দেশে জুলাই মাসে করোনায় আক্রান্ত ২ লাখ ছাড়াবে

প্রকাশিত: 17/06/2020

নিজস্ব প্রতিবেদন :

দেশে জুলাই মাসে করোনায় আক্রান্ত ২ লাখ ছাড়াবে

দেশে করোনা ভাইরাসে প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমণ ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। হাসপাতালে করোনার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা পাওয়ার সম্ভাবনাও সীমিত হয়ে আসছে। এখনই শয্যার অভাবে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন না। ফলে বাসাবাড়িতে এখনও অনেকে মৃত্যুবরণ করছেন।

এ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগছে, এ অবস্থা আর কতদিন চলবে। আর কতসংখ্যক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করবেন? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্যবিদরাও এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন। চলমান পরিস্থিতিতে করোনায় দেশে আরও কত মানুষ আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করতে পারেন, তা নিয়ে নতুন করে একটি পর্যালোচনা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির জনস্বাস্থ্যবিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির ওই পর্যালোচনায় দেখা যায়, সংক্রমণের চলমান ঊর্ধ্বমুখী ধারা আগামী জুলাই মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এই সময়ে আরও এক লাখ ২৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে গিয়ে সংক্রমণের মাত্রা নিম্নমুখী হতে শুরু করবে।

নতুন পূর্বাভাসের বিষয়ে জানতে চাইলে অধিদপ্তরের আট সদস্যের এই কমিটির প্রধান ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, দেশে বর্তমানে করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ চলছে। আগামী জুলাই মাসজুড়ে সংক্রমণের এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ে আরও এক লাখ ১৫ হাজারের মতো মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবেন।

ডা. শাহ মনির বলেন, এই পূর্বভাসের বাস্তবতা কিংবা কার্যকারিতা নির্ভর করবে পরিস্থিতির ওপর। কিন্তু আগের মতো পরিস্থিতি হলে এটি কাজে আসবে না। তখন সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটিই আরও বাড়বে। সুতরাং কার্যকর লকডাউন, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ঘরে অবস্থান করলেই কেবল আগস্টে গিয়ে সংক্রমণের মাত্রা নিম্নমুখী হবে। কিন্তু এগুলো মেনে না চললে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

আগের পূর্বাভাস কার্যকর হয়নি :এর আগে গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্যবিদদের দেওয়া পূর্বাভাসের কার্যকারিতা পাওয়া যায়নি। তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তারা দুই ধাপে পৃথক দুটি পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। প্রথমটিতে তারা ধারণা দিয়েছিলেন, ওই সময়ে সংক্রমণের যে মাত্রা ছিল সেই ধারা অব্যাহত থাকলে মে মাসে ৪৮ থেকে ৫০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হতে পারেন। দ্বিতীয় ধাপে তারা বলেছিলেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে সংক্রমণের মাত্রা বাড়বে এবং সেটি দ্বিগুণ হয়ে এক লাখে পৌঁছাতে পারে। একই সঙ্গে মৃত্যু হতে পারে আটশ' থেকে এক হাজার মানুষের।

আগের পূর্বাভাস কার্যকর না হওয়ার কারণ সম্পর্কে অধ্যাপক ডা. শাহ মনির বলেন, ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি ঘোষণার পর সব অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের ধারণা ছিল, ছুটির পর মানুষ ঘরে থাকবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ছুটি ঘোষণার পর হাজার হাজার মানুষ গ্রামে চলে যায়। মাঝখানে গার্মেন্টস মালিকরা ছুটি বাতিল করে শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনে। আবার তাদের ফেরত পাঠানো হয়। একই সঙ্গে ঈদের আগে সীমিত পরিসরে দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়। এমনকি ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামে আসা-যাওয়া করে। এরপর ৩১ মার্চ থেকে ছুটি বাতিল করা হয়। এই ঘটনাগুলোর সবই করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী করার জন্য দায়ী।

আরও পড়ুন

×