৮ মাসেও উদ্ধার হয়নি গাড়ি : বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব সভাপতির আবেগঘন স্ট্যাটাস

প্রকাশিত: 10/10/2019

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি

৮ মাসেও উদ্ধার হয়নি গাড়ি : বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব সভাপতির আবেগঘন স্ট্যাটাস

চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথেরগাঁও গ্রামে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সভাপতির বাড়ির বসত ঘরের কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙে দুটি মোটরসাইকেল (ডিসকভার ১২৫ সিসি, রেজিঃ নং- সিলেট হ-১৪ ৪৫৪১ ও হিরো ১০০ সিসি, রেজিঃ নং- সিলেট হ-১৪ ৭৭১৮) চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। এঘটনার পরদিন বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতানা আসামী করে বিশ্বনাথ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা-২০)। মামলার প্রেক্ষিতে ওই দিন বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম’র নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে সন্দেহজনক সাজু, লিটন. রজন ও দিলিপ নামের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে দিলিপের বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলায় এবং অন্যরা বিশ্বনাথ উপজেলার জানাইয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাদেরকে গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে তারা স্বীকার করে বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাড়ি থেকে ওই মোটরসাইকেল তারাই চুরি করেছে। এরপর গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি প্রদান করে। কিন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার ও ঘটনার রহস্য ঘটঘাটনের দীর্ঘ প্রায় ৮মাস পেরিয়ে গেলেও চুরি হওয়া ওই দুটি মোটরসাইকেল এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, গাড়ি উদ্ধার করতে এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, গত ৭ আগস্ট দিবাগত রাতে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ সুমনের বাড়ি থেকে একই ভাবে তার মোটরসাইকেলটিও চুরি হয়। ঘটনার প্রায় ২ মাসের মাথায় গত ৬ অক্টোবর আন্তঃজেলা মোটর সাইকেল চোর চক্রের সদস্য জেলা ছাত্রলীগ নেতা আনিসুল হক চৌধুরী নাঈম ও তার সহযোগী মুহিবুর রহমান মুহিবকে গ্রেফতার ও চুরি হওয়ার মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে সক্ষম হয় থানা পুলিশ। এই গাড়ি উদ্ধারের পরই বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন তার ফেসবুক আইডিতে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। তার এ স্ট্যাটাস নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। পাঠকদের জন্য হুবহু সেই স্ট্যাটাসটি এখানে তুলে ধরা হলে- ‘ছবিটি একটু মিলিয়ে দেখুন। চুরের ছবি আর নেতাদের নামের বিলবোর্ড একটু খেয়াল করে দেখুন। বিশ্বনাথ উপজেলা আ’লীগের সাংঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ সুমনের মোটরসাইকেল চোর। ভাগ্যবান সুমনের গাড়ীসহ চোর আটক হয়েছে। কিন্ত আমার মোটররসাইকেল চুরি হওয়ার পর ৩ জনকে গ্রেফতার করা হলো। তারা চুরি করেছে বলে স্বীকারোক্তিও দিলো। কিন্ত আজ পর্যন্ত আমার চুরি হওয়া গাড়ীর তদন্ত কর্মকর্তা এর অগ্রগতির বিষয়ে কিছু জানালেন না। আমাকে একটা ফোন দিয়ে সৌজন্যবোধটাও দেখালেন না। এসপি (পুলিশ সুপার) সাহেবও বিষয়টি জানেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে তদন্ত কর্মকর্তাকে কড়া নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা বেচারা! হঠাৎ মাঝে মধ্যে দেখা হলে সুন্দর করে একটি হাসি দেন। আমিও তার হাসির মর্ম বুঝি, হাসি দেই। আশ্বাসে আশ্বাসে নিঃশ্বাস শেষ হয়ে যাবে মাগার তদন্তের চেষ্টা না থাকলে কি আর….। আমি আর কাউকে আমার চুরি হওয়া গাড়ি উদ্ধারের বিষয়ে এখন আর কিছুই বলিনা। বলা যায় এ বিষয় তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি। এখন আর বলতে লজ্জা হয়। কিংবা বলে কি লাভ ? আমি বুঝতে পেরেছি। চোর তো চোরই। চোরের চেয়ে তার আশ্রয় দাতা প্রশ্রয় দাতাদের বিচার ইহজনম পরজনমে হবে ইনশাঅল্লাহ। শেষ বিচারের দিনে চোরকে তার গডফাদার আর কুশিলব’সহ আল্লাহর দরবারে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। সবুর বা ধৈর্য্যই এখন আমার একমাত্র অবলম্ভন। ভাগ্যবান আ’লীগ নেতা আব্দুল আজিজ সুমনকে তার চুরি হওয়া গাড়ী ফিরে পাওয়ায় অভিবাদন জানাই। সরকারী দলের নেতার গাড়ী চুরি করে কিভাবে পার পেয়ে যাবে চোর মহাশয়রা (!) গাড়ী, শখের জিনিস বলে কথা। বিঃদ্রঃ- ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ রাতে আমার বাড়ীর কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে ২টি গাড়ী চুরি হয়। আর গাড়ী চুরির পর এটিই আমার প্রথম ফেবু ষ্টেটাস। কারো প্রতি এ বিষয়ে আমার অভিযোগ, বিরাগ নেই, অনুরাগ আর ভালবাসা আছে। তৎকালীন ওসি প্রিয় মানুষ শামসুদ্দোহা পিপিএম গাড়ী উদ্ধারের ব্যাপারে যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন সে জন্যে তার প্রতি হৃদয় অলিন্দ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশ্বনাথের আমার সকল সতীর্থ, সহকর্মী সাংবাদিক সমাজ, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার নেই।

আরও পড়ুন

×