প্রকাশিত: 07/10/2019
বহুদিন ধরে মাদক চাঁদাবাজি দূর্নীতি সম্পদ লুট ও ক্যাসিনো সহ বিভিন্ন ধরণের অবৈধ ব্যবসার সাথে নিজেকে জড়িয়ে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক, হয়েছেন অন্ধকার জগতের ডন ।
তার এই ব্যবসায় পরিচালনার মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেন রাজনীতি । ইসমাইল হোসেন সম্রাট ঢাকা মহা নগর যুবলীগ সভাপতি ছিলেন । ১৮ সেপ্টেম্বর র্যাবের ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে আত্মগোপনে যান সম্রাট ।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ইসমাইল হোসেন সম্রাট গোয়েন্দার নজরদারিতে ছিলেন । এর মধ্য তিনি দেশ ত্যাগ করার জন্য বহু চেষ্টায় করে ব্যর্থ হয়েছেন । গত ৬ তারিখে আটক হওয়ার পর ঢাকা মহা নগর যুবলীগ সভাপতি পদ থেকে বহিস্কার হয়েছেন সম্রাট ।
ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট রাজধানীর ক্লাব পাড়ায় জুয়ার আসর পরিচালনার মাধ্যমে আলোচনায় আসেন । জুয়া খেলায় আসক্তদের কাছে জুয়াড়ি সম্রাট বা ক্যাসিনো সম্রাট হিসাবে বেশ পরিচিত । জুয়া ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করা ছাড়াও সম্রাট ঢাকা মহা নগর দক্ষিন নিয়ন্ত্রণ করতেন ।
জানা গেছে সম্রাটের দেশের বাড়ি ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় । তবে তাদের দেশের বাড়িতে কেউ থাকে না । তার বাবা রাজধানী ঢাকায় কাজ করতেন । সেই করনে সম্রাট ছোট বেলায় থেকে ঢাকায় বড় হয়েছেন ।
সম্রাট ১৯৯০ সালে ঢাকায় আসেন আসার পর আস্তে আস্তে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন তিনি । পরে ছাত্রলীগের রাজনীতি ছেড়ে যুবলীগে যোগদান করেন সম্রাট । পরে ১৯৯৩ সালে ঢাকা মহা নগর দক্ষিনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদকের দায়ীত্ব পান ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ।
এর পর থেকে মতিঝিলের ক্লাব পাড়ায় আসা যাওয়া বাড়তে শুরু করে সম্রাটের । এরপর ২০০৩ সালে ঢাকা মহা নগর দক্ষিনের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পয়েছেন সম্রাট । এরপর থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ।
শুরু হয়ে গেছে তার ঢাকা মহা নগর দক্ষিন নিয়ন্ত্রণ করা । পদ উন্নতি হওয়ার সাথে বেড়ে যায় বদ উন্নতি আস্তে আস্তে সমাজের চোখে হয়ে উঠেন আতঙ্কের আরেক নাম । পরবর্তীতে ২০১২ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি ।
এর পর তার ক্ষমতা আরো শক্তিশালী করার জন্য সহ-সভাপতি করে নেন আনামুল হক আরমানকে । সভাপতি হওয়ার আগে তার কোন অফিস না থাকায় সাংগঠনিক কাজের জন্য কাকরাইলে একটি বিশাল অফিস নিয়ে নেয় ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ।
পরে জানা গেছে ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত হওয়ার পর সেখান থেকেই ক্যাসিনো নিয়ন্ত্রণ করতেন সম্রাট । সম্রাট দলের বড় নেতাদের চোখে ভালো থাকার জন্য আওয়ামী লীগের কোন অনুষ্ঠান হলে সবচেয়ে বেশি লোক ব্যবস্থা করে দিতেন ।
তিনি একেক সময় একেক রকম জিনিসের মাধ্যমে বড় নেতাদের মন জয় করতেন । আর এই কারনে যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী তাকে শ্রেষ্ঠ সংগঠক হিসাবে গোষনা করেন ।
তার পরিবারের কাছ থেকে জানা যায় সম্রাটের একটাই নেশা জুয়া খেলা । জুয়া খেলার জন্য সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে বড় জুয়ার আসর মেরিনা বে স্যান্ডস নামের এই ক্যাসিনোতে অংশ গ্রহন করতেন ।
সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসার দুই বিশ্বস্থ সহযোগি ঢাকা মহা নগর দক্ষিন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মামিনুল হক সাঈদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। তার এই বিশ্বস্থ সহযোগি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ক্যাসিনো ও মাদক মামলায় বর্তমানে জেলে আছেন ।