দত্তনগর খামারে গোপনে মজুদ রাখা ৩ কোটি টাকার ধান ও গমের বীজ জব্দ

দত্তনগর খামারে গোপনে মজুদ রাখা ৩ কোটি  টাকার ধান ও গমের বীজ জব্দ

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর কৃষি খামারের প্রায় ৩ কোটি টাকার ধান ও গম বীজ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে গোপনে মজুদের বিষয়টি অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ জন্য দুদকের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মজুদ রাখা ৩ কোটি টাকার ওই ধান ও গম বীজও দুদক জব্দ করেছে। দুদক যশোর সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুস সায়াদাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুদক কর্মকর্তারা বলেন, দত্তনগর কৃষি খামারে বিভিন্ন প্রকার উচ্চ ফলনশীল শষ্য চাষ করা হয় বীজ তৈরির জন্য। পরে উৎপাদিত এই ধান ও গম পাঠিয়ে দেয়া হয় যশোরের বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে।

কিন্তু দত্তনগর কৃষি খামারে উৎপাদিত ধান ও গমের প্রকৃত তথ্য গোপন করা হয়। অর্থাৎ যে পরিমাণ উৎপাদিত হয় কাগজে কলমে তার প্রকৃত চিত্র আড়াল করে কম দেখানো হয় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে মহেশপুরের

দত্তনগর কৃষি খামারে আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মজুদ রাখা এ ধরনের প্রায় ৩ কোটি টাকার ১২৯ মেট্রিক টন ধান বীজের বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। দুদক সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে,

গত সেপ্টেম্বরে এ ঘটনার জড়িত ৪ কর্মকর্তা দত্তনগর কৃষি খামারের গোকুলনগর ইউনিটের উপ-পরিচালক তপন কুমার সাহা, করিঞ্চা খামারের উপ- পরিচালক ইন্দ্রজিৎ চন্দ্র শীল, পাথিলা কৃষি খামারের

উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান তালুকদার এবং যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রর উপ-পরিচালক মো. আমিন উল্লাহকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। দুদক যশোর সমন্বিত যশোর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক

মো. নাজমুস সায়াদাত বলেন, খবর পেয়ে তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং প্রায় ৪ কোটি টাকার ধান ও গম বীজ জব্দ করেন। তিনি আরও বলেন, দত্তনগর কৃষি খামারের এই দুর্নীতির বিষয়টি তারা অনুসন্ধান করছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে দুদুকের এই কর্মকর্তা বলেন, এর আগে এ ধরনের দুর্নীতি হয়েছে কি-না এবং এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত তা তারা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে যশোর বীজ

প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে সদর দপ্তর হতে প্রাপ্ত কর্মসুচি বর্হিভুত ভাবে এক’শ ২৯ দশমিক ২২ মেট্রিক টন এস এল ৮ এইচ হাইব্রিড ধান বীজ মজুদ করা হয়। এ বীজের মধ্যে ৭৫ দশমিক ০৭৫ মেট্রিক টন গোকুলনগর খামার,

৩২ দশমিক ১১ মেট্রিক টন পাথিলা খামার ও ২২ দশমিক ০৩৫ মেট্রিক টন করিঞ্চা খামার থেকে কর্তৃপক্ষের কোন অনুমোদন না নিয়ে ও চালান ব্যাতিরেকে যশোর বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে পাঠানো ও মজুদ করা হয়।

এ খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর উল্লেখিত ৪ কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন

(বিএডিসি) সচিব আব্দুল লতিফ মোল্লা সাক্ষরিত এক পত্রে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচারণ, চুরি, আত্মসাৎ, তহবিল তছরুপ ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন

×