প্রকাশিত: 15/10/2020
যুগে যুগে নারীদের চরিত্র বদলিয়েছে। নারী সময়ের সাথে মিল রেখে নিজের চরিত্র করছে বৈচিত্রময়। বিশ্বকবি শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নারীদেরকে কীভাবে উপস্থাপন করতেন? কেমন ছিল তার সময়কার বাঙালি নারীদের অবস্থা? এককালের সমাজ ব্যবস্থায় নারীদের অবস্থান যে কতটা শোচনীয় ছিল সেটা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তার নববধূ ছোট গল্পে। তৎকালীন নববধূদের প্রতি সেসময়কার সমাজের কেমন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, কেমন ধরনের আচরণ বিদ্যমান ছিল সেটাও সুন্দরভাবে ফুঁটে উঠেছে গল্পে। রবীন্দ্রনাথ পড়তে গিয়ে নারীর মধ্যে প্রথমেই যার নাম আসে সে হচ্ছে 'হৈমন্তী'। একজন রূপবতী ও গুণী তরুণীর নববধূ হয়ে আসার গল্প। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির মানুষের অবহেলায় বিবর্ণ ফুলের মতো ঝরে যায় সে। বাংলা থেকে দূরে পাহাড়ের দেশে নিজের বাবার কাছে মানুষ সে। অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী হৈমন্তী যখন বিয়ে করে স্বামীর ঘরে যায় তখন থেকেই তার প্রতি একধরনের অবহেলা এবং অমনোযোগিতা প্রকাশ করে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। নববধূ নতুন সংসারে যাওয়ার সময় নিশ্চয় এমনটি আশা করে যায় না। তার স্বামীও এ ব্যাপারে কোনো উচ্চবাচ্য করে না এবং তার পক্ষে কথা বলে না। হয়তো সে বুঝেছিল তার স্ত্রীর প্রতি স্বাভাবিক ব্যবহার করা হচ্ছে না কিন্তু সেটি নিয়ে সে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়নি। হৈমন্তীও নিরবে সব সহ্য করে গেছে। তাদের বিয়ের সময় যৌতুক নিয়ে কোনো কথা দুই পরিবারের মধ্যে হয়নি। কিন্তু হৈমন্তীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মনে করেছিল বাবার একমাত্র মেয়ে হওয়াতে তাদের ছেলে হয়তো প্রচুর পয়সার মালিক হবে। শ্বশুরের সম্পত্তির ভার তাদের ছেলের হাতে এসেই পড়বে। কিন্তু যখন তারা জানতে পারে যে বাস্তবতা আদৌ এমনটি নয় তখন থেকে হৈমন্তীর সাথে তাদের এমন ব্যবহার শুরু হয়। হৈমন্তীর স্বামী যে তাকে প্রচুর ভালোবাসতো সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তখনকার সমাজে সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুরুষরা নিজেদের পরিবারের বড়দের উপর কোনো কথা বলতে পারতো না, তাদের সেই অধিকারটুকু ছিল না। সামনে গুরুজনরা অন্যায় কিছু করলেও সেটা সঠিক বলে মেনে নেয়া হতো। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার দৃঢ়তা সেসময় সমাজের পুরুষদের ছিল না। নিজের স্বামীর থেকেও কোনো সমর্থন না পেয়ে হৈমন্তী অকালেই ঝরে যায়।
রবীন্দ্রনাথের আরেকটি চরিত্র নিরুপমা। যৌতুকের কারণে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করে 'দেনাপাওনার' এই নারী চরিত্র। একজন মেয়ে কম বয়সে যখন নতুন বউ হয়ে আসে তখন ছেলের বাড়ির লোকেদের অবহেলা, তিরস্কার, অপমান বারবার রবীন্দ্রগল্পে চলে এসছে। নিরুপমাও একইরকম বলির শিকার। শেষ পর্যন্ত অবহেলা, অমর্যাদার কারণেই তার মৃত্যু হয় কিন্তু সে নিজের সম্মানটুকু ঠিকই বাঁচিয়ে রেখে মৃত্যুর স্বাদ নেয়।
অত্যাচার চরম পর্যায়ে পৌঁছনোর পরেও সে তার বাবাকে টাকা দিতে দেয়নি, শ্বশুরবাড়ির প্রতি মাথানত করতে দেয়নি। সে তার বাবাকে বলেছিল যে তার একটা সম্মান আছে, আত্মমর্যাদা আছে। যদি সে টাকা দেয় সেটা হবে লজ্জার কারণ। নিরুপমা এটাও তার বাবাকে বলে যে সে কোনো টাকার থলে নয় যেটাকে সম্মানের নজরে দেখা হবে তখনই যখন তার ভেতর টাকা থাকে, আর টাকা না থাকলে সেই থলের কোনো দাম নেই। রবীন্দ্রনাথের সময় যৌতুক প্রথার কারণে অনেক কিশোরী এবং তরুণীরা আত্মহত্যা করেছে। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে সমাজের শিক্ষিত এবং সম্ভ্রান্ত পরিবারের ভেতর যৌতুক দাবি করার প্রবণতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
'মধ্যবর্তিনী' আরেকটি ছোট গল্প যেটা রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি করা জটিল নারীচরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। নিবারণ এবং তার দুই সহধর্মিণী হরিসুন্দরী এবং শৈববালা- এই তিনজনকে নিয়ে গল্প এগিয়েছে। নিবারণ ও তার প্রথম স্ত্রী হরিসুন্দরী সুখেই ছিল কিন্তু তাদের কোনো সন্তান ছিল না। হরিসুন্দরী অনেকদিন ধরে অসুস্থ ছিল। স্বামীর অক্লান্ত যত্নে সে আরোগ্য লাভ করে। স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সে সিদ্ধান্ত নেয় যে স্বামীকে যেভাবেই হোক আরেকটি বিয়ে দেবে। হরিসুন্দরীর আশা সেই বিবাহ থেকে তার স্বামী পিতৃত্বের সুখ পাবে যেটা তার কাছ থেকে পায়নি। দ্বিতীয় বিয়েতে বিমুখ থাকা সত্ত্বেও শৈববালার সাথে তার বিবাহ হয়। এরপর খুব দ্রুতই শৈববালার প্রতি ভালোবাসা জন্ম নেয় নিবারণের। এমনকি শৈববালার ইচ্ছা পূরণের জন্য নিজের কর্মস্থল থেকে টাকা চুরি করতেও দ্বিধাবোধ করে না। খুব দ্রুতই তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। শৈববালার প্রতি নিবারণের ভালোবাসা এবং স্নেহ দেখে হরিসুন্দরীর ভেতর ঈর্ষার জন্ম নেয়। এমন সময়ও আসে যে পরিবারের রানী হয়ে ওঠে শৈববালা এবং তার দাসীস্বরূপ হয়ে পড়ে হরিসুন্দরী। কিন্তু এজন্য কখনও হরিসুন্দরী মুখ ফুঁটে প্রতিবাদ করেনি। সে জানতো যে তার জন্যই এমন হয়েছে।
হিংসা বা ঈর্ষা থেকে যে ক্ষোভ জন্ম নেয় সেটা অনেক সময় আবেগের সাথে বাইরে বের হয়ে আসে। কিন্তু হরিসুন্দরীর ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। সে নিরবে সব সহ্য করে গেছে। এমনকি শৈববালার মৃত্যুর পরও নিবারণ ও হরিসুন্দরীর ভেতর আগের সেই ভালোবাসা ফিরে আসেনি। মৃত্যুর পরও তাদের সম্পর্কের মাঝে শৈববালার উপস্থিতি গল্পে টের পাওয়া যায়। 'স্ত্রীর পত্র' গল্পে বিন্দু আরেকটি চরিত্র যাকে পরিবার এবং সমাজের নিষ্ঠুরতা বাধ্য করেছিল আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে। 'পোস্টমাস্টারের' রতন চরিত্রটি এক অনবদ্য সৃষ্টি। স্নেহের টানে রতন নামের মেয়েটির হঠাৎ তরুণী থেকে নারী হয়ে ওঠার গল্প এটি। একজন এতিম এবং গরীব মেয়ের প্রতি স্নেহ ভরা হাত বাড়িয়েছিল পোস্টমাস্টার যেটা কিনা রতনের জীবনে আগে কখনো ঘটেনি। তার কাছে ছিল সেটা স্বপ্নের মতো। যখন পোস্টমাস্টার অসুস্থ হয়ে পড়লো তখন সেই তরুণী রতন যেন হয়ে উঠল এক পরিপূর্ণ নারী। মাতৃত্ববোধ তার ভেতরে জেগে উঠল। একজন পরিপূর্ণ নারীর মতো স্নেহ ভরা মনে পোস্টমাস্টারের সেবা করেছিল এই রতন।
'বিচারক'-এর ক্ষীরোদা রবীন্দ্রনাথের সৃষ্ট এক অন্যরকম গল্প। অন্যান্য গল্পে তিনি সমাজে নতুন বউ যৌতুকের কারণে, কিংবা সমাজের রীতিনীতির কারণে যেসব সমস্যার ভেতর দিয়ে যায় সেগুলো ফুটিয়ে তুলেছেন। 'বিচারক' গল্পে তিনি বিধবা বিবাহ নিয়ে কথা বলেছেন। তখনকার সমাজে বিধবা বিবাহকেও যে ভালো চোখে দেখা হতো না সেটা তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন ক্ষীরোদা চরিত্র দিয়ে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ নিয়ে সামাজিক যে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন সেই পরিবর্তন রবীন্দ্রনাথের সময়ও খুব বেশি প্রকাশ পায়নি। ১৯৫৫ সালের দিকে হিন্দু সমাজে বিধবা বিবাহ আইন করা হয় এবং সেসময় থেকেই মূলত হিন্দু সমাজে এই বিবাহ মেনে নেয়া শুরু হয়। সমাজে নারীদের অসহায় আত্মসমর্পণ নিয়ে গল্প রচনা করার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ 'মণিহারা' গল্পে মনি মালিকাকে সৃষ্টি করেন। এই মনি মালিকা ছিল নিজেই একজন আবেগহীন নারী। স্বামীকে যন্ত্রের ন্যায় মনে করতো সে। তার ভালবাসার পুরোটা জুড়েই ছিল শাড়ি আর গহনা। খালি সুগন্ধির বোতল এবং সাবানের বাক্স জোগাড় করতো সে। যখন তার স্বামী নিজের ব্যবসা বাঁচানোর জন্য কিনে দেয়া গহনাগুলো কিছুদিনের জন্য চেয়েছিল তখন মনি মালিকা তাকে সেগুলো দেয়নি বরং সে তার বাবার বাড়িতে ফিরে যেতে চায়। ফিরে যাবার সময় সে তার সকল গহনা পরে রওনা দেয়। কিন্তু পথ মধ্যে তার এক বিশ্বস্ত দাদার হাত থেকে গহনাগুলো বাঁচানোর জন্য সে জলে ঝাপ দেয়। মনি মালিকা তার জীবন দিয়ে দিয়েছিল কিন্তু শেষপর্যন্ত নিজের সর্বপ্রিয় গহনা নিজের হাতছাড়া করতে রাজি হয়নি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার নারীপ্রধান গল্পে সবসময় সমাজে নারীদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং সেগুলো কাল্পনিক চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। বলা যায় এই দিক থেকে তিনি সফল। কারণ আসলেই বিংশ শতাব্দীর শুরুতে সমাজে নারীদের অবস্থা শোচনীয় ছিল। এমনকি ইংরেজভূমেও নারীদেরকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হতো না। সেখানেও তাদেরকে অবহেলার চোখেই দেখা হতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে সেখানে নারীদের অবস্থা অল্প অল্প করে পরিবর্তিত হয়।
বাংলাতেও এক সময় নারীরা ছিল তুচ্ছ এক প্রাণী। সেসময় বেশিরভাগ নারীর যে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা ছিল না সেটাও রবীন্দ্র গল্পে ফুটে ওঠে। এছাড়া যে হবু স্বামীর প্রতি কাঙ্ক্ষিত ভালোবাসার মধ্য দিয়ে একটি মেয়ে সব কিছু ত্যাগ করে শ্বশুরবাড়িতে সংসার করতে যায়, সে স্বামীদেরও যে তাদের জন্য কিছুই করার থাকত না সেটাও রবীন্দ্রনাথ বারবার বুঝিয়েছেন। মেরুদণ্ডহীন পুরুষদের মতো আচরণ ছিল তাদের। এটাও নারীদের অবহেলার একটি দৃষ্টান্ত। রবীন্দ্র ছোট গল্পে নারীর স্বরূপ যেন বাস্তবেরই দর্পন। তবে এখনকার সমাজে কিছু নারী রাক্ষসী তাদের চরিত্র ভয়ঙ্কর। এসব নারী নিজের সাথে সাথে সর্বনাস করে একটি সমাজকে।
নারী নিয়ে গবেষনা করে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলতে চাইছেন পুরুষেরাই নারীর সত্যিকারের আশ্রয়। পুরুষেে নিষ্ঠার ওপর তারা নির্ভর করে কিন্তু ভালোবাসে না। তিনি বলছেন- "নারীর হৃদয়ের রহস্য জানিবার মতো অভিজ্ঞতা আমার হইল না। নিতান্তই উপর হইতে, বাহির হইতে, যেটুকু দেখিলাম তাহাতে আমার এই বিশ্বাস জন্মিয়াছে যে, যেখানে মেয়েরা দুঃখ পাইবে সেইখানেই তারা হৃদয় দিতে প্রস্তুত। এমন পশুর জন্য তারা আপনার বরণমালা গাঁথে যে লোক সেই মালা কামনার পাঁকে দলিয়া বীভৎস করিতে পারে; আর তা যদি না হইল তবে এমন কারো দিকে তারা লক্ষ্য করে যার কণ্ঠে তাদের মালা পৌঁছায় না, যে মানুষ ভাবের সূক্ষ্মতায় এমনি মিলাইয়াছে যেন নাই বলিলেই হয়। মেয়েরা স্বয়ম্বরা হইবার বেলায় তাদেরই বর্জন করে যারা আমাদের মতো মাঝারি মানুষ, যারা স্থূলে সূক্ষ্মে মিশাইয়া তৈরি—নারীকে যারা নারী বলিয়াই জানে, অর্থাৎ, এটুকু জানে যে, তারা কাদায় তৈরী খেলার পুতুল নয়, আবার সুরে তৈরি বীণার ঝংকারমাত্রও নহে। মেয়েরা আমাদের ত্যাগ করে, কেননা আমাদের মধ্যে না আছে লুব্ধ লালসার দুর্দান্ত মোহ, না আছে বিভোর ভাবুকতার রঙিন মায়া। আমরা প্রবৃত্তির কঠিন পীড়নে তাদের ভাঙিয়া ফেলিতেও পারি না, আবার ভাবের তাপে গলাইয়া আপন কল্পনার ছাঁচে গড়িয়া তুলিতেও জানি না। তারা যা, আমরা তাদের ঠিক তাই বলিয়াই জানি, এইজন্য তারা যদি-বা আমাদের পছন্দ করে, ভালোবাসিতে পারে না। আমরাই তাদের সত্যকার আশ্রয়, আমাদেরই নিষ্ঠার উপর তারা নির্ভর করিতে পারে, আমাদের আত্মোৎসর্গ এতই সহজ যে তার কোনো দাম আছে সে কথা তারা ভুলিয়াই যায়। আমরা তাদের কাছে এইটুকুমাত্র বকশিশ পাই যে, তারা দরকার পড়িলেই নিজের ব্যবহারে আমাদের লাগায়"।
একই সময়ে বহুপুরুষের সঙ্গে সদ্ভাব রাখতে পছন্দ করে এমন নারীর সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। নারীদের লোভ সম্পর্কে আমার সমুহ ধারনা আছে। মনে রাখবেন বিশ্বস্ত একজন নারী, যার সাথে ঘর বেঁধে সুখে জীবন কাটানো যায় এমন নারী খুঁজতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগে যাওয়ার দরকার নাই। শিক্ষিত নারী নয় দরকার চরিত্রবান নারী। জীবনকে সুন্দর করতে একজন চরিত্রবান সঙ্গীর বিকল্প নেই। যারা জীবনসঙ্গী খুঁজছেন, তাদেরকে তাই অবশ্যই জানতে হবে অসৎ নারীদের চেনার উপায়। তাহলে চরিত্রবান নারীসঙ্গী নির্বাচনে আপনি অনেকটাই নিরাপদ থাকবেন। অসৎ নারীদের নিয়ে কয়েকটি ধারনা আমি এখানে উল্লেখ করছি-
১. লজ্জাই নারীর ভূষণ। কিন্তু অসৎ নারী আপাত ভদ্র হলেও তাদের মধ্যে নির্লজ্জ হাবভাব প্রকাশ পায়। পুরুষের চোখের দিকে চেয়ে থেকে এমনভাবে, যেন তার ভিতরটা পড়ে ফেলছে। নারীর ওই দৃষ্টি পুরুষের সর্বনাশের কারণ। এমন মেয়ে থেকে সাবধান। এরা কখনোই পুরোপুরি বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে না।
২. মাথার চুল নিয়ে নাড়াচাড়া করতে শুরু করে কথা বলার সময়। পুরুষকে বাধ্য করে তার রূপের দিকে নজর দিতে। ইচ্ছে করে ইঙ্গিতবাহী পোশাক পরে আসে তার সামনে। যাতে সহজেই আকৃষ্ট করতে পারে। এমন ভাবে পোষাক পড়বে যেন তার শরির বাহিরে ফুটে ওঠে।
৩. কিছু নারী পুরুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে প্রথমে। তারপর তার অর্থ সম্পদের ব্যাপারে খোঁজ নিতে থাকে। যেহেতু এই নারীকে পুরুষ সহজেই বিশ্বাস করে নেয়, নিজের সম্পর্কে সবই তাকে বলে ফেলে। এমন নারী কিন্তু পুরুষকে ফাঁদে ফেলতে ওস্তাদ। নানাভাবে বিশ্বাস অর্জন করে, ব্ল্যাকমেইল করতেও পিছপা হয় না। এসব অসৎ নারী থেকে দূরে থাকতে হবে।
৪. নানা ছুতোয় কথা বলার সুযোগ খোঁজে এই নারী। এড়িয়ে গেলে বাড়ি চলে আসে। যেহেতু ততদিনে বাড়ির লোকের সঙ্গেও সদ্ভাব করে নেয়, তাই বাড়ির লোকের নজরেও সে বিশ্বাসযোগ্য ওয়ে উঠতে চায়।
৫. বারংবার দেখা করার ফাঁক খোঁজে। সেই দেখা হওয়া কিন্তু একান্তে। অন্য কাউকে ডাকে না তখন। সাক্ষাতের স্থান নির্বাচন করে চাইনিজ ও শপিংমল কেন্দ্রিক। যেন ভয় ফ্রেন্ডের অর্থ সম্পদ লুটে নেয়া যায়।
৬. মাঝরাতে মেসেজ করে। কথাবার্তায় যৌনতার ইঙ্গিত দেয়। অবশেষে সেই যৌনালাপ স্ক্রীন শর্ট দিয়ে ব্লাকমেল করে।
৭. যেসব নারী মদ্যপানে আসক্ত তাদের থেকে দূরে থাকুন। কারণ, নেশা এদেরকে সততাকে বিনষ্ট করে। সাথে চরিত্র ও কুমারিত্বও হারায়।
৮. অসৎ নারী নানা অছিলায় যৌনতাকে নিয়ে আসে আলোচনার মধ্যে। পুরুষকে যৌনভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা করে। সেই উত্তেজনার বশে পুরুষ যদি মাত্রাতিরিক্ত কিছু করেও ফেলে, বিপদ কিন্তু পুরুষেরই। এই নারী কিন্তু অবলীলায় দোষ চাপিয়ে দিতে পারে পুরুষের ঘাড়ে।
কয়েক দিন আগে খবরের কাগজে দেখলাম ঢাকায় লালবাগের একটি বাসায় নিজের বন্ধু কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে এক মেয়ে। মেয়েটি তার নিজের ধর্ষকে চাঁদপুরে খুজতে গিয়ে নতুন করে অন্য এক পুরুষ কর্তৃক আবার ধর্ষিত হয়েছে। মেয়েটিকে ভবিষ্যাতে কতো জনে ধর্ষণ করবে জানি না। লালবাগের বাসায় ধর্ষিত হওয়ার পরে মেয়েটি আইনের সহায়তা না চেয়ে কিংবা কাউকে না জানিয়ে তার নিজের ফাঁদে ফেলে মেয়েটি কৌশলে বিয়ে করতে চেয়েছিলো এই ধর্ষককে। এখন এই মেয়েটির চরিত্র সম্পর্কে কি ধারনা পাওয়া যায়! অর্থাৎ মেয়েটি চেয়েছিলো প্রেম করে বিয়ে করবে। মনে রাখতে হবে লালবাগে বাসায় সে যখন প্রেমিক কর্তৃক ধর্ষিত হয় তখনই মেয়েটির এই পবিত্র সম্পর্কে কালিমা লেপন হয়ে গেলো। ঠিক এখনই এই মেয়েটিকে ব্যাভিচারিণী দুশ্চরিত্রা এক নষ্ট মেয়ে হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এখন এই মেয়েটিকে দরকার ১০০ বেত্রাঘাত। এমন চরিত্রের মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়লে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মানুষের অন্তরে ভুল ধারনা তৈরি হবে। তবে, ডাকসুর সাবেক ভিপি হয়ে সেখানের একজন শিক্ষার্থীর চরিত্রের সঠিক মুল্যায়ন করেছেন, দুশ্চরিত্রাকে "দুশ্চরিত্রা" বলার জন্য আমি নুরকে ধন্যবাদ দেই। ডাকসুর ইতিহাসে এমন সঠিক মুল্যায়ন ভবিষ্যাতের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। অতিতে এমন একটি যথার্থ মুল্যায়ন করার জন্য আমি ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনকেও ধন্যবাদ দেই। দুশ্চরিত্রা এবং পতিতা কিংবা ব্যভিচারিণী নারীদের প্রত্যেককে একশ করে বেত্রাঘাত করতে ইচ্ছে হয়। সম্প্রতিসময়ে দেখা যাচ্ছে কোন এক দুশ্চরিত্রা নারীকে ব্যবহার করে কেউ কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থান নিয়েছে। আমি বলতে চাই দুশ্চরিত্রাদের বৈশিষ্ট একটা ভয়ংকর পশুর মতোই। হোক নারী কিংবা পুরুষ, এদের বিশ্বাস করা যায় না। সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানাজাচ্ছে প্রেমের সম্পর্ক করে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী একজন সহপাঠী পরপুরুষের সাথে লালবাগের বাসায় গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কি প্লান নিয়ে লালবাগ আবাসিক বাসায় গিয়েছিলো মেয়েটি? তাকে জোর করে তুলে নেয়া হয়েছিলো? নাকি মেয়েটি স্বেচ্ছায় গিয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের মেয়েটি নিশ্চই নাবালিকা নয়। একটি আবাসিক বাসায় পুরুষ বন্ধুর সাথে যাওয়ার অর্থই হচ্ছে যৌনতায় কিছুটা সমর্থন ছিলো মেয়েটির। মেয়েটি এই কথা স্বীকার করতে চাইবে না। নিজের চরিত্র যদি সে পবিত্র হিসেবে বর্ননা করতে চায়, তাহলে একটি আবাসিক বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্য কি ছিলো? ছেলে বন্ধুটির সাথে আলাপ, গল্প, আড্ডা, এর জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। হোক সে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিংবা বন্ধু। আমি ধরেনিলাম ভুলবাল বুঝিয়ে মেয়েটিকে আবাসিক বাসার একটি রুমে নিয়েছে। সেই বাসায় গিয়ে যদি মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়, তাহলে অন্য একজন পুরুষের সাথে কোন বিশ্বাসে চাঁদপুর গেলো? লঞ্চের কেবিনে তাকে আবার নতুন করে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে। নিশ্চই এগুলো মেয়েটির কর্ম ফল। এবং আজ সে নিজের কর্মেই নিজের চরিত্র ফুটিয়ে তুলছে! ছি ছি! এমন একজন দুশ্চরিত্রার ব্যাপারে আর মন্তব্য করবো না। এই দুশ্চরিত্রা যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের পড়ে, তাহলে আজ এই বিভাগটি কলঙ্কিত। আন্দোলনের বহু এজেন্ডা থাকতেও মানুষ কেন একজন দুশ্চরিত্রাকে নিয়ে অহেতুক টানাটানি করছে তা আমার বুঝে আসছেনা। সমাজের বিবেকবান মানুষের উচিত একজন দুশ্চরিত্রার থেকে দুরে থাকা এবং তাকে ঘৃনা করা। কুরানের সূরা আন-নূর এর ৩১ নাম্বার আয়াতে স্পষ্ট বলা আছে
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
And say to the believing women that they should lower their gaze and guard their modesty; that they should not display their beauty and ornaments except what (must ordinarily) appear thereof; that they should draw their veils over their bosoms and not display their beauty except to their husbands, their fathers, their husband's fathers, their sons, their husbands' sons, their brothers or their brothers' sons, or their sisters' sons, or their women, or the slaves whom their right hands possess, or male servants free of physical needs, or small children who have no sense of the shame of sex; and that they should not strike their feet in order to draw attention to their hidden ornaments. And O ye Believers! turn ye all together towards Allah, that ye may attain Bliss. এই আয়াতটি কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিস বিভাগে পড়ানো হয়নি?
যদি পড়ে থাকে তাহলে তার একাডেমিক শিক্ষার সাথে কর্মের কোন মিল নেই। এই মুহুর্তে মেয়েটির যে ভুমিকা অর্থাৎ মেয়েটি টিএসসিতে অনশন করে চাইছে সেই ধর্ষকের বিচার। বিচার চাওয়ার বিষয়টি তার আসল চরিত্র নয়, আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে সেই ধর্ষক ভয় ফ্রেন্ডকে বিয়ে করা। আমার মনে হয় এমন এক দুশ্চরিত্রার জন্য একজন দুশ্চরিত্র পুরুষ যথোপযুক্ত। মেয়েটি তো একজন সৎ বা চরিত্রবান পাত্র পাওয়ার যোগ্য নয়। এই দুশ্চরিত্রার জন্য কোরানে সূরা আন-নূরে একটি আয়াত আছে-
الزَّانِي لَا يَنكِحُ إلَّا زَانِيَةً أَوْ مُشْرِكَةً وَالزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَا إِلَّا زَانٍ أَوْ مُشْرِكٌ وَحُرِّمَ ذَلِكَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ
ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা নারীকেই বিয়ে করে এবং ব্যভিচারিণীকে কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষই বিয়ে করে এবং এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে। Let no man guilty of adultery or fornication marry and but a woman similarly guilty, or an Unbeliever: nor let any but such a man or an Unbeliever marry such a woman: to the Believers such a thing is forbidden.
শামীম আহমেদ
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ,