প্রকাশিত: 25/10/2019
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন’শ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি। হাট-বাজারগুলো দখল শুরু করেছে রবিশস্য। আগাম সবজি চাষ করে ভালো মূল্য পাওয়ায় কৃষিচাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
বাজারে আগাম সবধরণের শীতকালীন সবজি ওঠায় দাম কমতে শুরু করছে। বর্তমানে সীমিত পর্যায়ে মুলা, পালংশাক, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি উঠলেও তা দ্রুত তার সাথে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। দামও কিছুটা বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
তবে শাক-সবজি চাষে ভালো দাম পাওয়ায় মুখে হাসি ফোটেছে কৃষকদের। সরেজমিনে পৌর সবজি বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ভোরের আঁধার থেকে শুরু হয় কৃষকদের সবজি বাজারে তোলার উদ্দেশে রিকশা-ভ্যানে অথবা সাইকেলে বহণ করা।
খাঁচায় করে আনা সবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ফুলকপি, বাঁধাকপিম টমেটো, বরবট্টি, ঝিঙা, করলা, লাউ, পালংশাক, লালশাক, মুলা, শিম, লাউসহ বহুপ্রকার শীতকালীন শাক-সবজি। টাটকা শাক আর সবজির সমারোহ।
এখান থেকে বিভিন্ন প্রান্তর থেকে আসা খুচরা বিক্রেতাসহ স্থানীয় ক্রেতারা ভিড় জমান শাক-সবজি কেনার উদ্দেশে। পাইকারি আড়ৎগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা ফুলকপি/বাঁধাকপি ৩০ টাকা পিছ, মুলা ২০ টাকা কেজি, পেঁপে ১৫ টাকা কেজি,
লাউ ২০-৩০টাকা পিছ, ধনেপাতা ৮০-১০০ টাকা কেজি, শিম ৮০-৮৫ টাকা কেজি, টমেটো ১২০- ১৪০ টাকা কেজি, রববট্টি ৩৫-৪০ টাকা কেজি, গাজর ১১০ টাকা কেজি, ঢ়েঁড়স ২৫-৩০ টাকা কেজি, মিষ্টি লাউ ৪৫-৫৫ টাকা কেজি,
লাল শাক ৮টাকা বোঝা, পালং শাক ১০টাকা বোঝা মূল্যে বিক্রি করছেন। পৌর বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদ, আবু তাহের, বগা ও শাহাজামালের বলেন, বাজারে আগাম শীতকালীন শাক-সবজি ওঠায় স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ক্রেতারা
দামের তোয়াক্কা না করেই শাক-সবজিগুলো কেনাকাটা করছেন। দুইদিন আগে দাম কিছুটা চাড়াও থাকলেও এখন দাম কমতে শুরু করেছে। উপজেলার বাড়ি গ্রামের কৃষক আশরাফুল আলম, তমিজ উদ্দিন ও ভগিরত মহন্ত বলেন,
জমিতে শীতের আগাম শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে। আগাম শাক- সবজি বাজারে তুলতে পেরে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। তবে শাক-সবজির মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বাকবিতন্ডা হচ্ছে। পৌরবাসিন্দা মঞ্জুরুল হক,
আজিজুল সরকার, গৃহবধূ দুলালী বেগম, নাজনিমা পারভীন, প্রভাষক মোস্তাক আহম্মেদ ও রিকশা-ভ্যান চালক নূর ইসলাম বলেন, নতুন শাক-সবজি কার-না পছন্দ! সবাই চায় আগাম শাক-সবজির তৃষ্ণা মেটাতে। তবে বাজারে আগাম শাক-সবজির ওঠায় ইচ্ছেমতো দাম হাকাচ্ছেন
দোকানিরা। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার বলেন, এবার রবি মৌসুমে প্রায় সাড়ে তিন’শ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে প্রায় ৮.৫০ মেট্রিকটন শাক-সবজি ফলনের আশা করা যাচ্ছে।
বাজারে সীমিত পর্যায়ে শাক-সবজি উঠলেও সেপ্টেম্বরের শেষে সবধরনের শাক-সবজি পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এটিএম হামীম আশরাফ বলেন, এবছর প্রায় সাড়ে তিনশ হেক্টর ফসলি জমিতে শীতকালীন আগাম শাক-সবজি চাষ করা হয়েছে।
ফসলে যেনো কোনপ্রকার ক্ষতিকারক রাসায়নিক সার প্রয়োগ না করা হয় সে বিষয়ে উপজেলার প্রতিটি কৃষককেই অবগত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না থাকায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শানুযায়ী চাষ করায় ফলন অধিক বৃদ্ধি ও গুণাগত মান ভালো হয়েছে। ফলে আগাম শাক-সবজি বাজারে তোলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।