প্রকাশিত: 12/10/2020
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আসন্ন দূর্গাপুজায় মন্দিরে দায়িত্ব পালন করতে আনসার সদস্যদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও আনসার সদস্যদের প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট জালিয়াতি, টাকার মাধ্যমে ডিউটি প্রদান ও নারী সদস্যদের অফিসে ডেকে এনে আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে কথিত আছে।
সরকারি নির্দেশনা না থাকলেও অফিসের প্রয়োজনে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান কালীগঞ্জ উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা আসাদুর রহমান লিটন। কালীগঞ্জে এবার ৮৪টি পূজামন্ডপে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতি মন্দিরে ৬ জন করে নারী ও পুরুষ সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন বলেও জানান তিনি।
আসন্ন দূর্গাপূজায় ৮৪টি পূজামন্ডপে ডিউটি দেওয়ার নাম করে আনসার সদস্যদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৩০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে নারী সদস্যদের বিভিন্ন ওয়ার্ডের দলনেত্রী বানানো হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়নে বাড়ি থাকা সত্তে¡ও পৌরসভার ওয়ার্ড দলনেত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আনসার-ভিডিপি অফিস কালীগঞ্জ নামে ফেসবুক আইডি খুলে ম্যাসেঞ্জারে নারী সদস্যদের বিভিন্ন আপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই আইডি উপজেলা অফিসার নিজেই পরিচালনা করেন বলে স্বীকার করেছেন। এদিকে নিজ অফিসের এক ওয়ার্ডের দলনেত্রীকে জড়িয়ে ধরে তোলা ছবি ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
এছাড়াও অনেক আনসার সদস্যকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কু-প্রস্তাব দেওয়ার স্ক্রীনশট এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। আরো জানা গেছে, স্ব-স্ব এলাকার বাসিন্দারা নিজ নিজ ইউনিয়ন অথবা ওয়ার্ডেও দলনেত্রী হতে পারবেন। কিন্তু এক্ষেত্রে কোন নির্দেশনায় মানা হয়নি। রাবেয়া খাতুন নামে এক নারী আনসার সদস্যের বাড়ি উপজেলা রাখালগাছি ইউনিয়নে কিন্তু তাকে পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের দলনেত্রী বানানো হয়েছে।
১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা চম্পা খাতুনকে শ্রীরামপুর এলাকার দলনেত্রী, বলিদাপাড়া এলাকার সাবিনা ইয়াসমিনকে আড়পাড়া এলাকার দলনেত্রী বানানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ওয়ার্ড দলনেত্রী জানান, আনসার-ভিডিপি অফিস কালীগঞ্জ এই আইডি আসাদুর স্যার নিজেই পরিচালনা করেন। বিভিন্ন সময় তিনি কুপ্রস্তাব দেন। উপায় না পেয়ে আপনাদের কাছে এসেছি। তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হলে আনসারে থাকা হবে না।
এছাড়াও পুজোর ডিউটি পেতে ৩০০ করে টাকা দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা আসাদুর রহমান বলেন, অফিসের প্রয়োজনে মাথাপিছু ৩০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। নারীদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে বলেন, আনসার-ভিডিপি অফিস কালীগঞ্জ নামে একটি ফেসবুক আইডি আমি নিজেই চালায়। আর কারও সাথে আমার জড়িয়ে ধরে কোন ছবি নেই।
ঝিনাইদহ জেলা কমান্ড্যান্ট সনজয় কুমার সাহা বলেন, ডিউটি নিতে টাকা দিতে হবে এমন কোন নির্দেশনা নাই। যারা টাকা দিচ্ছেন বা নিচ্ছেন এটা তাদের ব্যাপার। টাকা নেওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এক এলাকার বাসিন্দা অন্য এলাকার দলনেত্রী বা দলনেতা হতে পারবেন না।