“পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

প্রকাশিত: 02/03/2020

নিজস্ব প্রতিবেদন :

“পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

আখলাক হোসেন ও সুমন বিপ্লবের সম্পাদিত “পল্লী আঁধারে একটি রবি” গ্রন্থের অংশ বিশেষ

পর্ব-১৫

নবীজির দেশে ষোল বসন্ত বইটি তথ্যপূর্ণ

সুশিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল জ্ঞানার্জন ও চরিত্র গঠন। শুধু বই পড়ে জ্ঞানার্জন সম্ভব নয়। ভ্রমণ ও শিক্ষার একটি অংশ যা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

আমাদের প্রিয় নবী (স:) বলেছেন, “জ্ঞানার্জনের জন্য চীনে যাও”। চীনকে দুরত্বের প্রতীক অর্থে বোঝানো হয়েছে। শিক্ষার জন্য দুর দুরান্তে যাবার পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।

“নবীজির দেশে ষোল বসন্ত” গ্রন্থের লেখক মিজানুর রহমান মিজান পারিবারিক উৎকর্ষ ও ভাগ্য সুপ্রসন্নের নিমিত্তে আশির দশকের প্রথম ভাগে অভিযাত্রার অভিযাত্রিক রুপে সৌদি আরবের জেদ্দা নগরীতে প্রবাস জীবন শুরু করেন।

সেখানে জীবনের ষোল বছর ভাগ্যান্বেষণে ব্যস্ত জীবন কাটান।এ ষোল বছরে তাঁর দেখা বিভিন্ন কর্মকান্ড, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বিভিন্ন ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেছেন চমৎকার সহজ, সরল ভাষায়।

খ্রাতিমান ছড়াকার মোহাম্মদ নওয়াব আলী’র বাসিয়া প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত বইটির প্রচছদ এঁকেছেন মতিউল ইসলাম মতিন। সাদা নিউজ প্রিন্টে চার ফর্মার বইটির মুল্য রাখা হয়েছে মা্র ত্রিশ টাকা যা সঙ্গতিপূর্ণ।

অত্যন্ত চমৎকার সাবলীল ভাষায় লেখক তাঁর ষোল বছরের বর্ণনা সুন্দর করে নিপুন ভাবে তুলে ধরেছেন। স্বদেশের প্রতি প্রবাসীদের প্রেম, আত্মীয়-স্বজনের সান্নিধ্য প্রাপ্তির উদগ্রীবতা, প্রত্যাশা প্রতিনিয়ত তাঁদের মানসমানস পটে কিভাবে দোলা দেয় তা স্বচছ আয়নায় প্রতিবিম্ভ রুপে এঁকেছেন।

দেশে থাকতে এ দৃশ্য সহজে অনুমান, অনুমিত হয় না। কিন্তু প্রবাসী হবার পর তা স্বদেশ, স্বজাতির প্রতি মমত্ববোধ, ভ্রাতৃত্ববোধেরই পরিচায়ক।

প্রবাস জীবন নূতন অথচ ভিন্ন আঙ্গিকের অভিজ্ঞতার চেতনা সমৃদ্ধ অনুভুতি। লেখক প্রবাসীদের সুখ-দু:খ, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার চিত্র অংকন করেছেন অত্যন্ত দরদিয়া, মর্মস্পর্শী ও হৃদয়গ্রাহী বাস্তবতায়।

তিনি প্রবাস ও প্রবাসীদের জীবনের অনেক বাস্তব শিক্ষণীয় ঘটনার আলোকপাত করেছেন, যা পাঠক পড়ে উপকৃত হবেন নি:সন্দেহে। পবিত্র ও শ্রেষ্ট ধর্ম ইসলাম।

ইসলাম পাঁচটি স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তার একটি হচেছ হজ্জ্।হজ্জে যাবার লালিত আকাংখা, বাসনা প্রতিটি মুসলমান হৃদয় মন্দিরে দীর্ঘদিন পুষে রাখেন।

জিয়ারতে যাবার আকুলতা প্রত্যেক মুসলমানের অন্তরে দোলা জাগায় প্রতিনিয়ত।লেখক অত্যন্ত সুন্দর ও চমৎকার ভাষায় তাঁর প্রতিটি অনুসঙ্গের বর্ণনা দিয়েছেন। লেখক তাঁর লেখায় শুধু ধর্মীয় স্থানের কথাই বলেননি।

তিনি সৌদি আরবের ভৌগলিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক রীতি-নীতি ও আইন-শৃংখলাসহ সব দিকেরই বিবরণ তুলে ধরেছেন।

প্রবাসীরা সংসার, সন্তান থেকে দুরে থাকায় সান্নিধ্য প্রাপ্তির ব্যাকুল আর্তি এবং হৃদয়ে পিতৃত্বের আহাজারীর আর্তি, স্ত্রী-সন্তান প্রবাসীকে প্রতারিত করেন বিভিন্ন (সব নয়) কুঠ কৌশলে এ বাস্তবতাও তুলে ধরেছেন। যৌতুকের ওপরও মতামত ব্যক্ত করেছেন।                                            

 লেখক সাবলীল ভাষায় তাঁর ভ্রমণ কাহিনীর বর্ণনা দিয়েছেন। সমাপ্তি গল্পে অনুমিত হয় “ শেষ হইয়াও হইল না শেষ”। প্রবাস জীবনের শত ব্যস্ততা, সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার উর্ধ্বে সৃজনশীল কর্মকান্ডে কঠোর পরিশ্রমী, উদ্যমী ও সাধনায় ব্রতীর পরিচয় পাওয়া যায়।

একটি সুখ পাঠ্য বই উপহার দেওয়ায় তিনি অভিনন্দন যোগ্য।আমি আশাবাদী বইটি পড়ে পাঠক আনন্দিত হবে। বইটির বহুল প্রচার ও প্রসার কামনা করি।

এইচ এম হেলাল,সিলেট। প্রকাশিত বর্ষ ২, সংখ্যা ৪৫, ২৫জুন-১জুলাই ০৫খ্রি:, সাপ্তাহিক এখন, ঢাকা।  

বাংলাদেশের কবি মিজানুর রহমান মিজানের “নবীজির দেশে ষোল বসন্ত” গ্রন্থটি একটি অনবদ্য উপহার হিসাবে আদরনীয় হবে সাহিত্য জগতে এই শুভ কামনা রইল। রঙিন প্রচছদেই ধরা পড়েছে নবীজির দেশের কথা। লেখার মান বেশ ভাল।

লেখকের দ্বিতীয় গ্রন্থটির নাম “ সভ্যতার কান্না”। কবি এখানে সভ্যতার নামে যে ব্যভিচার চলছে, দৃঢ় হাতে তার লেখনিকে কুঠার করে রুখে দাড়িয়েছেন তার বিরুদ্ধে।

কবির কলমে তাই উচ্চারিত হয়েছে, “বর্তমানে এটাই বড় যন্ত্রনা, মেয়ে বিয়ে নয় জামাই কিনা”। আবার “কোথায় চলেছি শান্তির নামে অবলুপ্তির সন্ধানে”। অথবা “হল প্রেমের অপমান, দিয়ে তোমায় মন প্রাণ, কেমনে বাঁচি সঙ্গি ছাড়া।”

আরও পড়ুন

×