প্রকাশিত: 15/06/2021
কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর ড্রেজিং প্রকল্পে নদী থেকে উত্তোলন করা বালু নদীর বুকে রেখেই চলছিল ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী আশঙ্কা করছিল নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বালু নদীতেই চলে যাবে।
এতে বহু আকাঙ্ক্ষিত এ প্রকল্পের সুফল পাবে না এলাকাবাসী।শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসীর আশঙ্কা সত্যি হলো।
গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ি ঢল নেমে আসায় রামুর আতিক্কাবিবির ঘাট, হাইটুপি, ভুতপাড়া, গাউচ্ছাপাড়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নদী থেকে উত্তোলন করা বালুর সিংহভাগ নদীতেই তলিয়ে গেছে। এমনকি নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বালু তুলে আনা কঠিন হয়ে গেলে গত বৃহস্পতিবার রামুর হাইটুপি ও ভুতপাড়া অংশে রাতের আঁধারে স্কেভেটর দিয়ে বিপুল পরিমাণ বালু পানিতে মিশিয়ে দিয়েছে স্বয়ং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। উক্ত বিষয়ে গত ২৫ এপ্রিল কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নদীর বুকে মজুদ করা বালু পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে তুলে ফেলার নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রায় দেড় মাস হলেও সেই নির্দেশনা মানা হয়নি।
স্থানীয় ভুতপাড়ার বাসিন্দা ও একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত নুরুল আমিন বলেন, আমরা রীতিমতো অবাক হয়েছি। ড্রেজিং করে তোলা বালু রাতের আঁধারে স্কেভেটর দিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এসব দেখে মনে হচ্ছে এগুলো দেখার কেউ নেই।
কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রকল্প বাঁকখালী ড্রেজিং। কিন্তু এ রকম জনগুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পের কাজ চলছে নানা অনিয়মের মধ্যে দিয়ে। নদীর বালু নদীতে রেখে এ রকম অভিনব ড্রেজিং কার্যক্রম কোথাও দেখিনি। যোগ করেন- নুরুল আমিন।
ভুতপাড়ার বাসিন্দা মো. আলী (৫৩) বলেন, আমরা প্রতিদিন দেখি বিকেল ৫টা পর্যন্ত ড্রেজিংয়ের কাজ চালানো হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টার দিকে বের হলে দেখি স্কেভেটর দিয়ে বালু নদীতে ফেলা হচ্ছে। পরে বুঝতে পারলাম নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বালুগুলো তুলতে না পেরে পানিতে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বার স্থানীয় বাসিন্দা মো. বদরুল হুদা বলেন, বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কে বা কারা ড্রেজিং কাজ পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনের পর সন্ধ্যায় দেখি বালুগুলো পানিতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমরা বুঝে ওঠতে পারিনি। পরে মনে হয়েছে পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের এ কৌশল।
বাঁকখালী ড্রেজিং এখানকার মানুষের বহু প্রতীক্ষিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন। এ প্রকল্পের অনিয়ম বন্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন রামুর সভাপতি মাস্টার মো. আলম বলেন, আমরা সুজনের পক্ষ থেকে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেছি। নদীর বালু নদীতে রেখে অভিনব ড্রেজিংয়ের কাজ দেখে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। আমরা বার বার আশঙ্কা প্রকাশ করেছি এসব বালু পানি বাড়লেই নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাই রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে জানিয়েয়েছি। ইউএন আমাদের কথাগুলোর এক পয়সারও পাত্তা দেননি। পরে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবরও স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি