দিনানন্দ

প্রকাশিত: 21/07/2020

মিজানুর রহমান মিজান

দিনানন্দ

দিনানন্দ

মিজানুর রহমান মিজান

মহান রাববুল আলামিন এ জগতে আঠার হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি করে মানুষকেই সৃষ্টির সেরা ঘোষণা দিলেন।কারন মানুষের আছে জ্ঞান, বিবেক, বুদ্ধি, বিবেচনা,নীতি-নৈতিকতা, সুন্দর আচার-আচরণ ইত্যাদি। মানুষ নিজকে বড় জ্ঞানী ভাবতে থাকে। সাথে থাকে অহংবোধ, চতুরতা, হিংসা, বিদ্বেষ ও ফন্দি।আমরা লক্ষ্য করলে দেখতে পাই মানুষ শ্রেষ্টত্ব প্রাপ্তির পর ও কিছু সংখ্যক মানুষের আচার আচরণ ইত্যাদিতে ভিন্নতা। ফন্দি আটেঁ কি ভাবে অপরজনকে ঘায়েল করবে বা করতে পারে। এ দিক থেকে বিচার করলে মানুষকে আজিব এক চিজ ভাবলে মনে হয় অত্যুক্তি হবে না।আর চিজগুলিই সমাজ সামাজিকতায় বৈষম্য , অপরাধ প্রবণতা চড়িয়ে হাসে কুঠিল হাসি।আমাদের নিশ্চয়ই স্মরণ আছে অতি ধূর্ত শেয়ালের বিচারে লেজ কাটার পর থেকে সে ফন্দি আটঁতে থাকে কি ভাবে তার স্বজাতি সকল শেয়ালের লেজ কাটা যায়, অনেকটা এ রকমেরই। তাহলে আমরা চলি রোজ নামচার কিছু কাহিনী শুনতে যা মানুষকে কত বড় বিব্রতকর পরিবেশে ফেলে।এ মানুষ নামেরই অমানুষ পশুত্বের বোধে আচছন্ন কার্যকলাপে।

সেদিন দেখি আমার দু’বন্ধুর আলাপ আলোচনা চলছে। আমি কান পেতে শুনতে লাগলাম তাদের কথোপকথন। এক বন্ধু সিমেন্ট কিনতে যায় একটি দোকানে। তার বেশি পরিমাণের প্রয়োজন হলে ও এক সাথে নিতে পারতেছে না। তাই একটি দু’টি করে কেনার মনস্ত করে।এদিকে দোকান আর বন্ধুর বাড়ির দুরত্ব ও আহামরি কিছু নয়।বন্ধু দোকানীকে সিমেন্ট’র মুল্য পরিশোধার্তে বলে এটি তার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে। দোকানী শ্রমিক ডেকে বন্ধুর সম্মুখেই নির্ধারণ করা হয় পারিশ্রমিক বিশ টাকা।বন্ধুটি তত সম্মানী না হলে ও যেহেতু শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত সেক্ষেত্রে পাঠকেরাই সম্মানী নির্ধারণ করবেন। বিনাবাক্য ব্যয়ে বন্ধুটি পারিশ্রমিক পরিশোধ করে। এভাবে তিন চারটি সিমেন্ট নেয়ার পর অত্যন্ত ব্যস্ততার দরুণ একদিন বাজারে অবস্তানরত অপর এক বন্ধুকে ফোন করে বলে ঐ দোকানীর কাছ থেকে একটি সিমেন্ট পাঠিয়ে দিতে।ঐ বন্ধু ফোন কানে রেখেই যায় দোকানে। দোকানদার অদ্য সিমেন্টের মুল্য সঠিক রেখে পাঠানোর ক্ষেত্রে জবাব দেয় পূর্বের শ্রমিক সম্মুখে থাকাবস্তায়ই ,“ কে নেবে মাষ্টারের সিমেন্ট তিনি বিশ টাকা দেন”। একটা সিমেন্ট আজ নিতে পঞ্চাশ টাকা লাগবে। শ্রমিককে কথা বলার সুযোগই দেয়া হচেছ না। মাষ্টার সব কথোপকথন শুনছেন। যেহেতু ফোন সচল রয়েছে।দোকানী আবার বলছে চল্লিশ টাকা হলে হয়তো যেতে পারে। নতুবা এখন পারা যাচেছ না। কিন্তু বন্ধুর এখনই প্রয়োজন।বন্ধুটি পাঠানোর কথা না বলে নিজেই চলে আসে বাজারে। বিশ টাকাতেই সিমেন্ট যায় শিক্ষকের বাড়িতে। খানিক পরে শিক্ষক ব্যস্ততার অবসানে ঐ শ্রমিককে জিজ্ঞেস করে বিশ টাকায় সিমেন্ট নিয়ে তুমিই দিলে। কিন্তু আজ কেন ৫০/৪০ টাকা হাঁকালে। শ্রমিকের সোজা জবাব স্যার দোকানী আমাকে কোন কথা্ই বলতে দিচেছ না।তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল আমাকে সে মজুরী বিশ টাকাই দিবে। বাকি অতিরিক্ত যাই আদায় করতে পারবে সেটা তার মুনাফা।সম্মানিত পাঠককুল আপনারা লক্ষ্য করলে এখানে কয়েকটি বিষয় বেরিয়ে আসছে। “ কে নেবে মাষ্টারের সিমেন্ট তিনি তিনি বিশ টাকা দেন” এ উক্তির মাধ্যমে শিক্ষককে অপমানিত করার সামিল নয় কি?তিনি যদি অপমানের কোন কার্যকারন করতেন, তবেতো কথা ছিলো না? সরাসরি জিজ্ঞাসায় এ সে জবাব দেবার প্রচেষ্টা।মিথ্যা বলা। এক মিথ্যাকে লুকাতে শত মিথ্যার উপস্থাপন করতে হয়। সামান্য স্বার্থের কারনে একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে অপমান, অপমানিত করার হীন মানসিকতা।স্বার্থের সাথে সম্পর্কিত আছে লোভ নামক শব্দের যোগসাজস।পরশ্রীকাতরতা কম কিসে? সমাজে এক শ্রেণীর মানুষ আছে প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ভাল কাজ করার ক্ষমতা তার নেই সত্য। অপরে ভাল কাজ করলে তার খুঁত ধরার ধান্ধায়, অপপ্রচারে লিপ্ত। ওরাই সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে থাকে।অনেক যুবককে (সব নয়) পাবেন যে কোন প্রকার ফন্দি করে যদি আদায় করে নিতে পারে তবেই তার সার্থকতা , লাভ, অর্জন।কথা দিয়ে কথা সঠিক রাখার মানুষের পরিমাণ কমে আসছে। শুধুই চতুরতায় নিমজ্জিত। সুতরাং একজন সহজ , সরল পথে চলতে চাইলে থাকে চলতে প্রতিনিয়তই সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। নতুবা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে হোচট খেতে হবে প্রতারণার ফন্দি ফিকিরে।ওদের মন মগজে চতুরতাই স্থান করে নিয়েছে। ধরা খেয়ে ও দেখবেন স্বাভাবিক। লাজ লজ্জার বালাই নেই মোটেই। তবে ভাল মানুষ যে নেই তা বলছি না। আছে তবে ওরা কোনঠাসা, সংখ্যায় নগন্য। 

   ক’দিন পর আমার উল্লেখিত দু’বন্ধুই শুনি আরেকটি ঘটনার বিচার বিশ্লেষণ করছেন তাদের বোধ বোধকতায়।আমি এদিন ও তাদের কথোপকথন মন দিয়ে শুনার আকর্ষণে হলাম ব্যস্ত। শুনলাম আদ্যপান্থ। আমি লোভ সংবরণ করতে পারিনি পাঠক সমাজকে উপহার না দেবার। তাই আমার প্রচেষ্টা।শুনুন এ কাহিনীর পূর্ণাঙ্গতা।ঐ শিক্ষক বন্ধুই অপর একটি সময় কাজ করানোর প্রয়োজনীয়তায় ডাকেন একজন মেস্তরীকে।তিনির মজুরী নির্ধারিত হল চাহিত মাফিক তিন শত টাকা। এবার পালা তিনির সহযোগির। তা ও নির্ধারিত হল যথা নিয়মে দু’শত টাকা। সাত দিন কাজ করে একটু বিরতি।মানে দু’দিন কাজ করবেন না। যাক দু’দিন বিরতি। অত:পর আবার কাজ শুরু। জানিয়ে রাখা ভাল প্রথম দফার সাত দিনের পাওনা পরিশোধিত সাত দিন সমাপ্তির ভিতরই।দ্বিতীয় দফার তিন কর্ম দিবসে পারিশ্রমিক পরিশোধ করেন যথারীতি শিক্ষক পনের শত টাকা।এখন মেস্তরীর বক্তব্য হল আরো অতিরিক্ত দেড় শত টাকা প্রদানের সহযোগির।শিক্ষক মহাশয় চমকে উঠেন কারন কি?প্রতি উত্তর আসে সহযোগি দু’শত টাকা করে কাজ করতে অনিচছুক হেতু। শিক্ষক মহাশয় সুধালেন, “ ভাল কথা দু’শত টাকায় কাজ করবে না।কাজ আরম্ভ করার প্রাক্কালে অবহিত করা হল না কেন এবং তিনিকে জানানো উচিত ছিলো কি না”?সোজা জবাব জানাইনি আপনি দেবেন ভেবে। শিক্ষক বললেন, মজুরী সাব্যস্ত করে কাজ প্রদান করা হল এবং কাজ ও করলে। মধ্যখানে না জানিয়ে বৃদ্ধি তা অযৌক্তিক হিসেবে প্রদান সম্ভব নয়। শিক্ষকের কাজের ও এ দফার সমাপ্তি। বিনা বাক্য ব্যয়ে চলে যান সহযোগিসহ মেস্তরী। দু’দিন পর শিক্ষকের দোকানে আগমন মেস্তরীর সহযোগির বাকিতে দেড় শত টাকার মালামাল কিনতে।শিক্ষক মাল দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করছেন। হঠাৎ তিনির স্মরণ হওয়াতে ঐ ব্যক্তিকে সোজা বলে দেন বাকিতে মাল বিক্রি করেন না।নিশ্চুপ সহযোগির প্রস্থান। পাঠক এবার প্রশ্ন হলো আপনারা এ ঘটনাটিকে কি ভাবে নিচেছন বা দেখছেন? আজকাল কাজ করাতে গেলে প্রায়শ: ই এ জাতীয় ঘটনার উদ্রেক দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনেকের বেলা। যে কারনে গ্রামের মানুষ কৃষি কাজ বা অন্যান্য কাজ সহজে করাতে পারছেন না।তাই অনেকে কাজকর্ম করাতে হিমশীম খাচেছন প্রতি নিয়ত।বর্তমান সময় বা এ সময়ে এক শ্রেণীর মানুষের স্বভাবজাত হয়ে উঠছে কথা দিয়ে কথা সঠিক না রাখার। যে কারনে সত্য ও সততা যেন অনেকটা নির্বাসনে চলে যাচেছ।যেখানে সততাকে আকড়েঁ ধরার কথা। ঐ মেস্তরী কিন্তু আবার ঐ শিক্ষকের আরো কাজ করছেন পূর্বোক্ত নিয়মে ও পারিশ্রমিকে।অতিরিক্ত দেড় শত টাকার কথা আর কথনো উচচারিত হচেছ না বা চাচেছন না। সুতরাংএ কিসের মনোভাব বা কি জাতীয় আচরণ?বাকিতে মালামাল নিয়ে গেলেই শিক্ষককে অনেক কাঠখড় পোহাতে হত টাকা উদ্ধারে।

  এখানে আরেকটি কাহিনীর কথা বলতে চাই পাঠকের সাথে শেয়ার করার মানসিকতায়। এক দোকানীর কাছ থেকে একব্যক্তি বাকিতে খরচপাতি করেন নিয়মিত।একদিন এসে কিছু টাকা জমা দিলেন বাকির খাতার পরিমাণ কমানোর নিমিত্তে। পরদিনই সকালে ঐ ব্যক্তির ছেলে এসে আরো কিছু খরচ নিয়ে যায় বাকিতে। দোকানী তা খাতার হিসাবে যোগ করে রাখেন নিয়মমাফিক।বিকালে এসেছেন কর্তাব্যক্তি আরো কিছু মালামাল বাকিতেই নিতে। কথাচছলে দোকানী টাকার পরিমাণ বৃদ্ধির কথা জানালে তিনি রেগে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেন। এতই উত্তেজনা দোকানীকে যেন এ মুহুর্তেই এ পৃথিবী থেকে চির বিদায় নিতে হবে। বেশ কিছু কথাবার্তা অসৌজন্যমুলক বলে ফেলেছেন।কিন্তু দোকানীকে কোন কথা বলতেই দিচেছন না , শুনতে ও রাজি নন।অনেকক্ষণ পর যখন ঝড়ের বেগ একটু কমেছে। তখন অপর এক ব্যক্তি ঘটনা শুনে তিনিকে বললেন যে আপনার উচিত কর্ম হল জিজ্ঞাসা করা দোকানীকে কি ভাবে বৃদ্ধি পেল। এতক্ষণ পর দোকানী সুযোগ পেয়ে বললেন আপনার ছেলে সকালে মালামাল নিয়েছেন। তা শুনেই বাড়ির দিকে গমণ দ্রুত গতিতে কাউকে কোন কথা বলার সুযোগ আর না দিয়ে। যাক এখন দোকানী ও অপর ব্যক্তি নিরবে বসে আছেন কোন প্রকার বাক্যালাপ না করে। বাড়ি অতি নিকটে থাকায় পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে আসেন।সঙ্গে তিনির ছেলে।এসেই খুব উত্তেজিত হয়ে ছেলেকে জিজ্ঞেস করেন তুমি নাকি মালামাল নিয়েছ। ছেলেটি জবাব দেয়, হ্যা আমি মালামাল নিয়েছি।এখন সম্পূর্ণ রুপে মুখ বন্ধ। কোন প্রকার বাক্য মুখ থেকে বের না করে এখনকার প্রয়োজনীয় মালামাল নিতে উদ্যত।দোকানী মালামাল প্রদান করলেন সৌজন্যতায়। কিন্তু তিনি চলে যাচেছন কোন প্রকার শান্তনা বা সন্তুষ্টিমুলক কথা না বলে। তখন দোকানী উপস্থিত ব্যক্তিকে শুধালেন ঘটনার কি এভাবেই সমাপ্তি ভাল?তখন উপস্থিত ব্যক্তি খরিদারকে ডেকে বললেন , আপনার উচিত ছিল দোকানীকে সন্তুষ্টজনক কিছু কথাবার্তা বলা। তখন ঠনক নড়ে ক্রেতা বা খরিদারের। আর আপনি ছেলেকে নিয়ে এলেন দোকানে ! এ কথা তো আপনার ছেলেকে বাড়িতেই জিজ্ঞেস করে ঘটনার সমাপ্তি করতে পারতেন। দোকানে নিয়ে আসার তো কোন মানে হয় না। যদি ছেলে অস্বীকার করে বা করতো, তবে সাথে আনা বা দোকানে আনা ছিল যৌক্তিক। মানুষ বুদ্ধিমান সত্য , তবে অনেক ক্ষেত্রে বোকামীর চুডান্ত পরিচয় প্রদান করতে মোটেই বিবেকে বাঁধে| একজন মানুষ বা প্রতিটি মানুষ বাঁচে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য দেশ ও দশের জন্য। সর্বোপরি মানব জাতির জন্য। প্রতিটি ক্ষেত্রে যথার্থ অবদান ও ভুমিকা রাখতে সর্বাগ্রে প্রয়োজন মানুষের সুস্থ দেহ, সুস্থ মন। সুস্থ দেহের জন্য যেমন অনেকগুলি নিয়ম কানুন মেনে চলা প্রয়োজন বা মেনে চলতেই হয়, তদ্রুপ সুস্থ মননশীলতার জন্য ও অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলা একান্ত অপরিহার্য।এক্ষেত্রে অনেক নিয়মনীতি রয়েছে যার অস্থিত্ব আমরা পৃথক ভাবে বুঝে উঠতে পারি না ছোটখাট বিষয় হিসেবে।কিন্ত আমরা জানি, “ ছোট ছোট বালু কণা ……..মহাদেশ সাগর অতল”।ছোট হলে ও অনেক সময় বিরাট ভুমিকার অধিকারি। অথচ ছোট ছোট বিষয় এর ভুলে বা অবহেলায় আমাদের ফেলে দেয় অনেক যন্ত্রণার মধ্যে যা জীবন বিনষ্টের কারন হয়ে দাড়াতে পারে এবং তার উপরই নির্ভরশীল সকল কিছু। সুতরাং শুভ ভাবনা উদিতের কামনা রাখা মানুষ হিসেবে আমাদের প্রয়োজন।

    মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ বন্ধ হয়ে প্রতিটি পারিবারিক জীবন গড়ে উঠে।ক্রম ধারাবাহিকতায় সমাজ, দেশ ও জাতি।জীবনযাপনের জন্য দরকার প্রতিবেশী, বন্ধু, সুহৃদ স্বজ্জন প্রভৃতির।অপর দিকে বললে বলতে হয় ভ্রাতিত্বের বন্ধন, মৈত্রী, সাম্য, সৌহার্দ, সম্প্রীতি সর্বোপরি সম্পর্ক প্রভৃতি।এ সম্পর্ককে ধরে রেখে পথ চলা মসৃণ নয়।অনেক ধরণের ঝক্কি-ঝামেলা মোকাবেলা করেই সম্মুখ সমর যুদ্ধ চালিয়ে নিতে হয়। বন্ধন ঠিকিয়ে রাখতে সে স্বার্থে অনেকটি মেনে নিতে হয় বা ছাড় দেয়া ছাড়া উপায়ান্তর নেই। আবার অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া যায় না। আপনজন অল্প আঘাত দিলে বা পেলে তা অনেক সময় ছাড় বা ভুলে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে ছাড় দেয়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে ও পড়ে।অনেকের ক্ষেত্রে ভুলিতে চাই, ভুলে থাকা জরুরী্। তবু ও কোন প্রকার পুনরাবৃত্তি ঘটলেই “যতই ভুলে থাকতে চাই, ভুলে না তো মন” সদৃশ।এদিকে সমাজে বসবাস করতে হলে রাষ্ট্রের যেমন কিছু আইন কানুন, নিয়মনীতি আপনাকে মেনেই নিতে হয়, হবে। এক্ষেত্রে কোন প্রকার ছাড় দেয়া সম্ভব নয় রাষ্ট্রের ও জনগণের স্বার্থে।সমাজে বসবাস বা চলাফেরার ক্ষেত্রে ও কিছু নিয়ম নীতি অবশ্যই পালনীয় ও করণীয় রয়েছে।যেমন নীতি, নৈতিকতা, শিষ্টাচার, সামাজিকতা ইত্যাদি। মানুষকে মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন হতে হলে এ সকল অর্জন করতে হয়। কিন্তু অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে তা অর্জন করতে হয় না।সে পশুত্ব নিয়েই জন্মায়।মানুষ নামক প্রাণীর পরিপূর্ণ একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে নীতি, নৈতিকতা, শিষ্টাচার, সামাজিকতা, আদব-কায়দা, আচার আচরণ, ভদ্রতা, সুন্দর ও মার্জিত স্বভাব অর্জনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হয়।শিষ্টাচার ছাড়া কেহই সমাজে সমাদৃত বা মর্যাদাশীল মানুষ হওয়া সম্ভব নয় কস্মিন কালে ও।উদাহরণ দিলে দিতে হয়, যেমন কাঠাল ও বন কাঠাল একই নাম হলেও সামান্য এদিক সেদিক হওয়াতে দ্রব্যের ক্ষেত্রে পার্থক্য বিরাট ও বিশাল হয়ে যায়।কিন্তু নাম  শুনে তা অনেকের বেলায় বুঝতে কষ্ট হয়, হবেই।অনুরুপ মানুষ নামধারী হলেই মানুষ হওয়া সম্ভবপর নয়।সেক্ষেত্রে আমি যদি বলি, মানুষ ঘুমায়, পশু ও ঘুমায়।তবে পার্থক্য হচেছ মানুষ উন্নত মস্তিষ্ক পরিচালনায় আরামদায়ক ও সুন্দর লেপতোষকের নীচে ঘুমায়।আর পশু ঘুমাতে মাটি হলেই হলো। তার ঘুম হবে আরামদায়ক।মানুষ খাদ্য খায়। পশু ও খাদ্য খায়।মানুষ উন্নত মাথা খাটিয়ে চাল,ডাল,তরিতরকারী রান্না করে সুস্বাদু করে খায়।আর পশু ঘাস পেলেই খেতে পারে। মানুষ জীবন যাপন করে, পশু জীবন যাপন করে।মানুষ উন্নত মস্তিকে নিয়মনীতি, শৃংখলা, ভদ্রতা, মার্জিত আচার-আচরণ,নৈতিকতা, মানবিক মুল্যবোধ ইত্যাদি অর্জনের মাধ্যমে সুন্দর, পরিস্কার পরিচছন্ন সৌন্দর্যের প্রতিচছবি পূর্ণ জীবন যাপন করে।পশুর এত কিছুর প্রয়োজন নেই।আমরা গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে সহজে পেয়ে যাই মানুষের কৃতকর্মের জবাবদীহিতার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু পশুর ক্ষেত্রে তা মোটেই নেই।তাইতো মানুষ খুন করলে, অন্যায়, অবিচার করলে শাস্তি ভোগের ব্যবস্তা রয়েছে বা পেতে হয়। পশুর ক্ষেত্রে তার মোটেই এ বালাই নেই।যেমন বাঘ অন্যান্য পশুকে বধ করে খায়। খুন করে। জবাবদিহীতা নেই, শাস্তি পেতে হয় না। এ তার স্বাভাবিক জীবন আচরণ, বধ করে খাবার গ্রহণের অধিকার রুপে বর্তায়।পশু সত্য, মিথ্যা যাচাই করার ক্ষমতা রাখে না। তার তা প্রয়োজন পড়ে না। মানুষকে সত্য, মিথ্যা যাচাই বা তা প্রমাণ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বা অপরিহার্য। পশু স্বার্থপরতায় জড়িত হয় না।দরকার নেই।মানুষ স্বার্থপরতা নামক শব্দকে নিত্য সঙ্গি করে জীবন যাপন করে।মানুষ স্বজন-প্রীতি করে। জড়াতে চায়, জড়ায়।সত্যকে কখনো কখনো মিথ্যায় রুপান্তরিত করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালায়। তা হোক তার নিজের জন্য বা অন্যের জন্যই।মানুষই একমাত্র জীব, “ অল্প স্বার্থে মনুষত্ব বিকায়”।যেমন প্রখ্যাত ব্যক্তি আব্দুর রহমান সাদাব বলেছেন,“ সত্য নিরাভরণ।তার উপর রং চড়ালেই মিথ্যা হয়।রং রুপের বাসনা থাকলে আসল নকল বিচার করলে চলবে না”।সুতরাং মনুষ্য জীবন সুন্দর ও অর্থবহ করে তোলতে হলে অনেক কিছু অর্জন করতে হয়, সাধনা করতে হয়।এক্ষেত্রে নিজের দৃঢ় মনোবলের প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই থাকতে হবে। সে সঙ্গে তার মনের বাসনা, আকাংখা একান্ত জরুরী বিষয়।     

আরও পড়ুন

×