প্রকাশিত: 24/03/2020
কভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে উপজিলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জীবাণু নাশকের ব্যাবহার ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আহবান জানিয়েছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
করোনা ভাইরাসের আক্রমনে যখন চীন, ইটালি, ভারত, ইরান ও সৌদিআরব সহ উন্নত ও শক্তিশালী দেশগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মোখিন হচ্ছে এবং দুঃখজনক ভাবে প্রতিদিন মানুষের নির্মম মৃত্যু হচ্ছে সেখানে আমাদের প্রিয় জন্মভুমি বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার প্রভাব পরবে এটাই স্বাভাবিক এমন ধারনা পোষণ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাগণ।
তারা জানিয়েছেন, দৈনন্দিন অফিসিয়াল দায়িত্ব থেকে প্রতিদিন কম পক্ষে এক থেকে দুইশত স্থানীয় ও বহিরাগত লোকজন তাদের অফিস ও কেন্দ্র গুলোতে বিভিন্ন কাজ নিয়ে আসেন যারা অনেকেই জীবাণু ও ভাইরাস নিয়ে ততটা চিন্তাশীল নই। প্রয়োজনীয় জীবাণু নাশক, সাবধানতা মূলক পদ্ধতি ও নির্দেশনা না থাকার কারনে আতঙ্ক ও ঝুঁকি নিয়ে জন সাধারণকে সার্ভিস দিতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় আর্থিক ও নির্দেশনা মূলক সহযোগিতা না থাকার কারনে নিজেরা তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না, এমনটা বলেছেন স্থানীয় পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মকর্তাগণ।
স্থানীয় সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে মিশ্র মতামত ও ধারনা পাওয়া যায়, তারা করোনা ভাইরাসের ভয়ে কাজকর্ম বাদ দিয়ে বাড়িতে থাকতে রাজি নন, তাছারা গ্রাম পর্যায়ে এখনো ইন্টারনেটের খুব ভাল যোগাযোগ ও সুবিধা না থাকার কারনে মানুষজনকে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। দৈনন্দিন কেনাকাটা ও করমসংস্থানের জন্য তাদেরকে এক এলাকা থেকে অন্যান্য এলাকায় যেতে হয়। তবে তারা সরকারের পক্ষথেকে ও স্থানীয় সরকারের থেকে প্রয়োজনীয় ও দরকারি সাহায্য পেলে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সব নিয়ম মানতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় একজন মুরব্বির মতামত এই যে, “আল্লাই খারাপ ও পাপি মাইনসেরে শাস্তি ও শিক্কা দেওয়ার লাগি এই গজব নাজিল করছেন, বালা মাইনসের করোনারে ভয় পাওয়ার দরকার নাই”। সাধারণ মানুষের মধ্যে এইরকম অনেকেই মনে করেন যে, “এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাব ও গজব এবং একটি সতর্ক বার্তা, সবার উচিৎ এই মহামারী থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল অপকর্ম বাদ দিয়ে ভাল কাজ করা"। করোনা থেকে নিজেদের বাঁচাতে বিদেশ থেকে ও শহর থেকে প্রচুর মানুষ গ্রামে চলে এসেছে ও তাদের অনেকে নিয়ম মেনে বাড়িতে অবস্থান করছেন কিন্তু অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাঁজারে ও রাস্তাঘাটে। তাই, গ্রাম পর্যায়ে মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এবং করোনা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে সবাইকে বাঁচাতে স্থানীয় সরকারকে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন স্থানীয় শিক্ষিত লোকজন।
সর্বশেষ তথ্য মতে, যথাযত মন্ত্রনালয় কর্তৃক বাংলাদেশে ২৬ মার্চ থেকে চৌঠা এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি, আধা-সরকারি সকল অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব, তবে জরুরী সেবা চালু রাখার কথা বলেছেন। আগামীকাল থেকে মাঠে নামছেন সেনাবাহিনী এবং উপজেলা অফিসারদের সাথে সমন্বয় করে কর্মপরিকল্পনা করবেন, সেই সাথে পর্যায়ক্রমে আঞ্চলিক বাজার, শপিংমল ও দোকান বন্ধের নির্দেশনা। প্রয়োজন হলে শহর বন্দর ও জেলা উপজেলা শহরকে লকডাউন করার কথা বলা আছে। এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত ইতি মধ্যে বাংলাদেশে সর্বমোট ৩৩ জন কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন, ৩ জন মারা গেছেন যার একজন শাস্তকর্মী বলা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে কাজ শেষে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে, কিছু করার আগে সাবান বা জীবাণুনাশক দিয়ে হাত পরিস্কার করতে হবে, কাপড় ও অন্যান্য ব্যাবহারের জিনিস ধুয়ে ফেলতে হবে বা পস্কার রাখতে হবে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরে অবস্থান করতে হবে।