প্রকাশিত: 25/11/2019
পণ্য চালান খালাসে আগের চেয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বেড়েছে কাস্টমে। শুল্ক ফাঁকি বন্ধে কড়াকড়ি আরোপ করায় কিছু ব্যবসায়ী এ বন্দর দিয়ে আমদানি কমিয়েছেন।
আর একারনে রাজস্ব আদায়ে লক্ষমাত্রা পুরন করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে মনে করেন বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে দিন দিনই রাজস্ব কমছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
৯০ একর জমির ওপর বেনাপোল স্থলবন্দরের অবস্থান। ৫৯ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এ বন্দরে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ পণ্য উঠানামা করে। ৩০টি সাধারণ ও দুটি রাসায়নিক ওয়্যারহাউস (গুদাম),
সাতটি ওপেন ইয়ার্ড, একটি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, দুটি ট্রাক টার্মিনাল, একটি রপ্তানি টার্মিনাল থাকলেও বর্তমানে এডিবির অর্থায়নে আটটি ওয়্যারহাউস ভেঙে বড় দুটি ইয়ার্ড নির্মাণ হয়েছে।
তারপরও বন্দরে প্রচ- যানজট, পণ্যাগারসহ অবকাঠামো সংকট, অব্যবহৃত ওয়্যারহাউস ও শেড, কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতির তীব্র সংকট আর বন্দর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা সমস্যার জটকে তীব্র করে তুলেছে।
আমদানিকারকরা বন্দর থেকে সময়মতো তাদের পণ্য খালাস করতে না পারায় বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ পণ্যজট। জায়গার অভাবে পণ্যবোঝাই ট্রাক বন্দরের অভ্যন্তরে দাঁড়িয়ে থাকছে দিনের পর দিন।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে ৪০০ ট্রাক আমদানি পণ্য আসে বেনাপোল বন্দরে এবং বেনাপোল বন্দর থেকে ২৩০ ট্রাক পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।
কাস্টমসের কার্যক্রম অটোমেটেড হলেও বন্দরের ম্যানুয়াল পদ্ধতির কারণে সেবাগ্রহীতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৫৩ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়েছে
বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, রাজস্ব বেশি আসে এমন পণ্য চালান কম আমদানি হচ্ছে। এতে রাজস্ব কিছুটা ঘাটতি হয়েছে।
শুল্ক ফাঁকির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বৈধ সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে আন্তরিক হয়ে কাজ করেছি। দুই বছর ধরে কাস্টম হাউস বেনাপোলে কাজ করেছি।
সম্প্রতি বদলি হয়ে ঢাকায় যাচ্ছি। যোগ দেওয়ার পরপরই বেনাপোল উন্নয়নে বাইপাস সড়ক চালু ও এ সড়ক দিয়ে ৬৫ শতাংশ পণ্য খালাস, বেনাপোলের মূল সড়ক যানজটমুক্তকরণ,
ভারতে বেশি গাড়ি দেওয়া-নেওয়ার লক্ষ্যে লিংক রোড ১ ও ২ চালুকরণ, লিংক রোড দিয়ে পণ্য গমনাগমন ৯টি থেকে ৩৬টিতে বৃদ্ধি, বেনাপাস সফটওয়্যার উদ্ভাবন, অনলাইন নিলামের প্রস্তুতি সম্পন্ন,
কেমিক্যাল টেস্টের জন্য রমন স্পেক্ট্রোমিটার স্থাপন, মেনিফেস্টে ‘ডি’ চিহ্নিত চালান দ্রুত শুল্কায়ন, শুল্কায়ন গ্রুপ ভেঙে ছয়টি থেকে ৯টিতে উন্নীতকরণ, শুল্কায়ন সময় হ্রাসে ফ্লোল্ডার সিস্টেম চালু,
শুল্কায়নের গতি মনিটরিং, গ্রিন আমদানিকারকের চালান ‘উ’ মার্ক করে দিনে দিনে খালাসের পদক্ষেপ, আনস্টাফিং শাখা গঠনসহ চোরাচালান ও শুল্ক ফাঁকি উদ্ঘাটনে সোর্স নিয়োগ করা হয়েছে।