আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

৮ম পর্ব:

মিজান ভাই একজন অসাধারণ বাস্তববাদী লেখক

মো: কয়েছ আলী

মিজানুর রহমান মিজান ভাইকে নিয়ে লেখার যোগ্যতা এখন ও হয়নি। তারপরও সুমন বিপ্লবের অনুরোধে লিখতে হচেছ। মিজান ভাই’র তুলনায় আমি এখনও নবীন লেখক। যাই হোক মাত্র কয়েক বছরের পরিচয়ে মিজান ভাইয়ের যে কয়টি লেখা পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে, তাতে একথা নি:সন্দেহে বলা যায় তিনি একজন অসাধারণ বাস্তববাদী লেখক। তার লেখায় কোন রকম বাঁধা বিচার না করেই তিনি ভালকে ভাল, মন্দকে মন্দ বলতে দ্বিধা করেন না।ব্যক্তি জীবনেও তিনি একজন সৎ, আদর্শবান শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে ও সাহসিকতার মধ্যে দিয়ে নিজের লেখা চালিয়ে যাচেছন। তিনি নিজ এলাকার পাশাপাশি বিশ্বনাথের অনেক হারানো দিনের ঐতিহ্যমুলক ঘটনার ও ঐতিহাসিক লেখাও বেশ কয়েকটি সাময়িকীতে সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন যা আমাকেসহপাঠকগণকে মুগ্ধ করেছে। তিনি বিশ্বনাথ তথা সিলেটের মধ্যে এক শক্তিমান লেখক এ কথা দ্বার্থহীন ভাবে বলা যায়।

   আমি ত্রৈমাসিক সৃজনের সম্পাদক হওয়ার সুবাদে তাঁর বেশ কয়েকটি লেখা সৃজনের সব কয়টি সংখ্যায় ছাপিয়ে যেটুকু মনে হয়েছে তিনি এক অসাধারণ প্রতিভার অধিকারি। যে কোন বিষয়ে তিনি লেখার ক্ষমতা রাখেন। বিশেষ করে ইতিহাস ঐতিহ্যধর্মী লেখায় তাঁর অগাধ দখল রয়েছে। বর্তমান সমাজে অবক্ষয় নিয়েও তিনি একাধিক লেখা লিখেছেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়। তাঁর লেখা বই পড়লে আমাদের ঘুণে ধরা সমাজ অনেক উপকৃত হবে বলে মনে করি।

    মিজান ভাইয়ের তথ্যের মাধ্যমে আমরা মাসিক বিশ্বনাথ ডাইজেষ্টের প্রায় প্রতিটি সংখ্যায় একাধিক ইতিহাস , ঐতিহ্যধর্মী লেখা ছাপিয়েছি। যার মধ্য দিয়ে নিজ এলাকার প্রতি যে কতটুকু দায়িত্বশীল তা বুঝা যায়। আমাদের সাথে তাঁর যতটুকু সম্পর্ক তাতে এতটুকু বলতে দ্বিধা নেই তিনি একজন সহজ, সরল এবং প্রচার বিমুখ মানুষ। অনেক প্রতিভা থাকা সত্তেও তিনি নিজেকে সেভাবে প্রকাশ করেননি। তাঁর সঠিক মুল্যায়ন হওয়া উচিত বলে মনে করি। সর্বশেষ তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করি এবং আল্লাহ যেন তাঁর লেখার মাধ্যমে সমাজের কিছু উপকার করাতে পারেন এতটুকু আশা করি।

সভাপতি, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, সম্পাদক ত্রৈমাসিক সৃজন।   

 

প্রিয় শিক্ষক

মিনতি আচার্য্য্

হেমন্তের নবান্নের গন্ধে ভরপুর মিষ্টি বিকেল বেলা দ্বীপবন্ধ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সাব-ক্লাষ্টার প্রশিক্ষণ শেষে রাজাগঞ্জ বাজারের সামনে এসে হঠাৎ দেখি আমাদের কর্মস্থল হাজারী গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি সাধাসিধে পোষাক পরিহিত একজন লোকের সাথে কুশল বিনিময় করছেন। ঐ ব্যক্তি আমাদের প্রধান শিক্ষকের হাতে ধরে হোটেলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। আমি ও আরো ক’জন সহকর্মী দেখে অবাক। আমরা পরিচয় জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, আমার নাম মো: মিজানুর রহমান, বাড়ি জয়নগর (নোয়াপাড়া)। আপনি কি উত্তর বিশ্বনাথ হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন? হ্যাঁ।

স্যার, আদাব। আপনার এ কি অবস্তা? চোখে জল ঠিক রাখতে পারলাম না। আপনি এত দিন কোথায় ছিলেন? আপনাকে দেখে একটু চিনতে পারছি না।এমন কেন হল?

তিনি হোটেলে কয়েকজন সহকর্মীকে নাস্তা করলেন।মনে মনে ভাবতে থাকলাম স্যারের অতীতের শিক্ষক জীবনের কথা।সে ১৯৮১ সালের কথা। তিনি বিদ্যালয়ে একাধারে ক্রীড়া শিক্ষক, লাইব্রেরীর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। সুশ্রী, সুস্বাস্থ্যের অধিকারি মানুষের আজ এ করুন অবস্তা দেখে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল। মানুষের জীবনটা নদীর স্রোতের মত। আমাদের বিশ্ব প্রতিভা একাডেমীর সুমন বিপ্লব ভাইয়ের সাথে আলাপ করে আরো স্যারের বিস্তারিত অবগত হলাম। বিপ্লব ভাই স্যার এখন কি করেন?

   বর্তমানে নিজেকে বাঁচার তাগিদে গল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেকার কাজে জড়িয়ে আছেন। মনকে শান্তনা দেয়ার জন্য কয়েকটি বইয়ের সম্পাদনা করেছেন।স্যারের কয়েকটা বই ও প্রকাশ পেয়েছে। স্যার তাঁর পিতার নামে “চাঁন মিয়া স্মৃতি পাঠাগার” স্থাপন করেছেন রাজাগঞ্জ বাজারে।তাছাড়া এখানে বসে পূর্বের মতো অনেক ছাত্রছাত্রীকে পাঠদান করেন। বিভিন্ন বৃত্তি পরিক্ষায় অংশ গ্রহণ করে সফলতা আনছে অনেকে। প্রগাঢ় বন্ধুত্ব এবং দীর্ঘ বিরতির পর সাক্ষাতে কত অতীত স্মৃতি রোমন্তন করছেন আমাদের প্রধান শিক্ষকের সহিত। শুনে হচিছলাম তম্ময়। তবে স্যারের একটা দীর্ঘ:শ্বাস ছিল শিক্ষকতা জীবনকে ত্যাগ করে প্রবাসী হওয়াতে।আমার বিশ্বাস তিনি একদিন বড় সাহিত্যিক হবেন এবং একটি সুন্দর দেশের স্বপ্ন দেখেন। স্যারের পাঠাগার থেকে বই পড়ে মানুষ জ্ঞান অর্জন করবে।

    আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্যারের ক্লাসমেইট ছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে ছিল হার্দিক বন্ধন।স্যার একদিন আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন বেড়াতে ও একাডেমী দেখতে। ঐদিন কথা প্রসঙ্গে তাঁর শারিরিক অসুস্ততার কথা বলছিলেন। স্যারের আপনজনেরা দুরে ঠেলে দিলে ও শত শত ছাত্রছাত্রী, ভক্ত অনুরাগীর ভালবাসা সিক্ততা প্রাণ উদ্দীপক গণ্য হচেছ, হবে।আমি স্যারের সুস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করি।

সহ:শিক্ষক,হাজারী গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

আরও পড়ুন

×