একবছর পর ফুলবাড়ীর আলোচিত ফেলানীর হত্যাকারী আটক

একবছর পর ফুলবাড়ীর আলোচিত ফেলানীর হত্যাকারী আটক

প্রায় একবছর পর প্রযুক্তির মাধ্যমে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর গৃহবধূ বাবলী খাতুন ফেলানী (২৭) হত্যা ঘটনার উদ্ঘাটন করে মুল আসামী আবুল হোসেনকে (৪২) আটক করেছে থানা পুলিশ। গত সোমবার (৫ অক্টোবর) শশুর বাড়ী থেকে আবুল হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ।

আবুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার খালাসপীর মোনাইল গ্রামের মৃত আজাহার মন্ডল ওরফে আজাহার বাঘার ছেলে এবং ফুলবাড়ী পৌরএলাকার তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত সোবাহান আলীর জামাতা। তিনি দীর্ঘদিন থেকে শশুরবাড়ীতে থেকেই সংসার করতেন। আবুল হোসেন পেশায় ভ্রাম্যমান মুরগী বিক্রেতা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ী পৌরসভার ৭নং নয়াপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আশিকুর রহমানের স্ত্রী বাবলী খাতুন ফেলানী। ফেলানী ২০১৯ সালে ১ নভেম্বর বাড়ীর পাশের একটি জমিতে ছাগল চড়াতে গিয়ে সন্ধ্যা নেমে এলেও বাড়িতে না ফেরায় ফেলানীকে খোঁজাখোঁজি শুরু করেন বাড়ির লোকজন।

খোঁজাখোঁজির একপর্যায়ে জমির আইলে ফেলানীকে দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে, সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ইউডি মামলা দিয়ে ময়নাতদন্তে পাঠায় ফুলবাড়ী থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হত্যা জানা গেলে চলতি বছরের ১৩ আগষ্ট ফুলবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন ফেলানীর মা মোসলেমা বেগম।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) দেবী কান্ত বলেন, মামলা দায়েরের পর প্রযুক্তির মাধ্যমে ফেলানী ব্যবহৃত মুঠোফোনের সূত্র ধরে মুঠোফোনটি উদ্ধারসহ আবুল হোসেনকে তার শশুরবাড়ী থেকে গত সোমবার (৫ অক্টোবর) আটক করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মনিরুজ্জামানের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেন আবুল হোসেন।

স্বীকারোক্তিতে আবুল হোসেন জানিয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে আবুল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ফেলানীর। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নয়াপাড়াস্থ আবাদি জমিতে ফেলানীর সাথে প্রায় মেলামেশা
এবং শারীরিক সম্পর্ক করতো আবুল হোসেন। গত ২০১৯ সালের ১ নভেম্বর বিকালে ফেলানী আবুল হোসেনকে পালিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাদের মধ্যে বাকবিতান্ড এবং হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে আবুল হোসেন ফেলানীর গলা চেপে ধরলে ফেলানী অচেতন হয়ে পড়ে।

পরে ফেলানীর মুখে মাটিচাপা দিয়ে গভীর নলক‚পের পাকা ড্রেনের মধ্যে ফেলে পালিয়ে যায় আবুল হোসেন। পরে আবুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার করে ফুলবাড়ীর গৃহবধূ বাবলী খাতুন ফেলানী হত্যাকান্ডের মুল আসামী আবুল হোসেনকে তার শশুর বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ। পরে আবুল হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ফেলানী হত্যার দায় স্বীর করে সে। 

আরও পড়ুন

×