প্রকাশিত: 20/10/2020
সিলেটে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান হত্যা মামলায় বরখাস্তকৃত কনস্টেবল টিটু চন্দ্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মঙ্গলবার দুপুরে তাকে এসএমপি রিজার্ভ অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার খালেদুজ্জামান জানান, আজ টিটু চন্দ্রকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
গত ১০ অক্টোবর রাতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের তদন্তে গত ১১ অক্টোবর এসএমপির উপকমিশনার (ডিসি-উত্তর) আজবাহার আলী শেখের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। বন্দরবাজার ফাঁড়িতেই পুলিশের নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, নির্যাতনে সরাসরি অংশগ্রহণের জন্য বন্দর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন কনস্টেবল তৌহিদ মিয়া, টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আর রায়হানকে ধরে ফাঁড়িতে আনার জন্য বন্দরবাজার ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয় এএসআই আশেক এলাহী, কুতুব আলী, কনস্টেবল সজীব হোসেনকে।
এর মধ্যে এসআই আকবর হোসেন পালিয়ে গেলেও বাকি ছয়জন পুলিশলাইনে কড়া নিরাপত্তা হেফাজতে ছিল। তাদের মধ্যে থেকে বরখাস্তকৃত কনস্টেবল টিটু চন্দকে আজ গ্রেফতার করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই।
এর আগে সোমবার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে সেদিন রাতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশ সদস্যের ১৬৪ ধারায় সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে টাকার জন্য অমানবিক নির্যাতন করা হয় নগরীর নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রায়হানকে (৩৩)। ভোরে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন নিহত রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। সেদিন বিকালে ডাক্তারের চেম্বারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কর্মরত তার স্বামী বসা থেকে বের হয়ে আসে।
রাত ১০টা থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। রাত ৪টা ৩৩ মিনিটে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে রায়হান তার মাকে কল করে কথা বলেন। ওই কলে রায়হান কাঁদতে কাঁদতে জানান যে, তাকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখেছে এবং টাকা না দিলে ছাড়বে না।
এর পরই ভোর সাড়ে ৫টায় চার হাজার টাকা নিয়ে রায়হানের চাচা হাবিব উল্লাহ ফাঁড়িতে গেলে পুলিশ তাকে ১০টার সময় ১০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেন। তিনি ১০টায় টাকা নিয়ে গেলে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে যেতে বলা হয়।
হাসপাতালে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, ৭টা ৪০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে পুলিশ ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে।
মামলায় নিহতের স্ত্রী উল্লেখ করেন, বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।