী ও আলেফ নুরা নামের তিনজন ছাত্রী গত ১২ ফ্রেব্রুয়ারী’২০২০ তারিখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ দাখিল করেন অভিযোগের সূত্র ধরে ও সরজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, উক্ত বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান প্রথম স্ত্রী থাকা অবস্থায় বাড়ীর কাজের মেয়ের সাথে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ সময় কাজের মেয়ে অন্ত:সত্তা হয়ে পড়ায় অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে বিয়ে করে দুই স্ত্রী নিয়ে সংসার শুরু করেন। এ ঘটনার পর উক্ত বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রীকে বিভিন্ন প্রলোভনে তার সাথেও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন চরিত্রহীন নারী লোভী শিক্ষক আব্দুস সোবহান। ঘটনাচক্রে ঐ ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী রুপালী আক্তার অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়লে সে ঘটনা থেকেও বাঁচতে একই ভাবে বাড়ীর কাজের মেয়ের মতোই ঐ ছাত্রীকে বিয়ে করে ফেলেন। এবার তিন স্ত্রীকে সাথে নিয়েই সংসার বাঁধেন রসিক প্রেম পাগল মাতোয়ারা এই শিক্ষক। সামাজিকভাবে কি আর করার তিনি তো প্রেম করে বিয়ে করতেই পারেন ! বিয়ে তো আর পাপ না !! তাই বহু বিবাহকারী শিক্ষক আব্দুস সোবহান বহাল তবিয়েতে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন দীর্ঘদিন ধরেই। ঘটনার শেষ দৃশ্য এখানেই নয়। তিন স্ত্রী ঐ শিক্ষকের অর্ধাঙ্গীনি হয়ে থাকাবস্থায় তিনি আবারও একই বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণী ছাত্রী ফেন্সি আক্তারকে তার প্রেমের ফাঁদে আটকে ফেলেন। মেয়েটির পরিবার অসহায় গরীব হওয়ার সুবাদে তাকে প্রাইভেট বিনা টাকায় পড়ানোর প্রলোভনে তার সাথেও প্রেমিক শিক্ষক আব্দুস সোবহান ভালোবেসে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ঘটনার কি নির্মম ইতিহাস বিধিবাম এই শিক্ষকের প্রেমিকা ৭ম শ্রেণী ঐ ছাত্রীও অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়লে ঘটনার দিকবিদিক না পেয়ে দিশেহারা হয়ে বিয়ে করায় ৪র্থ স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি মিলে ফেন্সি আক্তারের। চার স্ত্রীর মধ্যে কাজের মেয়েকে তালাক প্রদান করেন ১ম স্ত্রী ও তার পরিবারের চাপে। তারপর তিন স্ত্রীকে সাথে নিয়ে একই সংসারে একই বাড়ীতে ভালো কাটছিলো সংসার জীবন তাদের। সুখের পাতে নুনের ছিটা দিতেই আবারও প্রেমের ফাঁদে আটকে ফেলেন দশম শ্রেণী ছাত্রী রোজিনা আক্তারকে (ছদ্ম নাম)। কামবাসনায় লিপ্ত শিক্ষকের জ্বালে আটকে যায় রোজিনাও। এখন রোজিনাও ৫ম স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ঐ শিক্ষকের কথা মতো চলছে বলে ধারনা করছে এলাকাবাসী।
এই ঘটনার সূত্র ধরে ছুটে যাই আমরা সংবাদকর্মীগণ। খুঁজে পাওয়া যায় রোজিনার পিত্রালয় বাপের বাড়ী। তাদের আত্মসম্মানে আঘাত লাগতে পারে মর্মে তাদের পরিচয় গোপন করেই ঘটনার বিবরণ তুলে ধরছি। আমরা ছুটে যাই ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ছাতনাই বালাপাড়া গ্রামে রোজিনার পিত্রালয়। সেখানে গিয়ে দেখা হয় রোজিনার ভাবির সাথে, কথা হলে তার ভাবি জানান, রোজিনারা দুই বোন এক ভাই। গরীব সংসারে রোজিনা লেখা পড়া করছে খুব কষ্ট করেই। সে ৮ম শ্রেণীতে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে তার শিক্ষক আব্দুস সোবহান’র বাড়ী থেকেই। সেখান থেকেই ঐ শিক্ষকের লোলুভ দৃষ্টি পরে রোজিনার উপর। জেএসসি’র পরীক্ষার পর থেকেই ঐ শিক্ষক কখনও মিষ্ট্,ি কখনও খাতা কলম কখনওবা বাজার সদাই নিয়ে নিয়োমিত আসা যাওয়া করত রোজিনার বাড়ীতে। এ সময় রোজিনার গরীব অসহায় পিতা ঐ শিক্ষকের হাতে তুলে দেন রোজিনাকে। আর বলেন আজ থেকে রোজিনা শুধু আমার মেয়ে না সে আপনারও ( শিক্ষক) মেয়ে। সে থেকে অবাধে যাওয়া আসা রোজিনাদের বাড়ীতে শিক্ষক আব্দুস সোবহানের। কিন্তু চরিত্রে কোন পরিবর্তন হয় নাই নারী লোভী ঐ শিক্ষকের। এলাকাবাসীরা জানান, এরই মধ্যে রোজিনা অন্ত:সত্তা হয়ে পরে। তারা অনুমান করে বলেন প্রায় ৫/৬ মাস অন্ত:সত্বা রোজিনা। এ ঘটনাকে ধাঁমাচাপা দিতেই একটি প্রভাবশালী মহলকে সাথে নিয়ে শুরু হয়েছে চরিত্রহীন শিক্ষকের দৌঁড়ঝাপ। এলাকাবাসীর অভিযোগ বিভিন্নভাবে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই পার পেয়ে যান ঐ শিক্ষক। এবারেও এই ঘটনার পরেই নিজের নামে কন্জুমান ঋন ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন শিক্ষক আব্দুস সোবহান। ঋনের টাকা দিয়েই রোজিনা ও তার পিতাসহ পুরো পরিবারটিকে সড়িয়ে রেখেছেন ঐ শিক্ষক ও তার পক্ষীয় লোকজন। এলাকাবাসীরা আরো জানান, বেশ কয়েকবার রোজিনার পেটের সন্তান নষ্ট করার নানা ব্যার্থ চেষ্টায় লিপ্ত ঐ শিক্ষকসহ প্রভাবশালী মহলটি। বর্তমানে লাপাত্তা রয়েছে অন্ত:সত্তা রোজিনা ও তার বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন। এ বিষয়ে রোজিনার বাবার মুঠোফোনে বারংবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উক্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা রশিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনায় আমরা স্কুলে একটি তিন সদস্যে’র তদন্ত টিম গঠন করেছি। সহকারী শিক্ষক শামীম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সুরেশ ও অহিদুলকে আমরা ঐ তদন্ত কমিটির সদস্য করে কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলেই অভিযুক্ত শিক্ষকের ব্রিুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক শামিম অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুস সোবহান’র কন্জুমান ঋনের গ্যারান্টার হয়েছেন। তাহলে কিভাবে তদন্ত নিরপেক্ষ হবে বিষয়টি এখন এলাকাবাসীর মধ্যে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। এ ব্যাপারে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষক হবেন আদর্শবান। শিক্ষক ও ছাত্রীর সম্পর্ক হবে পিতা ও মেয়ের মত। বিদ্যালয় নিরাপদ না হলে ছাত্রীদের লেখাপড়া বাঁধাগ্রস্ত হবে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় বলেন, ছাত্রীদের অভিযোগটি তদন্তের জন্য পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হযেছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্র্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।