প্রকাশিত: 11/07/2020
রামুর চা বাগান হাসপাতাল পাড়া এলাকায় ক্রয় কৃত জমি ও বসতবাড়ি জবর দখলের চেষ্টায়, হামলা তিন ট্রাক মালামাল লুট, কলেজ ছাত্রীসহ আহত ৩ জন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ি চা বাগান হাসপাতাল পাড়া উপজেলা হাসপাতালের পশ্চিমে, একই এলাকার মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের পুত্র, আবু তাহের (প্রকাশ) টিপু , (৫৫) তার পুত্র মাইনুল কবীর সৌরভ (২৭) খরুলিয়া এলাকার মৃত ওবায়দুল করিম এর পুত্র জ্বালাল আহমদ (৪০) হাসপাতাল পাড়া এলাকার মৃত সুধাংশু বড়ুয়ার পুত্র, সুকুমার বড়ুয়া (৩৫) একই এলাকার মৃত মোহাম্মদ শফির পুত্র আবু তাহের ৪০ (বৈরাগী) সহ অর্ধশতাধিক লোকজন অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত হয়ে এলাকার সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে বসতবাড়ি, এবং জমি জবর দখল করার চেষ্টায়, কাঁটাতারের বেড়া কেটে তছনছ করে, প্রায় তিন ট্রাক মালামাল লুট করে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে।
ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী পরিবার হচ্ছে রামু চা বাগান হাসপাতাল পাড়া নামক, একই এলাকার মৃত রাজমোহন বড়ুয়ার পুত্র, ধর্মান্তর, নুরুল আলম, (৫৬) তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪৫) হামলাকারীদের হাতে আহত নুরুল আলমের কলেজ পড়ুয়া দুই মেয়ে নুসরাত জাহান মুন্নি (২২) ও সাথী সুলতানা (২০) বর্তমানে আহত দুই মেয়ে রামু উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শামসুল আলম, একরাম, জাহেদ, সহ অনেকে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, ৯ জুলাই ২০২০ ইংরেজি তারিখ সকাল ৯ টা থেকে প্রায় তিন ঘন্টা পর্যন্ত নিরীহ অসহায় ধর্মান্তর, নুরুল আলমের বসতভিটা জবর দখলের চেষ্টায়, ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর করে অনেক মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে, এ সময় হামলাকারীরা অস্ত্রশস্ত্রের ভয়ে সাধারণ লোকজন কেউ এগিয়ে আসতে সাহস করেনি।
অভিযুক্ত মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের পুত্র, আবু তাহের টিপু এবং ছেলে মাইনুল কবীর সৌরভ জানিয়েছেন তারা কোনো জমি দখল করেনি তারা তাদের নিজের প্রকৃত জমির মধ্যে কাজ করেছেন।
তখন নুরুল আলম তাদের কাজের মধ্যে বাধা প্রদান করেন এ বিষয়ে স্থানীয় রামু থানা পুলিশকে অবগত করা হলে বিষয়টি থানায় মীমাংসা করবেন বলেও জানান।
কি ভাবে ? ধর্মান্তর নুরুল আলম জমির মালিক হয়েছেন। বিগত ১৯৮১ সনে সুধাংশু বড়ুয়া হইতে, আলী হোসেন ও তার স্ত্রী দিলদার বেগম দুইজন যৌথভাবে মিলে ৫৮ শতকের অধিক জমি ক্রয় করেন, যার দলিল নম্বর ১১১৯, উক্ত দলিল হইতে দিলদার বেগম গত ২০০১ সনে ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মান্তর নুরুল আলম কে ২৪ শতক জমি বিক্রি করেন। দ্বিতীয়বার দিলদার বেগম এক দলিল থেকে একই এলাকার মৃত আব্দুল হাই মিস্ত্রির ছেলে মুবিন মিয়াকে ২০ শতক, জমি বিক্রি করেন।
শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মান্তর নুরুল আলম তার ক্রয় কৃত জমি ভোগ দখল করে আসছিল, এরই মধ্যে দিলদার বেগম প্রতারণা করার জন্য, দ্বিতীয়বার জমির আবারো খতিয়ান করেন, যার নাম্বার ৩৯৭ সৃজিত খতিয়ান। উক্ত ভুয়া জাল সৃজিত ৩৯৭ খতিয়ান থেকে দিলদার বেগম ২০০৫ সনে এলাকার নুর আহমদের পুত্র আলী আকবর কে ২০ শতক, জমি বিক্রি করেন।
উক্ত ৩৯৭ সৃজিত খতিয়ান থেকে ২০০৬ সনে দিলদার বেগম, আবারো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য খরুলিয়া এলাকার ওবায়দুল হাকিম, এর পুত্র, জালাল আহমেদ, এবং হাসপাতাল পাড়া এলাকার আবু তাহের টিপুর স্ত্রী, সেলিনা আফরোজা কে ৩২ শতক জমি বিক্রি করেন।
যে জমির জন্য ঘটনাটি ঘটেছে। উক্ত জমির মালিক দিলদার বেগম জমি ক্রেতাদেরকে দখল বুঝিয়ে না দিয়ে, নিজের দখলে ২০ শতক জমি রেখে দেন যাহা অবৈধ।
পরে ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মান্তর নুরুল আলম, একই এলাকার মৃত রজনী বড়ুয়ার ২ স্ত্রীর ৪ জন ওয়ারিশ এর কাছ থেকে, ১ম স্ত্রীর এক ছেলে, মৃত ভংকিং বড়ুয়া, ২য় স্ত্রীর তিন ছেলে, শ্যামাচরণ বড়ুয়া, বামাচরণ বড়ুয়া, ও হরিমোহন বড়ুয়া, তবে প্রয়াত, রজনী বড়ুয়ার প্রথম স্ত্রীর ছেলে ভংকিং বড়ুয়ার, কোন প্রকার ওয়ারিশ না থাকায় ও তার ভাই, শ্যামাচরণ বড়ুয়া, বামাচরণ বড়ুয়া, হরিমোহন বড়ুয়া, সম্পত্তির মালিক হয়ে যান।
উক্ত শ্যামাচরণ বড়ুয়া ও বামাচরণ বড়ুয়া লোকান্তরে, ছোট ভাই হরিমোহন বড়ুয়া জমির একক মালিক হয়ে যান। পরে হরিমোহন বড়ুয়া লুকান্তরে, ছেলে প্রদীপ বড়ুয়া জমির বর্তমান একমাত্র মালিক।
প্রদীপ বড়ুয়ার, কাছ থেকে থেকে, ২০০৪ সনে ৫৩/১৫ বন্দোবস্তী আর এস খতিয়ানের ৩ একর ৩৭ শতক জমি থেকে, ৮৬ শতক জমি ক্রয় করেন ভুক্তভোগী ধর্মান্তর নুরুল আলম। পক্ষান্তরে ক্রয় কৃত মালিকানা হিসেবে বৈধভাবে ধর্মান্তর নুরুল আলম, ৮৬+ ২৪ মোট ১ একর ১০ শতক জমির মালিক হন।
ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী ধর্মান্তর নুরুল আলম পূর্বে জমির মালিক দিলদার বেগম এর কাছ থেকে ২০০১ সনে ৬৪০ নং খতিয়ান থেকে ২৪ শতাংশ জমি ও, জমির মালিক প্রদীপ বড়ুয়া হইতে ২০০৪ সনে ১০৯২ দলিল থেকে ৮৬ শতক জমি নামজারীর আদেশের জন্য ভূমি অফিসে গেলে, সুধাংশু নামক এক ব্যক্তির নামে ২৬৭ বি এস খতিয়ান রেকর্ড হয়ে যায়।
তখন ধর্মান্তর নুরুল আলম আকাশ থেকে ছাদ যেন তার মাথায় ভেঙ্গে পড়ে। নিরুপায় হয়ে রামু বিজ্ঞ সহকারি জজ আদালতে ২০০৫ সনে ২৬ নং সংশোধনী মামলা দায়ের করেন অসহায় ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত ধর্মান্তর নুরুল আলম।
দীর্ঘ ১২ বছর নিয়মিত মামলা চালানোর পর ও যথাযথ প্রমাণ দাখিলের পর বিজ্ঞ আদালত, নুরুল আলমের পক্ষে জমির ডিগ্রি প্রদান করেন। উক্ত ডিগ্রীর বিরুদ্ধে সুধাংশুর পুত্র সোনা মদ্রসি বড়ুয়া, আপিল করেন, বর্তমানে মামলাটি জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সচেতন মহল এবং এলাকাবাসীরা, দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট, ঘটনাটি সরেজমিনে এসে তদন্ত করে প্রতারক চক্র ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে, ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।